দক্ষিণেশ্বরের কালীবাড়িতে বসে কাঁদতেন ঠাকুর। কোনও অন্তরঙ্গ ভক্তকে দেখবেন বলে ব্যাকুল হতেন। রাত্রে ঘুম হত না। মাকে বলতেন— “মা, ওর বড় ভক্তি। ওকে টেনে নাও মা। একবার এখানে এনে দাও। সে যদি নিজে না আসতে পারে, তবে মা, আমায় সেখানে নিয়ে চলো। আমি গিয়ে দেখে আসি।”
এই কারণেই বলরামের বাড়িতে ছুটে ছুটে আসতেন। লোককে বলতেন— “বলরামের এখানে জগন্নাথের সেবা হয়। খুব শুদ্ধ। যখন আসেন, অমনি বলরামকে পাঠান— ‘নরেন্দ্রকে, ভবনাথকে, রাখালকে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে এসো। এদের খাওয়ালে নারায়ণকে খাওয়ানো হয়। এরা সাধারণ কেউ নয়—এরা ঈশ্বরস্বরূপ। তাদের খাওয়ালে তোমার বড় উপকার হবে।”
বলরামের আলয়ে শ্রীযুক্ত গিরিশ ঘোষের সঙ্গে প্রথম বসে আলাপ।
এইখানে রথের সময় কীর্তন, আনন্দ; এইখানে কতবার প্রেমের দরবারে আনন্দের মেলা হয়েছে।
‘মাস্টার’ নিকটবর্তী একটি বিদ্যালয়ে পড়ান। শুনেছি, তিনি আজ সকাল দশটার সময় শ্রীরামকৃষ্ণ বলরামের বাটিতে আসবেন। অধ্যাপনার মাঝখানে কিছু অবসর পেয়ে, বেলা প্রায় দুই প্রহর পার হলে তিনি সেখানে এসে উপস্থিত হন।
এসে শ্রীরামকৃষ্ণকে দর্শন ও প্রণাম করলেন। তখন ঠাকুর আহার করার জন্য বৈঠকখানায় একটু বিশ্রাম নিচ্ছেন। মাঝে মাঝে থলি থেকে কিছু মসলা, কাবাব বা চিনি ইত্যাদি খাচ্ছেন। অল্পবয়স্ক ভক্তরা চারদিকে ঘিরে বসে আছেন।
শ্রীরামকৃষ্ণ (হাসতে হাসতে):
“হে, তুমি যে এখন এলে! স্কুল নেই?”
মাস্টার:
“স্কুল থেকে আসছি, এখন বিশেষ কাজ নেই।”
ভক্ত (হাসতে হাসতে):
“মহাশয় স্কুল পালিয়ে এসেছেন!”
(সকলের হাস্য)
মাস্টার (হাসি):
“হায়! কে যেন টেনে আনলে!”
Leave a Reply