Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Kali Puja 2023: ‘কালী আরাধনা’র পরেই ডাকাতি! জানুন রঘু ডাকাতের হাড় হিম করা গল্প

    Kali Puja 2023: ‘কালী আরাধনা’র পরেই ডাকাতি! জানুন রঘু ডাকাতের হাড় হিম করা গল্প

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলার কোনও ডাকাত দলের সর্দারের নাম বলুন তো? যে কাউকে এই প্রশ্ন করলে মনের মধ্যে ভেসে ওঠে ‘রঘু ডাকাত’ নাম। ‘রঘু ডাকাত’ নামে কত উপন্যাস, কত গল্প ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এক কথায় বোঝাতে গেলে বলতে হয়, এই নামটি একটি ‘মিথ’ হয়ে রয়েছে। তবে জানেন কি রঘু ডাকাত মাত্র একজন ছিল না। বর্ধমান থেকে হুগলি, কলকাতা থেকে উত্তর চব্বিশ পরগনার জঙ্গলগুলিতে একাধিক রঘু ডাকাতের পরিচয় পাওয়া যায়। প্রত্যেক রঘু ডাকাত-ই মা কালীর (Goddess Kali) ভক্ত। কালী আরাধনার (Kali Puja) পরেই তারা ডাকাতি করতে যেত।

    ‘রঘু ডাকাত’ সম্পর্কে নানা রোমাঞ্চকর গল্প 

    খগেন্দ্রনাথ মিত্র এবং যোগেন্দ্রনাথ গুপ্তর লেখা থেকেই ‘রঘু ডাকাত’ সম্পর্কে নানা রোমাঞ্চকর তথ্য পাওয়া যায়। যেমন, নৈহাটির রঘু ডাকাতের কথা। সে সময় নৈহাটি থানার দারোগা ছিলেন দুর্গাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। দারোগাবাবু অনেক চেষ্টা করেও বাগে আনতে পারছিলেন না রঘু ডাকাতকে। তিনি প্রতিজ্ঞা করলেন, যেভাবেই হোক রঘু ডাকাতকে তিনি ধরবেন। হঠাৎ করেই কিছুদিন পর দারোগাবাবুর কাছে একটি চিরকূট এল। তাতে লেখা রয়েছে, ‘খুব শীঘ্রই আপনার সঙ্গে আমার দেখা হবে দারোগাবাবু’। তলায় লেখা, ইতি আপনার সেবক রঘু‌। এর বেশ কিছুদিন পর এলাকার জমিদারবাবুর নাতির অন্নপ্রাশন। আমন্ত্রিত হয়েও উপস্থিত থাকতে পারেননি দারোগাবাবু। একদিন দুপুরে আহারের পর নিজের চেয়ারে বসে ভাত ঘুম দিচ্ছিলেন তিনি। সে সময় হঠাৎ এক জেলে উপস্থিত হল দুই হাতে দুটো মাছ নিয়ে এবং নিজের ধুতিতে বেঁধে রাখা এক টুকরো কাগজ বের করে দারোগাবাবুকে দিল। যেখানে লেখা ছিল, ‘‘আমার নাতির অন্নপ্রাশনে আপনি আসতে পারেননি, তাই আপনাকে দুটো বড় মাছ পাঠালাম।’’ তলায় ছিল জমিদারবাবুর স্বাক্ষর। বেশ কিছু দিন পর আবার একটি চিরকূট পেলেন দারোগাবাবু‌। তাতে লেখা রয়েছে, ‘‘আপনার সঙ্গে দেখা করে ভালো লাগল, মাছ দুটো কেমন খেলেন?’’

    মা সারদার পথ আটকেছিলেন রঘু ডাকাত? 

    রঘু ডাকাতের প্রচলিত কাহিনি থেকে জানা যায়, তাঁর বাবাকে নীলকর সাহেবরা হত্যা করেছিল। এর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য নাকি সে ডাকাত হয় এবং নীলকর সাহেবদের লুট করে তা গরীব মানুষের মধ্যে বিতরণ করত। অর্থাৎ বাঙালির রবিনহুড বলতে গেলে সেটা রঘু ডাকাত-ই। জনশ্রুতি রয়েছে, হুগলির রঘু ডাকাত নাকি একবার সারদা মায়ের পথ আটকেছিল সিঙ্গুরের কাছে। এরপর ভীষণ দর্শনা মা কালী প্রকট হলে, রঘু ডাকাত সারদা মায়ের কাছে ক্ষমা চায়। মাকে রাতে চালকড়াই ভাজা খেতে দেয়।

    রঘু ডাকাতের কালীপুজোয় নরবলি!

    অপর এক রঘু ডাকাত বারাসতের জঙ্গলে থাকত বলে জানা যায়। তার কালীপুজো (Kali Puja) আজও ধুমধাম করে হয়। বারাসত শহর থেকে দু’কিলোমিটার দূরে কাজিপাড়া অঞ্চলে এই পুজো হয়, বটগাছের ঝুরি দ্বারা ঘেরা ভগ্ন এক মন্দিরে। স্থানীয়রা এই কালীকে জাগ্রত বলে মনে করেন। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার কেতুগ্রামের অট্টহাস সতীপীঠেও নাকি রঘু ডাকাত কালীপুজো করত। তারপর ডাকাতির উদ্দেশ্যে সংলগ্ন এলাকাগুলিতে অভিযান চালাত। জনশ্রুতি অনুযায়ী, রঘু ডাকাত বৈষ্ণব ছিল। তবুও সে শক্তির উপাসনা করত। সাধক রামপ্রসাদের সঙ্গেও রঘু ডাকাতের সাক্ষাতের কথা প্রচলিত রয়েছে। প্রচলিত বিশ্বাস রয়েছে, রঘু ডাকাতের কালীপুজোতে নরবলি হত। তারপরে রঘু ডাকাত ল্যাটা মাছের ঝোল দিয়ে ভাত খেয়ে ডাকাতি করতে যেত।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ। 

  • Kojagari Laxmi Puja: আজ লক্ষ্মীপুজো, জেনে নিন কেন এই পুজোকে ‘কোজাগরী’ বলা হয়

    Kojagari Laxmi Puja: আজ লক্ষ্মীপুজো, জেনে নিন কেন এই পুজোকে ‘কোজাগরী’ বলা হয়

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ‘‘এসো মা লক্ষ্মী বসো ঘরে, আমার এ ঘরে থাকো আলো করে’’-এই ছন্দেই বাঙালি ধনদেবীর আরাধনা করে থাকে। দেবীকে এই রীতিতে আবাহন করার মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে কোজাগরী লক্ষ্মী (Kojagari Laxmi Puja) পুজোর মাহাত্ম্য। শারদীয়া দুর্গাপুজোর অন্তে পূর্ণিমা তিথিতে পুজো হয় দেবী লক্ষ্মীর। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে তিনি ধন, ঐশ্বর্য, সমৃদ্ধি, সুখ, শান্তি প্রদানকারী দেবী। বাংলার গৃহস্থ থেকে সমাজের বণিক বা ব্যবসায়ী, প্রত্যেকের কাছেই সাদরে পূজিতা হন দেবী। প্রতিমা ছাড়া শুধুমাত্র ঘট এবং অন্যান্য প্রতীকের মাধ্যমেও অনেক গৃহে দেবীর উপাসনা হয়। দুর্গাপুজোর মণ্ডপগুলিতেও কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো নিশ্চয়ই আমাদের দৃষ্টি এড়ায় না। গ্রাম বাংলায় ধানের গোলা সমেত মাটির দেওয়ালের বাড়ি এখন আর সেভাবে দেখা যায় না। লক্ষ্মীপুজো (Kojagari Laxmi Puja) উপলক্ষে গোবরের গোলা এবং আলপনায় এই মাটির বাড়িগুলোই যেন সবথেকে বেশি প্রাণবন্ত হয়ে উঠত।

    ‘কোজাগরী’ কেন বলা হয়?

    এবার আসা যাক, ‘কোজাগরী’ শব্দের আক্ষরিক বিশ্লেষণে। কোজাগরী শব্দটির উৎপত্তি সংস্কৃত শব্দ ‘কো জাগতী’ থেকে। এর অর্থ ‘কে জেগে আছো?’ বিশ্বাস মতে, কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর (Kojagari Laxmi Puja) দিনে ধন-সম্পদ-ঐশ্বর্য এর দেবী লক্ষ্মী স্বর্গ থেকে মর্ত্যে অবতীর্ণ হন এবং প্রতিটি ভক্তের বাড়ি গিয়ে সুখ, সমৃদ্ধি  প্রদান করেন। কথিত আছে, এ ক্ষেত্রে যে বাড়ির দরজা খোলা থাকে, একমাত্র সেই বাড়িতেই প্রবেশ করেন দেবী। কারও বাড়ির দরজা বন্ধ থাকলে, তাঁর বাড়িতে লক্ষ্মী প্রবেশ করেন না ও সেখান থেকে ফিরে চলে যান। এ কারণে লক্ষ্মীপুজোর রাতে জেগে থাকার রীতি প্রচলিত আছে। সারা রাত জেগে লক্ষ্মী আরাধনাই এই পুজোর বিশেষ বৈশিষ্ট্য। এখানেই ‘কোজাগরী’ শব্দ এই লক্ষ্মীপুজোর সঙ্গে সম্পর্কিত হয়ে ওঠে। বাংলার প্রতিটি ঘর শঙ্খধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে, প্রদীপের আলোতে সুসজ্জিত থাকে।

    পুজোর বিভিন্ন রীতি

    প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, দুর্গাপুজোর পরে এই বিশেষ পূর্ণিমার রাতে যে ব্যক্তি জেগে পাশা খেলেন, দেবী লক্ষ্মী (Kojagari Laxmi Puja) তাঁকে ধনসম্পদ দান করেন। মূর্তি ছাড়াও নানান প্রতীকের মাধ্যমে দেবীকে কল্পনা করে পুজো করা হয়, এই বিশেষ পূর্ণিমার রাতে। গৃহস্থরা এই প্রতীকগুলির ভিন্ন ভিন্ন নামকরণও করেছেন, যেমন আড়ি লক্ষ্মী। এ ক্ষেত্রে ধান ভর্তি ঝুড়ির ওপর কাঠের লম্বা দুটি সিঁদুর কৌটো লালচেলিতে মুড়ে লক্ষ্মীর রূপ দেওয়া হয়। “বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী”-বাণিজ্যের উপর মা লক্ষ্মীর কৃপা দৃষ্টি পেতে আবার কোন বণিক না চায়! তাই কলার পেটোর তৈরি নৌকা লক্ষ্মী আরাধনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এগুলিকে সপ্ততরী বলা হয়। বাণিজ্যিক নৌকার প্রতীক এই সপ্ততরী। অনেকেই পুজোর সময় এই সপ্ততরীতে টাকা, শস্য, হরিতকি, কড়ি, হলুদ রাখেন।

    লক্ষ্মীপুজো করলে কী কী ফল মেলে?

    পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় লক্ষ্মীসরা আঁকা হয়। বাংলার বিভিন্ন অঞ্চল ভেদে এই সরায় অঙ্কিত পুতুলের সংখ্যাও বদল হয়ে যায়। কোথাও তিনটি, কোথাও পাঁচটি, কোথাও সাতটি পুতুল আঁকা হয়। এতে থাকে লক্ষ্মী, জয়া ও বিজয়া-সহ লক্ষ্মী, রাধাকৃষ্ণ, সপরিবার দুর্গা ইত্যাদি। সুরেশ্বরী সরা নামক এক প্রকারের সরা দেখা যায়, যেখানে মহিষাসুরমর্দিনী অর্থাৎ মা দুর্গা আঁকা থাকে। আর এই সরার নীচের দিকে থাকেন সবাহন লক্ষ্মী (Kojagari Laxmi Puja)। আবার কলার বের ও লক্ষ্মীর মুখ সমন্বিত পোড়া মাটির ঘটকেও লক্ষ্মী রূপে কল্পনা করে পুজো করা হয়। এই ঘটে চাল বা জল ভরে সেটিকে লক্ষ্মী কল্পনা করে পুজো করা হয়। অনেক জায়গায় গৃহস্থ কত্রীরা নিজেরাই এই পুজো করতে পারেন৷ শ্বেতপদ্ম ও শ্বেতচন্দন দ্বারা দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়। নৈবেদ্যতে ফলমূল তো রাখতেই হয়, বিশেষ ভাবে থাকে চিঁড়ে এবং নারকেল। আতপ চাল তো লাগেই। ঘরে ঘরে আলো জ্বেলে রাখা হয়। ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে যে ঘরে আলো জ্বলে সেখানেই মা লক্ষ্মী পা রাখেন। মা লক্ষ্মীর ঘটের সামনে কড়ি রাখা হয়। প্রতিটি দ্বারে আলপনা দেন গৃহস্থ কত্রীরা। লক্ষ্মী দেবীর ১০৮ নাম জপ করলে এবং কোজাগরী পূর্ণিমার দিন লক্ষ্মী পাঁচালি পড়লে সৌভাগ্যের উদয় হয় , গৃহে সুখ, শান্তি, ধন, সম্পত্তি আসে বলেই ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Durga Puja 2023: আজ দশমীতে সিঁদুর খেলা, সঙ্গে ধুনুচি নাচও! জানেন এসবের পৌরাণিক মাহাত্ম্য?

    Durga Puja 2023: আজ দশমীতে সিঁদুর খেলা, সঙ্গে ধুনুচি নাচও! জানেন এসবের পৌরাণিক মাহাত্ম্য?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দশমীতে সিঁদুর খেলার রীতি বহু প্রাচীন। বারোয়ারি মণ্ডপ হোক অথবা বাড়ির পুজো (Durga Puja 2023), শাড়ি পরে মাতৃ জাতিকে সিঁদুর খেলতে দেখা যায়। শুধুমাত্র বিবাহিত বা প্রচলিত ভাষায় সধবা মহিলারা নন, এখন অবিবাহিত মহিলাদেরও সিঁদুর খেলায় মেতে উঠতে দেখা যায়। গালে সিঁদুর মেখে, হাতে প্রসাদের রেকাবি নিয়ে সেলফি তুলে তা সোশ্যাল মিডিয়াতে আপলোড করাটাও এখন রীতি হয়ে গিয়েছে।

    সিঁদুর খেলার ঐতিহ্য ৪০০ বছরের পুরনো

    সিঁদুর খেলার (Durga Puja 2023) প্রচলন ঠিক কবে থেকে, তার সঠিক কোনও তথ্য-প্রমাণ নেই। ইতিহাসবিদ ও শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিতদের কেউ কেউ বলেন, দুশো বছর আগে সিঁদুর খেলার প্রচলন হয়েছিল। তখন বর্ধিষ্ণু জমিদার পরিবারগুলিতে দশমীর দিন প্রতিমা বিসর্জনের আগে বাড়ির মহিলারা একে অপরকে সিঁদুরে রাঙিয়ে স্বামী ও পরিবার পরিজনদের মঙ্গল কামনা করতেন। আবার অন্য একটি মত অনুযায়ী, সিঁদুর খেলার ঐতিহ্য ৪০০ বছরের পুরনো। অন্য কোনও কারণ নয়, শুধুমাত্র খেলার ছলেই এই প্রথার চল হয়। মায়ের বিসর্জনের দিন সকলের মনই ভারাক্রান্ত থাকে। তাই ওইদিন একটু আনন্দ-উল্লাসের জন্যই সিঁদুর খেলার প্রবর্তন হয়। সেই ঐতিহ্যই সমান ভাবে চলছে আজও।

    সিঁদুর খেলার পৌরাণিক গল্প

    পুরাণ মতে, সিঁদুর ব্রহ্মের (Durga Puja 2023) প্রতীক। বিবাহিত রমণীরা সেই ব্রহ্মস্বরূপ সিঁদুর সিঁথিতে ধারণ করে থাকেন স্বামী ও পরিবারের মঙ্গলকামনায়। শ্রীমদ্ভগবত অনুসারে, গোপিনীরা কাত্যায়নী ব্রত পালন করতেন। যমুনা নদীর তীরে মাতার মাটির মূর্তি স্থাপন করে, ধূপধুনো জ্বালিয়ে এই ব্রত পালিত হত। এরপর গোপীনিরা নাকি সিঁদুর খেলায় মেতে উঠতেন। একে অপরকে সিঁদুর পরিয়ে তাঁরা আসলে শ্রীকৃষ্ণের মঙ্গল কামনা করতেন বলেই কথিত রয়েছে। এই দিনে বিবাহিত মহিলারা প্রথমে মা দুর্গার উদ্দেশে সিঁদুর অর্পণ করেন। মহিলারা পান, মিষ্টি, সিঁদুর নিয়ে দেবীকে নিবেদন করেন। রীতি অনুযায়ী, মা দুর্গা যখন তার মাতৃগৃহ ছেড়ে শ্বশুর বাড়িতে যান, তখন তাকে সিঁদুর দিয়ে সাজাতে হয়। এরপর বিবাহিতারা একে অপরের গায়ে মুখে সিঁদুর লাগান এবং একে অপরকে দুর্গাপুজোর শুভেচ্ছা জানান। কথিত আছে যে এই সিঁদুর লাগালে বিবাহিতরা সৌভাগ্যবতী হওয়ার বর পান। বাঙালি মহিলাদের মধ্যে সিঁদুর খেলার সাথে ধুনুচি নাচও দেখা যায়। মনে করা হয় মা দুর্গা ধুনুচি নাচে খুশি হন। প্রাচীনকালে লাল সিঁদুরকে ভারতীয় নারীরা বেছে নিয়েছিলেন তাঁদের অন্যতম প্রসাধনী হিসেবে। আর বিবাহিতা মহিলাদের কপালে সিঁদুর থাকার অর্থ হল তাঁরা সন্তান ধারণের উপযুক্ত। এই বিশ্বাস থেকেই লাল রঙের সিঁদুর পরার রীতি চলে আসছে মনে করা হয়‌।

    পৌরাণিক মত অনুযায়ী, মানব শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে বিভিন্ন দেবতা বাস করেন। যেমন আমাদের কপালে থাকেন স্বয়ং ব্রহ্মা, তিনি আবার সৃষ্টির দেবতা। তাই ব্রহ্মাকে তুষ্ট করতেই কপালে লাল সিঁদুর পড়েন সকলে। শক্তির সাধক তান্ত্রিকরাও কপালে রক্তবর্ণ সিঁদুর ধারণ করে থাকেন। আসলে ব্রহ্মাকে তুষ্ট রাখার জন্যই এই ব্যবস্থা। এমনটাও হতে পারে স্বয়ং সৃষ্টি কর্তার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণের জন্য হয়তো সিঁদুর খেলার (Durga Puja 2023) সূচনা হয়েছিল প্রাচীন ভারতে‌। যে সময়ই সিঁদুর খেলার প্রচলন হয়ে থাকুক, যে উদ্দেশ্যেই হয়ে থাকুক, দশমীতে একে অপরকে সিঁদুর মাখানোটা  এখন ছোটখাটো উৎসব বা অনুষ্ঠান হয়ে দাঁড়িয়েছে, অত্যন্ত আনন্দের সাথে, বছরের পর বছর ধর্মের এই রীতি, এই ঐতিহ্য পালন করে চলে চলেছেন মাতৃজাতি।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Durga Puja 2023: মহানবমীর মাহাত্ম্য, জানুন দেবী সিদ্ধিদাত্রীর পৌরাণিক আখ্যান

    Durga Puja 2023: মহানবমীর মাহাত্ম্য, জানুন দেবী সিদ্ধিদাত্রীর পৌরাণিক আখ্যান

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নবরাত্রির শেষ দিনে পূজিতা হন মাতা সিদ্ধিদাত্রী (Durga Puja 2023)। এই দেবী মা দুর্গার নবম রূপ বলে পরিগণিত হন। ভক্তদের বিশ্বাস মতে, মাতা সিদ্ধিদাত্রী দেবাদিদেব মহাদেবের শরীরের অংশ। তাই তিনি অর্ধনারীশ্বর (Durga Puja 2023) নামেও প্রসিদ্ধ। ভক্তদের বিশ্বাস, এই মহাবিশ্ব যখন তৈরি হয়নি, চারদিকে যখন ঘন অন্ধকার ছিল, প্রাণের চিহ্ন যখন কোথাও ছিল না, তখন একটি দৈব আলোকরশ্মি নারীমূর্তির আকার ধারণ করতে থাকে। ইনিই দেবী মহামায়া, মহাশক্তি। এই আদিদেবীর থেকেই জন্ম হয়েছিল ত্রি শক্তির-ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর। বিশ্ব বা জগত সংসার পরিচালনার জন্য এই আদিমাতা ত্রিদেবকে দায়িত্ব দেন। এর পরে মহাসাগরের তীরে বসে বহু বছর ধরে মহামায়ার তপস্যায় রত ছিলেন ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর। তপস্যায় প্রসন্না হয়ে দেবী তাঁদের সামনে ‘সিদ্ধিদাত্রী’ রূপে প্রকট হন।

    অসুরবধের আনন্দে নবমী তিথিতে মতে ওঠেন দেবতারা

    অসুরবধের আনন্দে নবমী তিথিতে কাত্যায়ন ঋষির আশ্রমে দেবীর বন্দনায় মেতে উঠেছিলেন দেবতারা। এখানেই নবমী পুজোর মাহাত্ম্য বা গুরুত্ব বলে পণ্ডিতদের ধারণা রয়েছে। হিন্দু শাস্ত্র মতে, এদিন তাই দেবীর সম্পূর্ণ পুজো সম্পন্ন হয়। এই তিথিতেই বলি, হোম, কুমারী পুজো এবং ষোড়শ উপাচারের বিধান আছে। দেবীকে প্রসন্ন করতে নৈবেদ্যতে তিল নিবেদন করার রীতি দেখা যায়। ভক্তদের বিশ্বাস, মাতা সিদ্ধিদাত্রীর কৃপায় জীবনের সমস্ত কুপ্রভাব বিনষ্ট হয় এবং সফলতা আসে জীবনে‌। মাতা সিদ্ধিদাত্রী ভগবান ব্রহ্মাকে বিশ্বস্রষ্টার স্রষ্টা, ভগবান বিষ্ণুকে সৃষ্টি ও জগত রক্ষার ভূমিকা এবং দেবাদিদেব মহাদেবকে প্রয়োজন হলে জগৎ ধ্বংস করার ভূমিকা প্রদান করেন। ভক্তদের (Durga Puja 2023) আরও বিশ্বাস, দেবী সিদ্ধিদাত্রী পরবর্তীতে সরস্বতী, লক্ষ্মী এবং মাতা পার্বতী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। সিদ্ধিদাত্রী মাতা সর্বদাই ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বরের সঙ্গে শক্তি হিসেবে আছেন, এটা বোঝাতেই তিনি এই ত্রিদেবের পত্নী রূপে অবস্থান করেন‌। পৌরাণিক আখ্যান অনুযায়ী, দেবী সিদ্ধিদাত্রী জগৎ পরিচালনা, পালন এবং সংহারের জন্য অলৌকিক ক্ষমতা প্রদান করেছিলেন এই ত্রিদেবকে। অতিপ্রাকৃত এই আটটি শক্তিকে মার্কণ্ডেয় পুরাণে অষ্টসিদ্ধি বলা হয়েছে যা দেবী সিদ্ধিদাত্রী দেন।

    সিদ্ধি আট প্রকারের- 

    অণিমা: এই শক্তির দ্বারা দেহকে আকারে ছোট করা যায়। 

    মহিমা: এই শক্তির দ্বারা দেহকে অসীম প্রসারিত করা যায়।

    গরিমা: এই শক্তির দ্বারা দেহকে অকল্পনীয় ভারী করা যায়।

    লঘিমা: এই শক্তির দ্বারা দেহ ভারহীন হয়ে যায়।

    প্রাপ্তি: এই শক্তির দ্বারা সর্বভূতে বিরাজ করা যায়।

    প্রাকাম্য: এই শক্তির দ্বারা সমস্ত মনের কামনা পূর্ণ করা যায়।

    ঈশিত্ব : এই শক্তির দ্বারা প্রভুত্ব স্থাপন করা যায়।

    বশিত্ব: এই শক্তির দ্বারা সকলকে পরাধীন রাখা যায়।

    ভক্তদের বিশ্বাস, মার্কণ্ডেয় (Durga Puja 2023) পুরাণ অনুসারে যে ৮ প্রকার সিদ্ধি মাতা সিদ্ধিদাত্রী ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বরকে প্রদান করেছিলেন, মহানবমীর দিন মাতা সিদ্ধিদাত্রীর আরাধনা করলে ভক্তদের মধ্যে এই সকল শক্তির প্রবেশ ঘটে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Navaratri 2023: ‘‘যেয়ো না, রজনী, আজি লয়ে তারাদলে”! নবমীতে কুমারী পুজোর প্রচলন কীভাবে?

    Navaratri 2023: ‘‘যেয়ো না, রজনী, আজি লয়ে তারাদলে”! নবমীতে কুমারী পুজোর প্রচলন কীভাবে?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দেখতে দেখতে পুজো নবমীতে (Navaratri 2023) চলে এল। মাইকেল মধুসূদন দত্ত লিখছেন, ‘‘যেয়ো না, রজনী, আজি লয়ে তারাদলে!’’। এ যেন প্রতিটি হিন্দু বাঙালির অন্তরের শব্দধ্বনি। নবমী নিশি গত হলেই যে বিসর্জন! মহানবমীর গুরুত্ব তাই অনেকখানি‌। উৎসবমুখর বাঙালির আনন্দের দিক থেকে তো বটেই, আবার এই বিশেষ তিথিতে সম্পূর্ণভাবে মা দুর্গার পুজো সম্পন্ন হয়।

    কুমারী পুজোর পৌরাণিক গল্প

    পৌরাণিক মতে, অষ্টমী ও নবমীর (Navaratri 2023) সন্ধিক্ষণে চণ্ড ও মুণ্ডকে বধ করেছিলেন মাতা চামুণ্ডা। আবার অন্য একটি মতে, মহিষাসুরের বধ হয়েছিল সন্ধিক্ষণে। তাই সমস্ত দেবতারা মহর্ষি কাত্যায়নের আশ্রমে সমবেত হয়ে নবমী তিথিতে মাতৃ আরাধনা বা বন্দনা শুরু করেছিলেন। এই দিন সকাল থেকেই তোড়জোড় শুরু হয়ে যায় অঞ্জলি দেওয়ার জন্য। এই দিনেই সম্পন্ন হয় হোম এবং কুমারী পুজো। এই পুজো নিয়ে বহু মানুষের মনের নানান প্রশ্ন ঘুরপাক খায়। কুমারী পুজোর নেপথ্যে যে পৌরাণিক কাহিনী রয়েছে সেটি জেনে নেওয়া যাক। এক সময় কোলাসুর নামের এক অসুররাজা স্বর্গ এবং মর্ত্য দখল করে নিয়েছিল। অত্যাচারী এই অসুরের কারণে মুনিঋষিরা তপস্যা করতে পারতেন না, দেবতারা স্বর্গরাজ্য থেকে বিতাড়িত ছিলেন। যার কারণে দেবতাগণ অসহায় হয়ে শরণাপন্ন হন মা কালীর। দেবতাদের উদ্ধারে দেবী কুমারী রূপে কোলাসুরকে বধ করেছিলেন। তারপর থেকেই মর্ত্যে কুমারী পুজোর প্রচলন (Navaratri 2023) শুরু হয়। অন্য একটি পৌরাণিক কথা অনুযায়ী, বাণাসুরকে মাতা কালী কুমারী রূপে বধ করেছিলেন। সেই থেকেই কুমারী পুজোর রীতি বলে শোনা যায়।  শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব নিজের স্ত্রীকে কুমারী জ্ঞানে পুজো করেছিলেন বলেও জানা যায়।

    নবমীতে কুমারী পুজো

    কুমারী পুজোকে (Navaratri 2023) ঘিরে আগ্রহের শেষ নেই। সেই ১৯০১ সাল থেকে প্রতি বছর বেলুড় মঠে মহা ধুমধাম করে এই পুজোর নিয়ম রয়েছে, যা শুরু করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। এছাড়াও বহু বাড়ির পুজোয়, মন্দির কিংবা বারোয়ারি ক্লাবগুলিতে কুমারী পুজোর আয়োজন করা হয়। কুমারী পুজোর জন্য বেছে নেওয়া হয় ১ থেকে ১৬ বছর বয়সী কন্যাদের। বয়স অনুযায়ী প্রত্যেক কুমারীর নাম আলাদা হয়। শাস্ত্র অনুযায়ী কুমারী পুজোয় কোনও জাতি, ধর্ম বা বর্ণভেদ নেই। দেবীজ্ঞানে যে-কোন কুমারীই পূজনীয়।

    ১ থেকে ১৬ বছর বয়সী কুমারীদের নাম

    এক্ষেত্রে এক থেকে ষোলো বছর বয়সী যে কোনও কুমারী মেয়ের পুজো করা যায়। বয়স অনুসারে কুমারীদের (Navaratri 2023) নামগুলি হল-

    এক বছরের কন্যা: সন্ধ্যা
    দুই বছরের কন্যা: সরস্বতী
    তিন বছরের কন্যা: ত্রিধামূর্তি
    চার বছরের কন্যা: কালিকা
    পাঁচ বছরের কন্যা: সুভগা
    ছয় বছরের কন্যা:  উমা
    সাত বছরের কন্যা: মালিনী
    আট বছরের কন্যা: কুব্জিকা
    নয় বছরের কন্যা: কালসন্দর্ভা
    দশ বছরের কন্যা: অপরাজিতা
    এগারো বছরের কন্যা: রূদ্রাণী
    বারো বছরের কন্যা: ভৈরবী
    তেরো বছরের কন্যা: মহালক্ষ্মী
    চৌদ্দ বছরের কন্যা: পীঠনায়িকা
    পনেরো বছরের কন্যা: ক্ষেত্রজ্ঞা
    ষোলো বছরের কন্যা: অন্নদা বা অম্বিকা

    হিন্দু ধর্মে নারীদের (Navaratri 2023) প্রকৃতির সমান মানা হয়। কুমারী পুজোর মধ্য দিয়ে প্রকৃতিকে আরাধনা বা পুজো করা হয়। ভারতীয় সভ্যতায় প্রকৃতি পুজোর রীতি প্রথম থেকেই রয়েছে। এদেশে মনে করা হয়, দেবতাদের বাস রয়েছে মানবের মধ্যেই এবং দেবত্বের বিকাশের দ্বারাই মানুষ দেবতা হয়।  তাই কুমারীদের দেবী রূপে আরাধনা করা হয়। ফুলের মালা, মুকুট, পায়ে আলতা, নতুন বস্ত্র, তিলক দিয়ে সাজানো হয় কুমারীদের।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Ekteswar Temple: বিরল! বাঁকুড়ার এক্তেশ্বর মন্দিরে পুজো হয় শিবের একপদ মূর্তির

    Ekteswar Temple: বিরল! বাঁকুড়ার এক্তেশ্বর মন্দিরে পুজো হয় শিবের একপদ মূর্তির

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় এবং পবিত্র শৈবতীর্থ হল বাঁকুড়া জেলার “এক্তেশ্বর শিব মন্দির” (Ekteswa Temple)। অনেকেই মনে করেন, বিষ্ণুপুরের রাজা এই সুন্দর মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন। আবার কিংবদন্তী আছে, অতীতকালে মল্লভূম ও সামন্তভূমের মধ্যে সীমানা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হলে স্বয়ং দেবাদিদেব মহাদেব এই সমস্যার সমাধান করেন। এই কারণে দুই রাজ্যের সীমানায় প্রতিষ্ঠিত হয় একতা-সম্পাদনকারী “একতেশ্বর”, যা পরবর্তীকালে মানুষের মুখে মুখে হয়ে দাঁড়ায় “এক্তেশ্বর” শিব মন্দির। আবার আচার্য যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধির মতে, এখানকার শিবলিঙ্গটি নাকি অনেকটাই মানুষের পায়ের মতো। তা থেকেই তাঁর অনুমান, বেদে উল্লিখিত “একপাদেশ্বর”-এর প্রতীক এটি, যা পরে লোকমুখে “এক্তেশ্বর” হয়ে উঠেছে।

    জেলার সর্বাপেক্ষা প্রাচীন ও সর্ববৃহৎ(Ekteswar Temple)

    ল্যাটেরাইট দ্বারা নির্মিত এই মন্দিরে পরবর্তীকালে বেলে পাথর ও ইঁটের কাজ করা হয়েছে। এটি বাঁকুড়া জেলার সর্বাপেক্ষা প্রাচীন ও সর্ববৃহৎ শিব মন্দির। পশ্চিমমুখী, পাথরের তৈরি মন্দিরটির উচ্চতা প্রায় ১৩.৭ মিটার বা  প্রায় ৪৫ ফুট। দৈর্ঘ্য ৮.৬ মিটার বা প্রায় ২৮ ফুট ৪ ইঞ্চি, প্রস্থ প্রায় ২৭ ফুট ৪ ইঞ্চি। বহুবার এই মন্দিরের সংস্কার করা হয়েছে। এর ফলে প্রাচীন শিখর-দেউলের আকৃতি অনেকটাই পরিবর্তিত হয়ে বর্তমানে একটি ভদ্র-দেউলের আকৃতি গ্রহণ করেছে। মন্দিরটির দেওয়াল অত্যন্ত পুরু। মন্দিরের গায়ের শিখর-দেউলের ছোট ছোট প্রতীক নকশাগুলি থেকে অনুমান করা হয়, একদা এটি একটি সুউচ্চ শিখর-দেউল ছিল (Ekteswar Temple)।

    একপদ মূর্তি পূজিত (Ekteswar Temple)

    এর ছাদটি দুটি ধাপে বিভক্ত। একদিকে যেমন রয়েছে হ্রসাকৃতি পীড়া দেউলের মতো, আর তার ওপরে আমলক ও কলস স্থাপিত। প্রাঙ্গণে রয়েছে বেশ কিছু ছোট মন্দির। এই মন্দিরগুলির মধ্যে রয়েছে এক ভগ্ন বাসুদেব মূর্তির একাংশ, প্রায় আড়াই ফুট উঁচু এবং প্রায় তিন ফুট দীর্ঘ নন্দী বৃষের মূর্তি, প্রায় চার ফুট উচ্চতা ও আড়াই ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট এক দ্বাদশভূজ লোকেশ্বর বিষ্ণু, প্রায় সাড়ে তিন ফুট উচ্চতা ও প্রায় পৌনে দুই ফুট চওড়া গণেশ মূর্তি প্রভৃতি। প্রত্যেকটি মূর্তিই পাথরের তৈরি এবং অত্যন্ত সুন্দর। এক্তেশ্বর মন্দিরে (Ekteswar Temple) শিবের একটি একপদ মূর্তি পূজিত হয়। উল্লেখ্য, এই ধরনের শিবমূর্তি সাধারণত অন্য কোনও শিবমন্দিরে দেখা যায় না।

    যাবেন কীভাবে, থাকবেন কোথায়? (Ekteswar Temple)

    চৈত্র সংক্রান্তির সময় গাজনের মেলা উপলক্ষ্যে এখানে বিরাট উৎসব হয়। লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয় তখন। যাতায়াত বলতে হাওড়া থেকে পুরুলিয়া এক্সপ্রেস সহ বহু ট্রেন আসছে বাঁকুড়া। সরাসরি বাস আসছে কলকাতার শহিদ মিনার বাসস্ট্যান্ড থেকে। বাঁকুড়া শহর থেকে সামান্য দূরে অবস্থিত এই এক্তেশ্বর মন্দির (Ekteswar Temple)। এখানে থাকা-খাওয়ার জন্য রয়েছে বেশ কিছু বিভিন্ন দাম ও বিভিন্ন মানের হোটেল ও লজ। অবস্থা অনুযায়ী এগুলির মধ্যে একটিতে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা যেতেই পারে ।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Navaratri 2023: সন্ধি পুজোয় দেবী দুর্গাকে পুজো করা হয় চামুণ্ডা রূপে! কেন জানেন?

    Navaratri 2023: সন্ধি পুজোয় দেবী দুর্গাকে পুজো করা হয় চামুণ্ডা রূপে! কেন জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহাষ্টমীর (Navaratri 2023) শেষ ২৪ মিনিট এবং নবমীর (Nabami) প্রথম ২৪ মিনিট, এই মোট ৪৮ মিনিটের মধ্যে শেষ করতে হয় সন্ধিপুজো। অষ্টমী থেকে নবমীর সংযোগ মুহূর্তে কোনও এক উদ্যোক্তা ‘জয় মা’ ধ্বনি তোলেন। বাড়ি থেকে পাড়ার পুজো সবেতেই কমবেশি এই রীতি দেখা যায়। চলতি বছরে আজ রবিবার মহাষ্টমী। সন্ধে ৪:৫৪ গতে সন্ধিপুজো শুরু। সন্ধে ৫:১৮-র মধ্যে সেরে নিতে হবে বলিদান। রাত্রি ৫:৪২-এর মধ্যে সন্ধিপুজোর সমাপ্তি।

    কেন হয় সন্ধিপুজো?

    ১০৮টি পদ্ম এবং ১০৮টি মাটির প্রদীপ সহযোগে সম্পন্ন হয় সন্ধি পুজো। প্রথা অনুযায়ী সন্ধি পুজোয় দেবী দুর্গাকে পুজো করা হয় চামুণ্ডা রূপে। পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী, যখন মহিষাসুরের (Navaratri 2023) সঙ্গে দেবী যুদ্ধ করছিলেন, সেই সময় চণ্ড ও মুণ্ড দেবীকে আক্রমণ করেছিল। চণ্ড ও মুণ্ড ছিল মহিষাসুরের দুই সেনাপতি। তাদের দেবী দুর্গা বধ করেছিলেন। সেই থেকে দেবীর নাম হয় চামুণ্ডা। ভক্তদের বিশ্বাস চণ্ড ও মুণ্ডকে যে সন্ধিক্ষণে দেবী বধ করেছিলেন, সেই ক্ষণেই সন্ধি পুজোর আয়োজন করা হয়।

    আবার অন্য একটি পৌরাণিক (Navaratri 2023) মতে, এই সন্ধিপুজোর সন্ধিক্ষণে দেবী কালিকার জন্ম হয়েছিল মাতা অম্বিকার তৃতীয় নয়ন থেকে। পরাক্রমশালী অসুর রক্তবীজের প্রতিটি রক্তবিন্দু থেকে নতুন অসুরের জন্ম হত। রক্তবীজের সমস্ত রক্ত দেবী কালিকা পান করেছিলেন বলে পৌরাণিক কাহিনিতে উল্লেখ রয়েছে। এই সন্ধিক্ষণে ক্ষণিকের জন্য হলেও দেবীর অন্তরের সমস্ত স্নেহ-মমতার অবসান ঘটে বলে মনে করা হয়। এজন্য সন্ধিপুজো চলাকালীন দেবীর দৃষ্টির সামনে কাউকে যেতে দেওয়া হয় না। দৃষ্টিপথ পরিষ্কার রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।

    সন্ধিপুজোয় কী ফল মেলে জানেন?

    প্রথা অনুযায়ী সন্ধিপুজোয় পুজোর শেষ ধাপ (Navaratri 2023) অর্থাৎ শেষ ২৪ মিনিটে বলিদান সম্পন্ন হয়। সাধারণত ছাগলের পাশাপাশি কোনও কোনও জায়গায় আখ, কলা, চালকুমড়ো ইত্যাদিও দেবীকে বলি দেওয়া হয়ে থাকে। কথিত আছে, সংযমী হয়ে ভক্তিভরে নিষ্ঠার সঙ্গে উপবাসী থেকে সন্ধিপুজো করলে যমের হাত থেকেও মুক্তি মেলে। অর্থাৎ মৃত্যুর সময় দেবীর কৃপায় যমের স্পর্শও রোখা যায়। আবার বলা হয়, নিষ্ঠা এবং ভক্তির সঙ্গে সন্ধিপুজো করলে যে ফল পাওয়া যায়, তা সারা বছর পুজোয় ফললাভের সমকক্ষ।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Durga Puja 2023: সুদূর আমেরিকাতেও প্রবাসী বাঙালিদের পরিচালনায় হয় বেশ কয়েকটি দুর্গাপুজো

    Durga Puja 2023: সুদূর আমেরিকাতেও প্রবাসী বাঙালিদের পরিচালনায় হয় বেশ কয়েকটি দুর্গাপুজো

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো যে শুধু আমাদের পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতেই সীমাবদ্ধ, তা নয়। সাত সমুদ্র পেরিয়ে বিদেশের মাটিতেও হয় মায়ের আরাধনা। আমাদের বাঙালি জাতি গোটা বিশ্ব জুড়ে বসবাস করে। তাই যেখানে বাঙালি, সেখানে দুর্গাপুজো (Durga Puja 2023) হবে না, এটা কল্পনা করা যেতে পারে না। শুনতে অবাক লাগলেও এটা সত্যি যে সুদূর আমেরিকাতে প্রবাসী বাঙালিদের পরিচালনায় বেশ কয়েকটি দুর্গাপুজো হয়, যা আমাদের পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুজোর থেকে কিছু কম নয়। পুজোর এই কয়েকটা দিন প্রবাসী বাঙালি যাঁরা কাজের সূত্রে বিদেশে থাকেন, তাঁরা মেতে ওঠেন দুর্গাপুজোতে। ঠিক আমাদের পশ্চিমবঙ্গের মতোই সেজে ওঠে মণ্ডপ থেকে দুর্গাপ্রতিমা। চলে খাওয়া-দাওয়া, অফুরন্ত আনন্দ। আজ এই প্রতিবেদনে আমরা নিউ ইয়র্কের কয়েকটি প্রবাসী ভারতীয় তথা বাঙালিদের  দুর্গাপুজো সম্পর্কে জানব।

    নিউ ইয়র্ক বেদান্ত সোসাইটি (বেলুড় মঠ)

    এটি স্বামী বিবেকানন্দ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত প্রথম বেদান্ত সোসাইটি। নিউ ইয়র্কের অন্যান্য হিন্দু সংগঠনের থেকে এটি একটু ভিন্নভাবে পুজো উদযাপন করে। এটি বর্তমানে রামকৃষ্ণ মঠের অন্তর্গত। পশ্চিমবঙ্গের রামকৃষ্ণ মিশনের রীতিনীতি মেনেই এখানে পুজো (Durga Puja 2023) পরিচালনা করা হয়।

    জ্যামাইকা কালী মন্দির

    এটি ২০১০ সালের নিউ ইয়র্কের প্রবাসী বাঙালি হিন্দুদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত একটি মন্দির। এখানে দুর্গাপুজোর (Durga Puja 2023) আয়োজন করা হয়। শুধু তাই নয়, বাঙালিদের বেশ কয়েকটি পুজো এখানে করা হয়।

    বাফেলোর সংস্কৃতি দুর্গাপুজো

    বিদেশের মাটিতে এই সংস্কৃতি সংগঠন বাঙালি হিন্দু সংগঠনকে আরও বেশি মজবুত করেছে। এটি ১৯৭৪-৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে দুর্গাপুজোর (Durga Puja 2023) সাথে বাঙালির বেশ কয়েকটি পুজো যেমন বসন্ত উৎসব, সরস্বতী পুজো, লক্ষ্মী পুজো, বিজয়া সম্মেলন, শীতকালীন পিকনিক প্রভৃতির আয়োজন হয়ে থাকে।

    বাংলাদেশ হিন্দু মন্দির ফ্লাশিং

    এটি বাংলাদেশের হিন্দু বাঙালিদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত একটি মন্দির, যা  এলমহার্স্ট কুইন্সে অবস্থিত। প্রায় ৮০০০ বর্গফুট জায়গা জুড়ে এটি প্রতিষ্ঠিত। এখানে প্রত্যেক বছর দুর্গাপুজো (Durga Puja 2023) হয়।

    সানিসাইড 

    এটি আরও একটি বাংলাদেশি হিন্দু প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশি হিন্দু বাঙালিদের একটি দল নিউ ইয়র্কের সানিসাইডে ১৯৮৯ সালে একটি হিন্দু  ধর্মীয় সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে বাঙালি রীতি মেনেই প্রত্যেক বছর দুর্গাপুজোর (Durga Puja 2023) আয়োজন করা হয়।

    শ্রী মহা কালী দেবী মন্দির

    ১৯৯৮ সালে নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা হয়।  এখানে দেবী কালীর পুজো করা হয়। শুধু কালী নয় এছাড়াও এখানে দুর্গা, গঙ্গা, হনুমান, কৃষ্ণ, লক্ষ্মী, রাম, সরস্বতী, শিব, গণপতি, মনসা ইত্যাদি দেবদেবীদের পুজোপাঠ হয়ে থাকে। এই মন্দিরটি সারা বছর সব সময় খোলা থাকে। দুর্গাপুজোর (Durga Puja 2023) কয়েকটা দিন এখানে বাঙালিরা মেতে ওঠেন।

    দিব্য ধাম মন্দির দুর্গাপুজো

    ১৯৯৩ সালে স্বামী জগদীশ্বর নন্দজি মহারাজ এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন।  এটি যুক্তরাষ্ট্রের সর্ববৃহৎ হিন্দু মন্দির হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Navaratri 2023: মহাষ্টমীতে পূজিতা হন মাতা মহাগৌরী, জানুন দেবীর পৌরাণিক আখ্যান

    Navaratri 2023: মহাষ্টমীতে পূজিতা হন মাতা মহাগৌরী, জানুন দেবীর পৌরাণিক আখ্যান

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সারা দেশ জুড়ে পালিত হচ্ছে নবরাত্রি (Navratri 2023), চলছে বাঙালির সব থেকে বড় উৎসব দুর্গাপুজো। নবরাত্রির অষ্টম দিনে পূজিতা হন মাতা মহাগৌরী। দেবী মহাগৌরী চতুর্ভূজা। উপরের ডান হাতে রয়েছে ত্রিশূল এবং উপরের বাম হাতে একটি ডমরু। নিচের হাত দুটি অভয়া এবং বরামুদ্রার ভঙ্গিমায় থাকে। মাতা মহাগৌরীর এই রূপে দেবীর বাহন হল একটি ষাঁড়। দুর্গার এই রূপটিকে তাঁর গাত্রবর্ণের কারণে মহাগৌরী বলা হয়।

    কথিত বিভিন্ন পৌরাণিক আখ্যান

    পৌরাণিক মত অনুযায়ী, দেবী শৈলপুত্রী (নবরাত্রির প্রথম দিনে এই মাতা পূজিতা হন) ১৬ বছর বয়সে অসামান্য সুন্দরী এবং গৌরবর্ণা  ছিলেন। এর ফলে তিনি দেবী মহাগৌরী হিসেবে পরিচিত হন। তাঁকে শঙ্খ, চাঁদ এবং সাদা ফুলের সাথে তুলনা করা হয়েছে। স্নিগ্ধতা, শুভ্রতার প্রতীক মানা হয় তাঁকে। আরেকটি পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, কালীরূপে মাতা পার্বতীর গাত্রবর্ণ সম্পূর্ণ কৃষ্ণবর্ণে পরিবর্তিত হয়েছিল। নিজের পূর্ববর্তী বর্ণ ফিরে পেতে মাতা পার্বতী ব্রহ্মার তপস্যায় ব্রতী হয়েছিলেন‌। একাকী গভীর অরণ্য মাঝে রোদ, ঝড়, বৃষ্টি, হিংস্র‌ জন্তুদের আক্রমণ-এ সমস্ত কিছু উপেক্ষা করেই মাতা পার্বতী তপস্যা করছিলেন। অবশেষে ব্রহ্মা প্রসন্ন হয়ে আবির্ভূত হন এবং মাতা পার্বতীকে বরদান করেন যে মানস সরোবরে স্নান করলেই তিনি পূর্বের বর্ণ ফিরে পাবেন।ব্রহ্মার কথামতো মানস সরোবরে স্নান করার পরেই মাতা পার্বতী তাঁর নিজের পূর্বের গাত্রবর্ণ ফিরে পান, অর্থাৎ পুনরায় গৌরবর্ণা হয়ে যান। এই গৌরবর্ণা মাতা পার্বতী তখন মহাগৌরী নামে প্রসিদ্ধ হন। 

    অন্য একটি পুরাণ অনুযায়ী (Navaratri 2023), হিমায়লকন্যা মাতা পার্বতী ছিলেন গৌরবর্ণা। শিবকে স্বামী রূপে, পতি রূপে পাওয়ার জন্য মহর্ষি নারদের পরামর্শ মতো তিনি গভীর তপস্যা শুরু করেন। গভীর অরণ্যে, সমস্ত আরাম, সুখ ত্যাগ করে ব্যাপক কৃচ্ছসাধনের মধ্যে দিয়ে এই তপস্যা চলতে থাকল বছরের পর বছর ধরে। সূর্যের তাপ, শীতের হিমেল হাওয়া, বৃষ্টি এবং ব্যাপক ঝড়ের মধ্যেও তপস্যায় ছেদ পড়ল না। কথিত আছে, এই সময় মাতার সমস্ত অঙ্গ ধূলিকণা, মাটি, গাছের পাতা দিয়ে ঢাকা পড়ে গিয়েছিল। গৌরবর্ণা মাতার সমস্ত শরীরের উপর একটি কৃষ্ণ বর্ণের আস্তরণ বা  ত্বক তৈরি হয়ে গিয়েছিল। অবশেষে ভগবান শিব দেবীর তপস্যায় প্রসন্ন হয়ে মাতা পার্বতীর সম্মুখে উপস্থিত হয়েছিলেন এবং মাতাকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে তাঁকেই (ভগবান শিবকে) মাতা পার্বতী স্বামী রূপে, পতি রূপে লাভ করবেন। এরপর গঙ্গার পবিত্র জলরাশির দ্বারা ভগবান শিব, মাতা পার্বতীকে স্নান করিয়েছিলেন। তপস্যারত  অবস্থায় মাতার শরীরে যে ময়লার আবরণ তৈরি হয়েছিল, যার জন্য মাতা গৌরবর্ণা থেকে কৃষ্ণবর্ণা হয়ে গিয়েছিলেন। মহাদেব শিব তাঁকে স্নান করানোর পর মাতা পূর্বের মতো পুনরায় গৌরবর্ণা হয়ে ওঠেন। গৌরবর্ণা এই মাতাই মহাগৌরী নামে পরিচিত। যিনি নম্রতা, শুদ্ধতা, পবিত্রতার প্রতীক রূপে পূজিতা হন।

    মাতা মহাগৌরীর (Navaratri 2023) বিষয়ে আরও কথিত রয়েছে যে, একদিন দেবী, গৌরী রূপে আট বছরের  বালিকা সেজে শিবের সামনে নৃত্য করে তাঁকে আনন্দিত করছিলেন। এরপরে শিব তাঁর পরিচয় জানতে চাইলে দেবী পার্বতী নিজের রূপ প্রকাশ করেন।

    কীভাবে সন্তুষ্ট হন মাতা মহাগৌরী?

    ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে, মাতা সমস্ত অশুভ শক্তিকে বিনাশ করেন এবং তাঁর আশীর্বাদে জীবন সম্পূর্ণভাবে সুখময় ও প্রেমময় হয়ে ওঠে। উজ্জ্বল সৌন্দর্যের প্রতীক এই দেবী অষ্টমীতে ভক্তদের দ্বারা আরাধিত হন। তাঁর নৈবেদ্যতে নারকেল রাখার রীতি রয়েছে (Navaratri 2023)। বিশ্বাস রয়েছে, মাতার আশীর্বাদ স্বরূপ ভক্তদের ভালো বিবাহ হয়। সিঁদুর, মেহেন্দি, কাজল, টিপ, চুড়ি, পায়ের আংটি, চিরুনি, আলতা, আয়না, পায়ের পাতা, সুগন্ধি, কানের দুল, নাকের পিন, নেকলেস, লাল চুনরি, মহাভার, চুলের পিন ইত্যাদি দ্বারা মায়ের পুজো সম্পন্ন হয়। সবজির তরকারি এবং হালুয়া দিয়ে মাতা মহাগৌরীকে ভোগ নিবেদন করা হয়।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Navaratri 2023: ‘কলা বৌ’ স্থাপন করা হয় গণেশের ঠিক পাশে, আসলে তিনি কার বৌ জানেন?

    Navaratri 2023: ‘কলা বৌ’ স্থাপন করা হয় গণেশের ঠিক পাশে, আসলে তিনি কার বৌ জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মা দুর্গার বড় ছেলের পাশেই তিনি দাঁড়িয়ে থাকেন। লাল পাড়ের শাড়ি পরিয়ে নারী মূর্তির আদল দেওয়া হয় তাঁকে। আসলে তিনি যে বৃক্ষ। হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন-‘কলা বৌ’ (Navaratri 2023)। ঢাক-ঢোল বাজিয়ে,  ধূপ-ধুনো জ্বালিয়ে ‘কলা বৌ’ স্নান করানো হয়, তারপর তা স্থাপন করা হয় ঠিক গণেশের পাশে। বধূ বেশে, ঘোমটা টেনে গণেশের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ‘কলা বৌ’ কি তবে গণেশের বৌ? এ প্রশ্ন অনেকেরই মনে বাসা বাঁধে। আবার কেউ কেউ এই ধারণাটাই সঠিক মনে করেন।

    কলা বৌ আসলে কার বৌ?

    পুরাণ অনুযায়ী, গণেশের দুটি বৌ। একজন ঋদ্ধি ও অপরজন সিদ্ধি। তাঁরা দুজনেই ব্রহ্মার মানসকন্যা। শিক্ষার উদ্দেশ্যে এই দুজন গণেশের কাছে যান এবং কোনও কারণবশত গণেশ রুষ্ট হয়ে তাঁদের দুজনকে অভিশাপ দিতে উদ্যত হলে ব্রহ্মা আবির্ভূত হন এবং গণেশের সাথেই দুজনের বিবাহ দেন।

    ‘কলা বৌ’ তো তাহলে গণেশের বৌ নয়। তাহলে ‘কলা বৌ’ আসলে কার বৌ? এক কথায় উত্তর হবে, শিব-জায়া অর্থাৎ শিবের বৌ। ‘কলা বৌ’ আসলে মা দুর্গার বৃক্ষ রূপ। এ প্রসঙ্গে জানা দরকার যে, ‘কলা বৌ’ প্রচলিত নাম হলেও এটি ন’টি উদ্ভিদের সমষ্টি বা সমাহার। তাই ‘কলা বৌ’ এর আসল নাম “নবপত্রিকা” (Navaratri 2023)। এই ন’টি উদ্ভিদের বর্ণনা রয়েছে এই শ্লোকটিতে –   

    রম্ভা কচ্চী হরিদ্রাচ জয়ন্তী বিল্ব দাড়িমৌ।
    অশোক মানকশ্চৈব ধান্যঞ্চ নবপত্রিকা।

    রম্ভা (কলা), কচ্চী (কচু), হরিদ্রা (হলুদ), জয়ন্তী, বিল্ব (বেল), দাড়িম্ব (ডালিম), অশোক, মানকচু ও ধান গাছ‌। নবপত্রিকায়, একটি পাতাযুক্ত কলাগাছের সাথে অপর আটটি উদ্ভিদকে শ্বেত অপরাজিতা লতা দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়। কলা গাছটিকে নারী দেহের গঠন দেওয়ার জন্য বেল দুটিকে স্তনযুগলের মতো রাখা হয়।

    প্রকৃতি পুজো ভারতীয় উপ মহাদেশের রীতি

    অতি প্রাচীন কাল থেকেই প্রকৃতি পুজো ভারতীয় উপ মহাদেশের রীতি (Navaratri 2023)। অগ্নি, জল, বায়ু, মাটি, পাহাড়, গাছ, নদী সব কিছুতেই ঈশ্বর বিরাজমান, এ ধারণা থেকেই “নবপত্রিকা” বা “কলা বৌ”-এর পুজো‌। উদ্ভিদ প্রকৃতির সজীব অংশ। খাদ্যশস্য, নিঃশ্বাসের বাতাস, জীবনদায়ী ঔষধ এসব কিছুতেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে উদ্ভিদ। ভক্তদের কল্যাণকারী মা দুর্গা তাই অধিষ্ঠাত্রী দেবী নবপত্রিকার এই উদ্ভিদগুলিতে। তিনি সর্বত্র বিরাজমান। নবপত্রিকা মা দুর্গার বৃক্ষ রূপ হিসেবে পরিচিত।

    মহাসপ্তমীর সকালে “নবপত্রিকা”-র পুজোতে মন্ত্র পাঠ করা হয়-
    “নবপত্রিকাবাসিন্যৈ নবদুর্গায়ৈ নমঃ”, যার বাংলা অর্থ দাঁড়ায়-নবপত্রিকা বাসিনী নবদুর্গা।

    এবার এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, নবপত্রিকার ন’টি গাছ দেবী দুর্গার কোন কোন রূপের প্রতীক।

    ১. রম্ভা (কলা গাছ): কলা গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী ব্রহ্মাণী

    ২. কচু: কচু গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী কালিকা

    ৩. হরিদ্রা (হলুদ গাছ): হরিদ্রা গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী উমা

    ৪. জয়ন্তী: জয়ন্তী গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী কার্তিকী

    ৫. বিল্ব (বেল গাছ): বিল্ব গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী শিবা

    ৬. দাড়িম্ব (ডালিম/বেদানা গাছ): দাড়িম্ব গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী রক্তদন্তিকা

    ৭. অশোক: অশোক গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী শোকরহিতা

    ৮.মানকচু: মানকচু গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী চামুণ্ডা

    ৯.ধান: ধান গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী লক্ষ্মী।

    কী বলছেন গবেষকরা?

    হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন ধর্মীয় রীতিনীতির বিষয়ে বহু গ্রন্থ রচনা করেছেন ১৯৬১ সালের “অ্যাকাডেমিক পুরস্কার” প্রাপক গবেষক ডঃ শশিভূষণ দাশগুপ্ত। নবপত্রিকার পুজোর বিষয়ে তিনি তাঁর “ভারতের শক্তিসাধনা ও শাক্ত সাহিত্য গ্রন্থের” ২৫-২৬ পাতায় লিখছেন, “বলা বাহুল্য, এসবই হল পৌরাণিক দুর্গা দেবীর সাথে এই শস্য দেবীকে (পড়ুন “নবপত্রিকা”) সর্বাংশে মিলিয়ে নেওয়ার এক সচেতন চেষ্টা। এই শস্য দেবী, মাতা পৃথিবীরই রূপভেদ। সুতরাং আমাদের জ্ঞাতে অজ্ঞাতে দুর্গাপুজোর ভিতরে এখনো সেই আদিমাতা পৃথিবীর পুজো অনেক খানি মিশিয়া আছে”।

    নবপত্রিকার সাথে দুর্গাপুজোর সম্পর্ক নিয়ে পণ্ডিত মহলে নানা মত রয়েছে। মার্কন্ডেয় পুরাণে নবপত্রিকার কোনও বিধান নেই, আবার কালিকা পুরাণে সপ্তমীতে “পত্রিকা” পুজোর উল্লেখ পাওয়া যায়। কৃত্তিবাসী রামায়ণে রামচন্দ্র কর্তৃক নবপত্রিকা পুজোর কথা আছে। “বাঁধিল পত্রিকা নববৃক্ষের বিলাস”। পণ্ডিতদের মত অনুযায়ী, সম্ভবত শবর সম্প্রদায় কোনও এক সময়ে ন’টি উদ্ভিদের মাধ্যমে মা দুর্গার পুজো করতেন। সেই থেকেই হয়তো “নবপত্রিকা” বা ‘কলা বৌ’ পুজো হয়ে আসছে।

     

    দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share