Ramakrishna 439: ছেলেরা শুদ্ধ আত্মা, স্ত্রীলোক অন্যভাবে স্পর্শ করেনি, বিষয়কর্ম করেনি

https://www.madhyom.com/ramakrishna-kathamrita-by-mahendranath-gupta-360th-copy

আমি বুঝেছি, এর অর্থ এই যে— সময় না হলে, তীব্র বৈরাগ্য না এলে, ছাড়লে কষ্ট হবে। ঠাকুর যেমন নিজে বলেন— “ঘায়ে মামড়ে ঘা শুকোতে না শুকোতেই যদি তা ছিঁড়ে ফেলো, তবে রক্ত পড়ে, কষ্ট হয়। কিন্তু যখন ঘা শুকিয়ে যায়, তখন মামড়ে নিজেই খসে পড়ে।”

সাধারণ লোকে, যাদের অন্তর্দৃষ্টি নেই, তারা বলে— “এখনও সংসার ত্যাগ করনি?” সদগুরু অহেতুক কৃপাসিন্ধু, প্রেমের সমুদ্র। জীবের কিছু মঙ্গল হয়— এই চেষ্টাই তিনি নিশিদিন করে চলেছেন।

আর গিরিশের কি বিশ্বাস! দুদিন দর্শনের পরেই বলেছিলেন, “প্রভু, তুমি ঈশ্বর, মানুষদেহ ধারণ করে এসেছ আমার পরিত্রাণের জন্য।” গিরিশ ঠিক তো বলেছেন? ঈশ্বর মানুষদেহ ধারণ না করলে ঘরের লোকের মতো কে শিক্ষা দেবে? কে জানিয়ে দেবে ঈশ্বরই বস্তু, আর সব অবস্তু? কে ধরায় পতিত দুর্বল সন্তানকে হাত ধরে তুলবে? কে কামিনী-কাঞ্চনাসক্ত বাসনা-স্বভাবপ্রাপ্ত মানুষকে আবার পূর্ববৎ অমৃতের অধিকারী করবে? আর তিনি মানুষরূপে সঙ্গে সঙ্গে না বেড়ালে, তাঁর তদ্গত তন্তু আত্মা—যারা ঈশ্বর বই আর কিছু ভালোবাসে না—তারা কী করে দিন কাটাবেন?

“পরিত্রাণায় সাধুনাং, বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম, ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবানি যুগে যুগে। কি ভালোবাসা! নরেন্দ্রর জন্য পাগল, নারায়ণের জন্য ক্রন্দন। বলতেন, “এরা ও অন্যান্য ছেলেরা—রাখাল, ভবনাথ, পূর্ণ, বাবু—মিথ্যে নয়, এরা সাক্ষাৎ নারায়ণ। আমার জন্য দেহধারণ করে এসেছে।” এই প্রেম তো মানুষের জ্ঞানের নয়, এ প্রেম ঈশ্বরপ্রেম।

ছেলেরা শুদ্ধ আত্মা। স্ত্রীলোক অন্যভাবে স্পর্শ করেনি, বিষয়কর্ম করেনি। এদের লোভ, অহংকার, হিংসা ইত্যাদির স্ফূর্তি হয়নি। তাই ছেলেদের ভিতর ঈশ্বরের বেশি প্রকাশ। কিন্তু এ দৃষ্টি কার ছিল? ঠাকুরের। অন্তর্দৃষ্টি। সমস্ত দেখেছেন, দেখছেন। এ বিষয়ে সত্য, সরল, উদার, ঈশ্বরভক্ত। তাই এরূপ ভক্ত দেখলে—“এই সাক্ষাৎ নারায়ণ” বলে সেবা করেন। তাদের নাম, তাদের দেখিবার জন্য কাঁদেন। কলকাতায় ছুটে ছুটে যান।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share