Ramakrishna 438: সময় না হলে, তীব্র বৈরাগ্য না এলে, ছাড়লে কষ্ট হবে

ramkrishna kathamrita by mahendra gupta 439th copy

আমার তাঁর বাক্যে ঈশ্বরকৃপায় বিশ্বাস হয়েছে। আমি বিশ্বাস করবো, অন্য যা করে করুক আমি এই দুর্লভ বিশ্বাস কেন ছাড়বো? বিচার থাক, জ্ঞানচর্চা করে কি একটা ফার্স্ট হতে হবে?

গভীর রজনীর মধ্যে বাতায়নপথে চন্দ্রকিরণ আসিতেছে, আর ফার্স্ট নাকি? একাকী ঘরের মধ্যে হায়! কিছুই জানিতে পারিলাম না! সায়েন্স, ফিলোসফি—বৃথা অধ্যয়ন করিলাম! এই জীবন, নে ধিক!

এই বলিয়া বিষের শিশি লইয়া আত্মহত্যা করিতে বসবেন না। এলাস্টারের মতো অজ্ঞানের বোঝা বইতে না পেরে শিলাখণ্ডের উপর মাথা রেখে মৃত্যুর অপেক্ষাও করিব না।

আমার এসব ভয়ানক পণ্ডিতদের মতো এক ছটাক জ্ঞানে রহস্য ভেদ করতে যাবার প্রয়োজন নাই। বেশ কথা—গুরুবাক্যে বিশ্বাস।

“বেশ কথা, গুরু বিশ্বাস। হে ভগবান, আমায় ওই বিশ্বাস দাও— আর মিছামিছি ঘুরিয়ে দিও না।
যা হবার নয়, তা খুঁজতে যেও না। আর ঠাকুর যা শিখিয়েছেন, যেন তোমার পাণিপদে দেশশুদ্ধ ভক্তি হয়, অমলা ভক্তি। অহেতুক ভক্তি নয়।
আর যেন তোমার ভুবনমোহিনী মায়ায় মুগ্ধ না হই। কৃপা করে এই আশীর্বাদ করো।”

শ্রীরামকৃষ্ণের অদৃষ্ট-নির্ধারিত প্রেমের কথা ভাবতে ভাবতে, ‘মনি’ সেই তমসাচ্ছন্ন রাত্রিতে রাজপথ দিয়ে বাড়ি ফিরছেন। মনে মনে ভাবছেন— কী ভালোবাসা! গিরিশকে ভালোবেসেছেন এমনভাবে, যে গিরিশ থিয়েটারে যাবেন, তবুও তাঁর বাড়িতে যেতে হবে।

শুধু তাই নয়, ঠাকুর এমনও বলেননি যে— “সব ত্যাগ করো, আমার জন্য গৃহ-পরিজন, বিষয়-সম্পত্তি সব ছেড়ে দিয়ে সন্ন্যাস অবলম্বন করো।”

আমি বুঝেছি, এর অর্থ এই যে— সময় না হলে, তীব্র বৈরাগ্য না এলে, ছাড়লে কষ্ট হবে।
ঠাকুর যেমন নিজে বলেন— “ঘায়ে মামড়ে ঘা শুকোতে না শুকোতেই যদি তা ছিঁড়ে ফেলো, তবে রক্ত পড়ে, কষ্ট হয়। কিন্তু যখন ঘা শুকিয়ে যায়, তখন মামড়ে নিজেই খসে পড়ে।”

সাধারণ লোকে, যাদের অন্তর্দৃষ্টি নেই, তারা বলে— “এখনও সংসার ত্যাগ করনি?”
সদগুরু অহেতুক কৃপাসিন্ধু, প্রেমের সমুদ্র। জীবের কিছু মঙ্গল হয়— এই চেষ্টাই তিনি নিশিদিন করে চলেছেন।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share