তখন ব্যাসদেব যমুনাকে সম্মোধন করিয়া বলিলেন— “যমুনা, আমি যদি কিছু না খেয়ে থাকি, তাহলে তোমার জল দুই ভাগ হয়ে যাক, আর মাঝখানে রাস্তা হোক, আমরা যেন পার হতে পারি।”
ঠিক তেমনি হলো— যমুনার জল দুই ভাগ হয়ে গেল, মাঝখানে ওপারে যাবার পথ হলো। সেই পথ দিয়েই ব্যাসদেব ও গোপীরা সকলে পার হয়ে গেলেন।
আমি খাই নাই—তার মানে এই যে, আমি সেই শুদ্ধাত্মা, শুদ্ধার্থ, নির্লিপ্ত প্রকৃতির পাঠ; তার ক্ষুধা-তৃষ্ণা নেই, জন্ম-মৃত্যু নাই, অজর-অমর, সুমেরুবৎ।
যার এই ব্রহ্মজ্ঞান হয়েছে, সে জীবনমুক্ত। সে ঠিক বুঝতে পারে যে আত্মা আলাদা আর দেহ আলাদা। ভগবানকে দর্শন করলে দেখার তো বুদ্ধিই আর থাকে না। দুটি আলাদা—যেমন নারকেলের জল শুকিয়ে গেলে শাঁস আলাদা আর খোল আলাদা হয়ে যায়। আত্মাটি যেন ভিতরে নড়নড় করে, তেমনি এই বিষয়বুদ্ধির জল শুকিয়ে গেলে আত্মজ্ঞান হয়; আত্মা আলাদা আর দেহ আলাদা বোধ হয়।
কাঁচা সুপারি বা কাঁচা বাদামের ভিতরের সুপারি বা বাদাম শাঁস থেকে তফাৎ করা যায় না। কিন্তু পাকা অবস্থায় সুপারি বা বাদাম আলাদা, শাঁস আলাদা হয়ে যায়। পাকা অবস্থায় রস শুকিয়ে যায়—ব্রহ্মজ্ঞান হলে বিষয় শুকিয়ে যায়।
কিন্তু সে জ্ঞান বড় কঠিন—বললেই ব্রহ্মজ্ঞান হয় না। কেউ জ্ঞানের ভান করে, একজন বড় মিথ্যা কথা কইতো—আবার এদিকে বলতো, “আমার ব্রহ্মজ্ঞান হয়েছে।”
কোন লোক তাকে তিরস্কার করাতে এসে বললে, “কেন, জগত তো স্বপ্নবৎ। সবই যদি মিথ্যা হয়, তবে সত্য কথাটাই কি ঠিক? মিথ্যাটাও মিথ্যা, সত্যটাও মিথ্যা!”
আত্মাটি যেন ভিতরে নড়নড় করে, তেমনি এই বিষয়বুদ্ধির জল শুকিয়ে গেলে আত্মজ্ঞান হয়
Leave a Reply