Author: ishika-banerjee

  • Pahalgam Terror Attack: পহেলগাঁও হামলার পিছনে পাক যোগ! ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’-এর নামে জঙ্গি তাণ্ডব, পিছনে কি লস্কর নেতা সইফুল্লা?

    Pahalgam Terror Attack: পহেলগাঁও হামলার পিছনে পাক যোগ! ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’-এর নামে জঙ্গি তাণ্ডব, পিছনে কি লস্কর নেতা সইফুল্লা?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ফের রক্তাক্ত ভূস্বর্গ ! জঙ্গিদের গুলিতে মাটিতে লুটিয়ে রয়েছেন একের পর এক পর্যটক ৷ একবার দেখে মনে হতে পারে বৈসরণের ঘন সবুজ প্রান্তরে কেউ যেন লাল রং ঢেলে দিয়েছে ৷ জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে (Pahalgam Terror Attack) মঙ্গলবার দুপুরের জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন নিরীহ হিন্দু পর্যটক। মঙ্গলবার রাতেই হামলার দায় স্বীকার করেছে পাক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈবার ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (TRF)। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার মূল চক্রী সইফুল্লা খালিদ ওরফে সইফুল্লা কাসুরি। তাঁর নির্দেশেই, পাঁচ-ছয় জন জঙ্গি এই হামলা চালায়। সইফুল্লা লস্করের অন্যতম প্রধান। এই জঙ্গিগোষ্ঠীর অন্যতম মাথা তথা ভরতের ‘ওয়ান্টেড’ তালিকায় থাকা হাফিজ সইদের ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত সইফুল্লা।

    পহেলগাঁও হামলার মূল চক্রী সইফুল্লার সঙ্গে পাক যোগ

    গোয়েন্দা সূত্রের খবর, পহেলগাঁওয়ে হামলার পিছনে রয়েছে লস্কর নেতা সইফুল্লা। তাঁর পরিকল্পনা মাফিক লস্কর-ই-তৈবার ‘ছায়া সংগঠন’ টিআরএফ এর পাঁচ-ছয় জন জঙ্গি এই হামলা চালায়। পাক সেনায় যথেষ্ট ‘প্রভাব’ রয়েছে সইফুল্লার। পহেলগাঁও হামলার মাস দুই আগে পাকিস্তানের পঞ্জাবের কাঙ্গলপুরে তাঁকে দেখা গিয়েছিল। সেখানেই পাক সেনার একটি বড় ব্যাটেলিয়ন ছিল। জানা গিয়েছে, ওই ব্যাটেলিয়নে একটি জ্বালাময়ী বক্তৃতা করার জন্য সইফুল্লাকে আহ্বান করেছিলেন পাক সেনার কর্নেল জাহিদ জারিন। সেনাকর্মীদের মনোবল বৃদ্ধি করতে সইফুল্লাকে ডাকা হয়। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সইফুল্লার বক্তৃতার বেশির ভাগ অংশ জুড়েই ছিল ভারতবিরোধী বার্তা। ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপর হামলা চালানোর ‘পরামর্শ’ও দেওয়া হয়।

    পাকিস্তানে বসেই হামলার পরিকল্পনা

    পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়াতেও ভারত-বিরোধী সভার আয়োজন করেছিল পাক সেনা। সেই সভাতেও সইফুল্লা ভারত বিদ্বেষী বক্তৃতা করেন। এ ছাড়াও, কাশ্মীর দখলের হুঙ্কারও দিতে শোনা যায় তাঁকে। গোয়েন্দা সূত্রে আরও খবর, গত বছর শতাধিক পাকিস্তানি কিশোর-যুবক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীতে যোগ দিয়েছিল। সেই যোগদান অনুষ্ঠানেও ছিলেন সইফুল্লা। মনে করা হচ্ছে, সেই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীরই কয়েক জনকে বেছে নেওয়া হয়েছিল পহেলগাঁও হামলার জন্য। সেখানেই তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। পরে পাক সেনার সহায়তাতেই সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিল তারা।

    পাকিস্তানের হাত ধরেই টিআরএফ-এর উত্থান

    টিআরএফের উত্থান ২০১৯ সালে, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ হওয়ার পর। টিআরএফের জন্ম হয়েছিল কাশ্মীরি জঙ্গি শেখ সাজ্জাদ গুলের হাতে। সে সময় জম্মু ও কাশ্মীরের ‘বিশেষ মর্যাদা’-র সদ্য অবলুপ্তি হয়েছে। তখনই লস্কর-ই-তৈবার ‘ছায়া সংগঠন’ হিসাবে উঠে আসে টিআরএফ। সে সময় একাধিক জঙ্গিগোষ্ঠীর থেকে এই সংগঠনে সদস্যদের নিযুক্ত করা হয়। এদের মূল লক্ষ্য ছিল, কাশ্মীরের স্থিতাবস্থায় বিঘ্ন ঘটানো এবং ভারতের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলা। সেই লক্ষ্য সাধনের জন্য নাশকতামূলক কাজকর্মে পুনর্বিন্যাস আনার চেষ্টা শুরু করে এই জঙ্গিগোষ্ঠী। বিশেষ ভাবে নিশানা করা হয় পরিযায়ী শ্রমিক এবং কাশ্মীরি পণ্ডিতদের। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, টিআরএফ জঙ্গিগোষ্ঠীর দ্রুত আড়ে-বহরে বিস্তারের নেপথ্যে সরাসরি ভূমিকা ছিল পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের। ২০২৩ সালে টিআরএফকে ‘সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী’ হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে কেন্দ্র।

    টিআরএফ কী ভাবে কাজ করে?

    টিআরএফ (TRF) হল প্রথম সন্ত্রাসী সংগঠন যার নাম ইংরেজিতে দেওয়া হয়েছে। সাধারণত সন্ত্রাসী সংগঠনের নামে উর্দু বা ফারসি শব্দ ব্যবহার করা হয়। বলা হয়ে থাকে যে, বিশ্বের চোখ এড়াতে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা ইংরেজি শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। এই সংগঠনে যোগদানের সঙ্গে সঙ্গেই সন্ত্রাসীদের প্রথমে সীমান্তের ওপারে নিয়ে যাওয়া হয় প্রশিক্ষণের জন্য। এরপর তাঁরা ফিরে আসে দেশে। সংগঠনে একটি কমান্ডার সিস্টেম আছে, যারা জোন অনুযায়ী কাজ করে। সূত্রের খবর, টিআরএফের সকল কমান্ডার কেবল পাকিস্তান থেকে নির্দেশ পান। টিআরএফ সন্ত্রাসীরা প্রায়ই হিন্দু, পর্যটক এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপর আক্রমণ করে থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন টিআরএফ সন্ত্রাসবাদীরা দ্রুত খ্যাতি অর্জনের জন্য এই কৌশল অবলম্বন করে।

    নিহতদের পরিবারের পাশে শাহ, মোদির বৈঠক, ট্রাম্পের বার্তা

    পহেলগাঁওয়ে (Pahalgam Terror Attack) পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার পর সৌদি আরব সফর কাটছাঁট করে ইতিমধ্যেই দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বুধবার সকালে দিল্লি বিমানবন্দরে পা রাখেন তিনি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি। দিল্লি বিমানবন্দরে তিন জনের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁদের কাছ থেকে জঙ্গি হামলার বিষয়ে সম্পূর্ণ খোঁজখবর নেন। পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা করেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করে সন্ত্রাসবাদ দমনে ভারতের পাশে থাকার বার্তা দেন। এক্স হ্যান্ডলে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল একথা জানিয়েছেন। পহেলগাঁওয়ে পৌঁছেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। বুধবার সকালে তিনি জঙ্গি হামলায় নিহতদের শেষ শ্রদ্ধা জানান। কথা বলেন তাঁদের পরিজনদের সঙ্গে। জরুরি পরিস্থিতিতে উপত্যকায় পৌঁছেছে জাতীয় তদন্তকারী দল এনআইএ।

    চার জঙ্গির ছবি প্রকাশ

    পহেলগাঁওয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত চার জঙ্গিকে শনাক্ত করেছে ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলি। ইতিমধ্যে চার জনের ছবিও প্রকাশ করে পরিচয় জানানো হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, চার জঙ্গি হল— আদিল, আসিফ ফুজি, সুলেমান শাহ এবং আবু তালহা। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ সূত্রে খবর, প্রথমে আইইডি বিস্ফোরণের ছক করেছিল জঙ্গিরা। পরে পরিকল্পনা বদলে দু’টি দলে ভাগ হয়ে যায় তারা। অত্যাধুনিক অস্ত্র নিয়ে পর্যটকদের উপর হামলা চালায়। জঙ্গিরা সকলেই সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তান থেকে ভারতে প্রবেশ করেছিল বলেই মনে করছেন গোয়েন্দারা। দিন কয়েক আগেই ভারতে আসে তারা। এমনকি এলাকা পরিদর্শনও করে যায়।

  • Pahalgam Terror Attack: ‘এটা মুসলিম নয়, গুলি করো’! নাম জেনে, বিবস্ত্র করিয়ে ধর্মীয় পরিচয় দেখে বেছে বেছে হিন্দু পুরুষদের হত্যা

    Pahalgam Terror Attack: ‘এটা মুসলিম নয়, গুলি করো’! নাম জেনে, বিবস্ত্র করিয়ে ধর্মীয় পরিচয় দেখে বেছে বেছে হিন্দু পুরুষদের হত্যা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পাহাড়ের উপর ছোট্ট সবুজ স্বপ্নিল উপত্যকা বৈসরনে তখন প্রায় জনা চল্লিশেক পর্যটকের ভিড়৷ হঠাৎ জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এল সশস্ত্র জঙ্গিরা ৷ তাদের হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্র৷ সাধারণ পর্যটকদের ঘিরে তাঁদের লক্ষ্য করে নির্দ্বিধায় এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করল জঙ্গিরা৷ বন্দুকের নলের সামনে দাঁড় করিয়ে নাম জিজ্ঞাসা হয় করা হয় পর্যটকদের। বলা হয় ‘কালমা’ পড়তে। না পড়তে পারলেই নিশ্চিত করা হয় হিন্দুত্ব। চলে গুলি। এভাবেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন একের পর এক পর্যটক৷ আহতদের কেউ সাহায্যের জন্য চিৎকার করছেন ৷ কেউ বা আতঙ্কে কথাই বলতে পারছেন না! কারও রক্তে ভেজা নিথর দেহ পড়ে রয়েছে সবুজ ঘাসের উপর ৷ মঙ্গলবার এমনই ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলার সাক্ষী থাকল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁও (Pahalgam Terror Attack) জেলার বৈসরন উপত্যকা ৷

    নিশানায় হিন্দু পর্যটকরা

    কাশ্মীরের (Kashmir Terrorist Attack) পহেলগাঁওয়ে (Pahalgam) ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর আতঙ্কে কাঁপছে গোটা উপত্যকা। বৈসরণে যে পৈশাচিক হামলা চালায় জঙ্গিরা, প্রতক্ষদর্শীদের মুখে তার বিবরণ শুনে মানুষ কেঁপে উঠতে শুরু করেছে। বৈসরণে জঙ্গিরা যেভাবে হামলা চালায়, সেখানে নাম শুনে, পরিচয় পত্র দেখে তবেই পর্যটকদের (Kashmir Tourist) মারা হয়েছে বলে জানান প্রতক্ষ্যদর্শীরা। নাম জিজ্ঞেস করে, যাঁরা মুসলিম নন, সেই সমস্ত পর্যটকদের বেছে বেছে গুলি করা হয়েছে। প্রিয়জনকে হারিয়ে তাই কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় এক তরুণীকে। তিনি স্পষ্ট জানান, তাঁর স্বামীর নাম জিজ্ঞেস করে তবেই গুলি করার কথা বলে জঙ্গিরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি ভাইরাল (Viral) হতে শুরু করেছে যেখানে এক তরুণী হানিমুনে গিয়েছিলেন কাশ্মীরে। জঙ্গি হামলা হলে ওই তরুণীকে সদ্য বিবাহিত স্বামীর মৃতদেহ পাশে নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। যে ছবি দেখে গোটা দেশের মানুষের চোখে জল। জঙ্গিরা নাম জিজ্ঞাসা করে, পরিচয় পত্র দেখে ইচ্ছে করে তাঁর স্বামীকে চোখের সামনে গুলি করে দেয় বলে জানান ওই তরুণী।

    ‘এটা মুসলিম নয়, গুলি করো

    ভাইরাল একটি ভিডিওয় (Pahalgam Terror Attack) এক মহিলা বলেন, “আমরা ভেলপুরি খাচ্ছিলাম, তখনই ওরা এসে আমার স্বামীকে গুলি করে। একজন বলে উঠল, ‘এটা মুসলিম নয়’ – তারপরই ওকে গুলি করে মেরে ফেলল।” এক প্রতক্ষ্যদর্শীর কথায়, সন্ত্রাসীরা মানুষের ধর্ম নিশ্চিত করতে তাদের ‘কালমা’ পড়তে বলে – ইসলাম ধর্মে কালমা হলো ইমানের ঘোষণা। যারা এটি পড়তে পারেননি, তাদের অমুসলিম মনে করে হত্যা করা হয়। এছাড়াও, কিছু ক্ষেত্রে জঙ্গিরা লোকজনকে বিবস্ত্র করে ‘খৎনা’ আছে কি না তা পরীক্ষা করে, এবং যাদের মধ্যে খৎনা পাওয়া যায়নি, তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়। জঙ্গিদের পরনে ছিল সেনাবাহিনীর পোশাক। তাই প্রথমে তাদের বোঝা যায়নি, বলেও জানান পর্যটকরা। কাশ্মীরে মঙ্গলবার জঙ্গি হামলায় এখনও পর্যন্ত বাংলার ৩ জন-সহ ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত দক্ষিণ কলকাতার বৈষ্ণবঘাটা লেনের বাসিন্দা বিতান অধিকারী। কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় নিহত বেহালার বাসিন্দা সমীর গুহ। প্রাণ গিয়েছে হায়দরাবাদে কর্মরত আইবি অফিসার পুরুলিয়ার বাসিন্দা মণীশ রঞ্জনের। জঙ্গিদের গুলিবৃষ্টিতে নিহতদের মধ্যে ২ জন বিদেশি নাগরিকও রয়েছেন। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় আহত অন্তত ২০ জন ।

    ‘মোদিকে গিয়ে বোলো

    ফিরে এল বিবেক অগ্নিহোত্রী ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ (The Kashmir Files)-এর স্মৃতি। ১৯৯০ সালের পয়লা জানুয়ারি সমগ্র কাশ্মীরে (Kashmir) যে পাঁচ হাজার হিন্দু পণ্ডিত ব্রাহ্মণদের গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল, তার উপর ভিত্তি করেই এই ছবি। এখানে দেখা যায় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে জেহাদিদের হিংস্র স্লোগান “কাশ্মীর শুধু কাশ্মীরি মুসলমানদের, এখানে থাকতে হলে আজাদিকে সমর্থন করো, নইলে কাশ্মীর হবে হিন্দু পুরুষহীন, শুধু হিন্দু মহিলারা থাকবেন।” এদিনও যেন তাই হল। জম্মু-কাশ্মীরে কর্নাটক থেকে সপরিবারে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন মঞ্জুনাথ রাও। মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ের (Pahalgam Terror Attack) বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হয় মঞ্জুনাথের। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছেন স্ত্রী পল্লবী এবং তাঁদের পুত্র। কর্নাটকের শিবমোগ্গার বাসিন্দা পল্লবীর দাবি, অতর্কিত তাঁদের আক্রমণ করে তিন থেকে চার জন। জঙ্গিহানার বিবরণ দিতে গিয়ে পল্লবী বলেন, ‘‘স্বামী-ছেলের সঙ্গে কাশ্মীর বেড়াতে এসেছিলাম। দুপুর দেড়টা নাগাদ আমরা ছিলাম পহেলগাঁওয়ে। আচমকা তিন-চার জন বন্দুক হাতে আমাদের দিকে এগিয়ে আসে। নাম জিজ্ঞাসা করে গুলি চালায় ওরা।’’ পল্লবীর দাবি, আততায়ীরা বেছে বেছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের খুন করছিল। চোখের সামনে স্বামীকে লুটিয়ে পড়তে দেখে পল্লবী আততায়ীদের বলে তারা যেন তাঁকেও মেরে দেন। কিন্তু সেটা করেনি জঙ্গিরা। পল্লবীর কথায়, ‘‘আমি ওদের কাঁদতে কাঁদতে বললাম, স্বামীকে মেরে দিয়েছ। আমাকেও মেরে ফেলো। ওদের একজন বলল, ‘না, তোমায় মারব না। এইটা মোদিকে (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি) গিয়ে বোলো।’’

  • Pahalgam Terror Attack: নিরীহ হিন্দু নাগরিকদের বেছে বেছে নিশানা! গত আড়াই দশকে বার বার ইসলামিক সন্ত্রাসের শিকার কাশ্মীর

    Pahalgam Terror Attack: নিরীহ হিন্দু নাগরিকদের বেছে বেছে নিশানা! গত আড়াই দশকে বার বার ইসলামিক সন্ত্রাসের শিকার কাশ্মীর

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “কাশ্মীরী পণ্ডিতোঁ, কাশ্মীর ছোড়ো”  ভূস্বর্গ কাশ্মীরে সন্ত্রাসের একটাই ধর্ম, সন্ত্রাসীদের একটাই ধর্ম। ইসলামিক সন্ত্রাসীদের একটাই স্বর “জেহাদি হও, না হয় মরো, নইলে কাশ্মীর ছাড়ো।” কখনও এলোপাথাড়ি গুলি, কখনও গ্রেনেড, আবার কখনও গাড়িবোমা! শুধু পহেলগাঁও নয়, গত ২৫ বছরে বারবার রক্তাক্ত হয়েছে ভূস্বর্গ (Jammu Kashmir)। মঙ্গলবার ফের এক ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলার সাক্ষী থাকল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁও (Pahalgam Terror Attack)। যেখানে সবুজে ঘেরা বৈসরণ উপত্যকায় সাধারণ পর্যটকদের লক্ষ্য করে নির্দ্বিধায় এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করল জঙ্গিরা৷ বেছে বেছে নিশানা করা হল নিরীহ হিন্দু নাগরিকদের৷ এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে অনুমান।

    গত সিকি শতকে বারবার রক্তাক্ত ভূস্বর্গ

    কাশ্মীর (Jammu Kashmir) উপত্যকায় বারবার সন্ত্রাসবাদের শিকার হয়েছেন হিন্দু তথা অমুসলিমরা। সাধারণ মানুষ, তীর্থযাত্রী, নিরাপত্তা কর্মী, শ্রমিক—সবাইকে একত্রে ক্ষতবিক্ষত করেছে ইসলামিক জঙ্গিরা। গত দুই দশকের নৃশংস হামলাগুলো প্রমাণ করে, এই সহিংসতার প্রকৃতি নিছক নিষ্ঠুরতা, ভয় দেখানো, আতঙ্ক সৃষ্টি।

    শিখদের উপর হামলা

    ২০০০ সালের ২১ মার্চ, অনন্তনাগের ছত্তিসিংপোড়া গ্রামে ঢুকে পড়ে জঙ্গিরা। হামলা চালানো হয় সংখ্যালঘু শিখদের উপর। মারা যান ৩৬ জন মানুষ। ওই বছরের অগাস্টে নুনওয়ান বেসক্যাম্পের কাছে হামলা হয়। ঘটনায় ২৪ জন অমরনাথ তীর্থযাত্রী সহ মোট ৩২ জন মারা যান।

    বিধানসভা ভবনে আত্মঘাতী হামলা

    ২০০১ সালের ১ অক্টোবর, শ্রীনগরে জম্মু ও কাশ্মীর (Jammu Kashmir) রাজ্য বিধানসভা ভবনে আত্মঘাতী হামলায় প্রাণ হারান ৩৬ জন, যার মধ্যে ছিলেন নিরাপত্তা কর্মী এবং নিরীহ সাধারণ নাগরিক। রাজনৈতিক পরিকাঠামোর কেন্দ্রবিন্দুকে লক্ষ্য করে এই হামলা ছিল নজিরবিহীন। ওই বছরই অনন্তনাগের শেশনাগ বেসক্যাম্পে ফের অমরনাথ যাত্রীদের লক্ষ্য করে হামলা চালায় জঙ্গিরা। এবার প্রাণ হারান ১৩জন।

    অমরনাথ যাত্রীদের উপর হামলা

    এর ঠিক এক বছর পরে, ২০০২ সালে, চন্দনওয়ারি বেস ক্যাম্পে অমরনাথ যাত্রার সময় এক জঙ্গি হামলায় নিহত হন ১১ জন তীর্থযাত্রী। ধর্মীয় আস্থার জায়গাকেও রেহাই দেয়নি জঙ্গিরা। ২০০২ সালেরই ২৩ নভেম্বর, দক্ষিণ কাশ্মীরের লোয়ার মুন্ডায় জম্মু-শ্রীনগর হাইওয়েতে একটি শক্তিশালী আইইডি বিস্ফোরণে প্রাণ যায় ১৯ জনের। নিহতদের মধ্যে ছিলেন ৯ জন নিরাপত্তা কর্মী, ৩ জন নারী ও ২ জন শিশু।

    কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উপর হামলা

    ২০০৩ সালের মার্চ মাসে পুলওয়ামার নন্দিমার্গ গ্রামে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গিদের বর্বর হামলায় নিহত হন ২৪ জন কাশ্মীরি পণ্ডিত, যাদের মধ্যে ১১ জন নারী ও ২ জন শিশু ছিলেন। এই হত্যাকাণ্ড কাশ্মীরি পণ্ডিত সম্প্রদায়ের উপত্যকা ছাড়ার প্রক্রিয়াকে আরও গতি দেয়।

    পুলওয়ামার এক জনবহুল বাজারে হামলা

    ২০০৫ সালের ১৩ জুন পুলওয়ামার এক জনবহুল বাজারে বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি বিস্ফোরিত হলে প্রাণ যায় ১৩ জনের। নিহতদের মধ্যে ছিলেন ২ জন স্কুল পড়ুয়া ও ৩ জন সিআরপিএফ জওয়ান। আহত হন ১০০-র বেশি মানুষ।

    পর্যটক বোঝাই বাসে হামলা

    ২০০৬ সালের ২৬ মে, শ্রীনগরের উপকণ্ঠে জাকুরার বাটাপোরা এলাকায় সন্ত্রাসীবাদীরা একটি পর্যটক বোঝাই বাসে গ্রেনেড ছুড়লে চার জন পর্যটক নিহত এবং ছ’জন আহত হয়েছিলেন। নিহতেরা ছিলেন গুজরাটের বাসিন্দা। ঘটনাচক্রে, সে সময় গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদি। সে বছরেরই ১১ জুলাই শ্রীনগরেরই লালচকে পর্যটক বোঝাই বাসে ফের গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। ওই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন এক জন। সে দিন শ্রীনগরের বিভিন্ন প্রান্তে পাঁচটি হামলায় মোট আট জনের মৃত্যু হয়েছিল। ২০০৬ সালেরই জুনে কুলগামে ৯ জন বিহারী ও নেপালি শ্রমিককে হত্যা করে জঙ্গিরা, স্পষ্ট করে দেয়, এই সন্ত্রাস কেবল রাজনৈতিক নয়, বরং সমাজ-অর্থনীতিক কাঠামোকে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা।

    মানবিকতা নেই, নেই কোনও ধর্মীয় বোধ

    ২০১৭ সালের ১০ জুলাই, কুলগামে ফের অমরনাথ যাত্রার বাসে হামলা হয়। নিহত হন ৮ জন তীর্থযাত্রী। দক্ষিণ কাশ্মীরের বোয়েতাং অঞ্চলে ঘটে এই ঘটনা। বছর গড়ালেও হুমকি কাটেনি। বারবার রক্তাক্ত হয়েছে ভূস্বর্গ (Jammu Kashmir)। ভিনরাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকেরা খুন হয়েছেন হামেশাই। অমরনাথ, বৈষ্ণোদেবী বা অন্যান্য ধর্মস্থানে আগত পুণ্যার্থীরাও বার বার হামলার শিকার হয়েছেন। প্রায় দু’দশকের ব্যবধানে কাশ্মীর উপত্যকার ফের মঙ্গলবার এত বড় হামলার (Pahalgam Terror Attack) শিকার হলেন পর্যটকেরা। এই ধারাবাহিক হামলাগুলোর দিকে তাকালে স্পষ্ট হয়, সন্ত্রাসবাদের কোনও মানবিকতা নেই, নেই কোনও ধর্মীয় বোধ। ধর্মের নামে যারা হত্যা চালায়, তারা মানবতা থেকেই বিচ্যুত। তারা কাশ্মীরের ভালো চায় না। কাশ্মীরীদের রুজি-রুটি পর্যটন সেখানেই ধাক্কা দিল জঙ্গিরা। আসলে সন্ত্রাসের লক্ষ্যই হল জন্নত-এ-কাশ্মীরকে জাহান্নামে পরিণত করা।

  • Battle of Jalalabad Hill: জালালাবাদ যুদ্ধ, ২২শে এপ্রিল ১৯৩০! পরাধীন ভারতে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের মাইলফলক

    Battle of Jalalabad Hill: জালালাবাদ যুদ্ধ, ২২শে এপ্রিল ১৯৩০! পরাধীন ভারতে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের মাইলফলক

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জেলে মাস্টারদার (Masterda Surya Sen) সঙ্গী ছিল চারটি বই। গীতা, চণ্ডী, মহাভারত আর রবীন্দ্রনাথের ‘চয়নিকা’। গীতাই মৃত্যুভয় দূর করতে সাহায্য করেছিল মাস্টারদা-সূর্য সেনকে। মহান বিপ্লবী এক চিঠিতে লিখেছেন, ‘গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলছেন, মানুষ যেমন জীর্ণবস্ত্র পরিত্যাগ করে নূতন বস্ত্র গ্রহণ করে, সেরূপ আত্মা জীর্ণ শরীর ত্যাগ করে অন্য নূতন দেহ ধারণ করে। কবি বলছেন, মরণ রে, তুঁহু মম শ্যাম সমান। মানুষ এত সুন্দর লেখা পড়েও উপলব্ধি করতে পারে না বলেই কি মৃত্যুকে ভয়ের জিনিস বলে মনে করে?’ এই মৃত্যুভয়কে চুচ্ছ করেই দেশ সেবায় ব্রতী হয়েছিলেন মাস্টারদা। ১৯৩০ সালের ২২ এপ্রিল, চট্টগ্রাম জালালাবাদ পাহাড়ে (Battle of Jalalabad Hill) মাস্টারদা সূর্যসেনের নেতৃত্বেই বিপ্লবী এবং ব্রিটিশ সৈন্যদের মধ্যে এক অসম যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিপ্লবীরা লড়াই করে, পরাজিত হলেও। পরাধীন ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসে এর গুরুত্ব অপরিসীম।

    ২২শে এপ্রিল ১৯৩০: জালালাবাদ যুদ্ধ

    ২২শে এপ্রিল ১৯৩০। জালালাবাদ যুদ্ধ (Battle of Jalalabad Hill) । মাস্টারদা পুরো দলবলসহ এসে পৌঁছলেন জালালাবাদ পাহাড়ের নিচে। সিদ্ধান্ত হল পাহাড়ে চড়ার। ওইদিন সবাই যখন ভোরবেলা মাস্টারদার নেতৃত্বে পাহাড়ে চড়েছেন সেইদিন বিকেল চারটের সময় চট্টগ্রাম নাজিরহাট শাখা রেল লাইনের ‘ঝরঝরিয়া বটতলা’ মসজিদের পাশে এসে থামল একটি ট্রেন। রেলগাড়ি থেকে নেমে এল ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রাইফেলস ও সুর্মা ভ্যালি লাইট ইনফ্যান্ট্রির সশস্ত্র সেনাবাহিনীর দল। তারা রওনা হল জালালাবাদ পাহাড়ের উদ্দেশ্যে। পাহাড়ের দুদিকে অন্য দুটো উঁচু পাহাড়ের মাথায় বসানো হল মেশিনগান।ইতিমধ্যে বিপ্লবী লোকনাথ বলের নির্দেশে আটভাগে বিপ্লবীদের বাহিনীকে পাহাড়ের চারপাশে সাজানো হল। এইদিকে পাহাড় বেয়ে উঠে আসছে ব্রিটিশ সেনার দল। নিঃশ্বাস চেপে তরুণ বিপ্লবী দল অপেক্ষা করছে নেতৃত্বের নির্দেশের। ওপর থেকে গাছের আড়ালে থেকে লড়াইয়ের যে সুবিধা আছে তার পুরোপুরি সদ্ব্যবহার করল ‘অনুশীলন এবং যুগান্তরের’ সমন্বয়ে গঠিত ইন্ডিয়ান রিপাবলিক আর্মি’র তরুণ যোদ্ধারা। পাহাড়ের কোলে একে একে লুটিয়ে পড়ল ব্রিটিশ সেনা।

    যদি প্রাণ থাকে, যদি বাঁচানো যায়

    কিন্তু অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর কাছে বেশিক্ষণ মনের জোরে লড়াই চালাতে পারলেন না বিপ্লবীরা। সেনার গুলিতে প্রাণ হারালেন লোকনাথ বলের অনুজ হরিগোপাল বল ওরফে টেগরা। দুদিকের পাহাড় থেকে বৃষ্টিধারার মতো মেশিনগানের গুলি ছুটে আসছে। একে একে মৃত্যুবরণ করলেন ১২ জন বিপ্লবী হরিগোপাল বল অন্য নাম টেগরা, প্রভাস বল, নরেশ রায়, ত্রিপুরা সেন, বিটু ভট্টাচার্য, মতি কানুনগো, অশোক দত্ত, নির্মল লালা,  জিতেন দাশগুপ্ত, মধুসূদন দত্ত, পুলিন চন্দ্র ঘোষ ও অর্ধেন্দু দস্তিদার। একটা একটা করে দেহ আসে আর মাস্টারদা বুকের ওপর কান রেখে বসে থাকেন কিছুক্ষণ, যদি হৃদপিণ্ডের স্পন্দন শোনা যায়! যদি প্রাণ থাকে, যদি বাঁচানো যায়। ধীরে ধীরে রাতের অন্ধকারে বিপ্লবীদের শক্তি বুঝতে না পেরে সাময়িক যুদ্ধ বিরতি দেয় সেনা। সেই সুযোগেই আত্মগোপনের চেষ্টা করেন সূর্য সেন-সহ অন্যান্য বিপ্লবীরা।

    চট্টগ্রামে চারদিনের স্বাধীনতা

    ২২-শে এপ্রিল রাত্রে জালালাবাদ পাহাড় (Battle of Jalalabad Hill) থেকে নেমে আসার পরে আবার চলা শুরু হল। এদিকে ক্ষিদে-তেষ্টায় প্রাণ ওষ্ঠাগত তবু চলতেই হবে। কিছুতেই ধরা পড়া চলবে না। শত্রুপক্ষ জেনে গেছে বিপ্লবীদের আশ্রয়। জালালাবাদ পাহাড় থেকে দূরে, আরও দূরে সরে যেতেই হবে। ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল, মধ্যরাতে সহ বিপ্লবীদের নিয়ে চট্টগ্রামের অস্ত্রাগার লুঠ করেছিলেন মাস্টার দা। প্রথমে টেলিফোন ও টেলিগ্রাম ধ্বংস করা, ইউরোপীয়ান ক্লাব আক্রমণ, চট্টগ্রামের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া। ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম শহরের নিয়ন্ত্রণ বিপ্লবী বাহিনীর কাছে চলে যাওয়ার পর চার দিন চট্টগ্রাম শহর স্বাধীন ছিল। ১৯৩০ সালের ২২ এপ্রিল সংঘটিত ঐতিহাসিক জালালাবাদ যুদ্ধের পর ব্রিটিশ শাসকেরা আবার চট্টগ্রাম শহরের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়। এরপরেও তিন বছর গোপনে আন্দোলন চালিয়ে যান মাস্টার-দা।

    সূর্যকুমার সেন থেকে ‘মাস্টারদা’

    বিপ্লবী সূর্য সেনের আসল নাম সূর্যকুমার সেন (Masterda Surya Sen)। ডাকনাম কালু। জন্মেছেন ২২ মার্চ, ১৮৯৪। তদানীন্তন চট্টগ্রামের রাউজান থানার নোয়াপাড়ায় বাস ছিল তাঁদের। মা শশীবালা সেন এবং বাবা রাজমণি সেন। দুই পুত্র ও চার কন্যা রেখে তাঁদের অকালপ্রয়াণের পর কাকা গৌরমণি সেনের কাছে বড় হন সূর্য সেন। পড়াশোনা দয়াময়ী উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়, নোয়াপাড়া উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়, নন্দনকাননের ন্যাশনাল হাইস্কুল হয়ে চট্টগ্রাম কলেজ। কিন্তু তৃতীয়বর্ষের কোনও এক সাময়িক পরীক্ষায় ভুলক্রমে টেবিলে পাঠ্যবই রাখার কারণে কলেজ থেকে বহিষ্কৃত হলে পড়তে আসেন বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে। সেখান থেকে বিএ পাশ করে চট্টগ্রামে ফিরে সেই ন্যাশনাল হাইস্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন। অসহযোগ আন্দোলনের (১৯২০-২২) সময় স্কুলটি বন্ধ হয়ে গেলে দেওয়ানবাজারে অধুনালুপ্ত উমাতারা উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে গণিত শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। এ সময় থেকেই বিপ্লবীদলের সঙ্গে তাঁর সখ্য গভীরতর হয় এবং হয়ে ওঠেন বিপ্লবীদের ‘মাস্টারদা’।

    মরদেহ দেওয়া হয়নি পরিবারকে

    ১৯৩৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি এক বিশ্বাসঘাতকের চক্রান্তে ক্ষীরোদপ্রভা বিশ্বাসের বাড়ি থেকে গ্রেফতার হন সূর্য সেন। জেলে মাস্টার দার সঙ্গী ছিল গীতা, মহাভারত ও রবীন্দ্র-রচনা। বন্দি দশায় ভোরে উঠে স্তোত্র পাঠ করতেন মাস্টার দা। ১৯৩৩ সালে বিশেষ আদালতে বিচার হয় সূর্য সেনের। ১৪ আগস্ট সূর্যসেনকে ফাঁসির নির্দেশ দেয় ব্রিটিশ সরকার। ফাঁসির আগে মাস্টারদা ওপর নির্মম অত্যাচার করে ব্রিটিশ পুলিশ। নৃশংসভাবে পিটিয়ে হাতুড়ি দিয়ে সূর্য সেনের দাঁতগুলি ভাঙে, নখগুলি থেঁতো করে উপড়ে ফেলে, গোটা শরীরের সমস্ত হাড়পাঁজরা টুকরো টুকরো করে। অত্যাচারের চোটে চৈতন্য হারান সূর্য সেন। সেই অবস্থাতেই ১৯৩৪ সালের ১২ জানুয়ারি ফাঁসি দেওয়া হয় সূর্য সেনকে। এমনকি সরকারিভাবে মৃত্যুঘোষণার পরে সূর্য সেনের মরদেহ পরিবারের হাতে তুলে দিয়ে সৎকারের ব্যবস্থাও করা হয়নি। বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরের মধ্যে কোনও জায়গায় লোহার টুকরো বেঁধে তাঁর দেহ ডুবিয়ে দেয় ব্রিটিশ পুলিশ।

     

     

     

     

     

  • India BrahMos Missile: ব্রহ্মোসের গর্জনে কাঁপবে চিন! ফিলিপিন্সের পর ভিয়েতনামের সঙ্গে ৭০০ মিলিয়ন ডলারের ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তির পথে ভারত

    India BrahMos Missile: ব্রহ্মোসের গর্জনে কাঁপবে চিন! ফিলিপিন্সের পর ভিয়েতনামের সঙ্গে ৭০০ মিলিয়ন ডলারের ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তির পথে ভারত

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে দাপট দেখাচ্ছে ভারত। আমেরিকা-রাশিয়ার মতো এবার প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানির খেলায় ময়দানে নেমে পড়েছে ভারতও। ব্রহ্মোস সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র (India BrahMos Missile) রফতানিতে ভারতের পরবর্তী গন্তব্য হতে চলেছে ভিয়েতনাম। ভারত ও ভিয়েতনামের মধ্যে প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সূত্র অনুযায়ী, এই চুক্তি কয়েক মাসের মধ্যেই স্বাক্ষরিত হতে পারে। ফিলিপিন্সের মতোই ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের উপকূলীয় ব্যাটারি সিস্টেম ভারত থেকে সংগ্রহ করতে চায় ভিয়েতনাম।

    চিনকে টক্কর দিতেই ব্রহ্মস

    ব্রহ্মোসের (India BrahMos Missile) ২৯০ কিলোমিটার পাল্লার নিখুঁত আঘাত হানার ক্ষমতা ভিয়েতনামকে দক্ষিণ চিন সাগরে তার সামুদ্রিক সীমানা সুরক্ষিত করতে সহায়তা করবে। এতে করে চিনা যুদ্ধজাহাজের হুমকির মোকাবিলায় ভিয়েতনাম আরও প্রস্তুত থাকবে, বলে অনুমান বিশেষজ্ঞদের। যদি ভারত-ভিয়েতনাম ব্রহ্মস চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, তাহলে ফিলিপিন্সের পর ভিয়েতনাম হবে দ্বিতীয় দেশ, যারা তাদের নৌবাহিনীতে ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র অন্তর্ভুক্ত করবে। প্রসঙ্গত, ভারত ২০২২ সালে ফিলিপিন্সের সঙ্গে ৩৭৫ মিলিয়ন ডলারের একটি ব্রহ্মোস চুক্তি করেছিল, যা ছিল এই ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম আন্তর্জাতিক বিক্রি। ভিয়েতনামের এই সম্ভাব্য চুক্তি ইঙ্গিত দেয় যে, চিনের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধে জড়িত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে ব্রহ্মোসের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। ইতিমধ্যেই ব্রহ্মোস নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গেও আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শুধু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াই নয়, মধ্য এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশও ব্রহ্মোস সংগ্রহে আগ্রহ দেখিয়েছে।

    ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের বিশেষত্ব কী?

    ব্রহ্মোস (India BrahMos Missile) ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ২৯০ কিলোমিটার এবং এটি শব্দের গতির চেয়ে আড়াই গুণ বেশি গতিতে উড়তে পারে। এটি বিশ্বের দ্রুততম সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রগুলির মধ্যে একটি। এটি যৌথভাবে রাশিয়ার ডিআরডিও এবং এনপিওএম দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। সম্প্রতি, ভারতীয় বিমান বাহিনী সুখোই বিমান থেকে ৪০০ কিলোমিটার পাল্লার ব্রহ্মোস সফলভাবে পরীক্ষা করেছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর তিনটি শাখাই ব্রহ্মোস ব্যবহার করে। ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র তার গতি ও নির্ভুল আক্রমণের জন্য সারা বিশ্বে পরিচিত। ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র ভারতীয় প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে দীর্ঘ দিন ধরে। পদাতিক সেনা তো বটেই, বায়ুসেনা এবং নৌবাহিনীও এই ক্ষেপণাস্ত্রে ভরসা রেখে আসছে।

    আরও উন্নত ব্রহ্মোস

    ২০১৬ সালে ভারত মিসাইল টেকনোলজি কন্ট্রোল রেজিম (MTCR)-এর সদস্য হওয়ার পর, ব্রহ্মোসের পাল্লা ৩০০ কিমির বেশি বাড়ানোর পথ খুলে যায়। আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী, ৩০০ কিমির বেশি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা ছিল। ফলে প্রথমে ভারত ও রাশিয়ার যৌথভাবে তৈরি ব্রহ্মোসের পাল্লা সীমিত ছিল ২৯০ কিমি পর্যন্ত। বর্তমানে ভারত এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ৪০০ থেকে ৬০০ কিমি পর্যন্ত বাড়ানোর কাজ করছে। সম্প্রতি ভারতীয় বায়ুসেনা একটি সু-৩০ যুদ্ধবিমান থেকে ৪০০ কিমি পাল্লার ব্রহ্মোসের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে।

    প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানিতে এগোচ্ছে ভারত

    মেক-ইন-ইন্ডিয়া প্রকল্পের আওতায় বেড়েছে ভারতের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানি। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছেন, ‘চলতি বছরে ১.৬০ লক্ষ কোটি টাকা প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরি করা হবে। আমাদের লক্ষ্য ২০২৯ সাল পর্যন্ত ৩ লক্ষ কোটি টাকা প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরি করবে ভারত।’ একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৪ সালে ভারতের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির পরিমাণ ছিল ৪০ হাজার কোটি টাকা মূল্যের। যা চলতি বছরে এসে ঠেকেছে ১.২৭ লক্ষ কোটি টাকায়। প্রসঙ্গত, ফিলিপিন্সকে ব্রহ্মোস পাঠিয়েই ক্ষান্ত হয়নি ভারত। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনামের সঙ্গে ব্রহ্মোস-চুক্তি সাক্ষর করতে চলেছে নয়াদিল্লি।

    চিন্তায় চিন

    ব্রহ্মোসের (India BrahMos Missile) প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক চাহিদা বৃদ্ধিতে চিন্তিত চিন। বিশেষ করে দক্ষিণ চিন সাগরের ওপর তার দাবিকে ঘিরে ফিলিপিন্স, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান ও মালয়েশিয়ার সঙ্গে চিনের সম্পর্ক উত্তপ্ত। এই অঞ্চলের দেশগুলোর জন্য ব্রহ্মোস এক প্রতিরক্ষা কৌশলের মূল হাতিয়ার হয়ে উঠছে। দক্ষিণ চিন সাগরে আধিপত্য থাকবে কার, এই নিয়ে উত্তর-পূর্ব দেশগুলির মধ্যে বিরোধ নতুন নয়। চিনের ‘দাদাগিরি’ আটকাতে প্রায়ই ফিলিপিন্স, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া লড়াই করে। দক্ষিণ চিন সাগরে একাধিপত্য বিস্তার করতে সব সময়ই আগ্রাসী ভূমিকা নেয় বেজিং। এই সাগরে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়তে নারাজ তারা। ফিলিপিন্স-সহ অন্য দেশগুলিও যে পিছু হটতে নারাজ তা বার বার বুঝিয়ে দিয়েছে। তাই এই সব দেশগুলির সঙ্গে সংঘাত লেগেই রয়েছে চিনের। সেই সংঘাতেই এবার জড়িয়ে পড়ল ভারতও। এ দেশে তৈরি দূরপাল্লার ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র ইতিমধ্যেই ফিলিপিন্সে পৌঁছেছে। এবার পালা ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়ার।

     

     

     

  • Modi-Vance Meeting: ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তির জন্য আলোচনা এগোচ্ছে, ভান্সের সন্তানদের সঙ্গে মজা মোদির

    Modi-Vance Meeting: ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তির জন্য আলোচনা এগোচ্ছে, ভান্সের সন্তানদের সঙ্গে মজা মোদির

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারত-আমেরিকা (Modi-Vance Meeting) দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি দ্রুত স্বাক্ষর করতে চায় দুই দেশ। চিনের সঙ্গে আমেরিকার বানিজ্য-যুদ্ধের আবহেই ৪ দিনের ভারত সফরে এসেছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স। সোমবার সন্ধ্যায় তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করেন, তাঁদের মধ্যে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকও হয়। এই বৈঠকে ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে সদর্থক আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।

    বাণিজ্য-চুক্তির দিকে তাকিয়ে দিল্লি-ওয়াশিংটন

    ভারতের ওপর চাপানো অতিরিক্ত শুল্কের বোঝা আপাতত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রেখেছেন ট্রাম্প। দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির (Modi-Vance Meeting) অগ্রগতির জন্যই তাঁর এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। এই চুক্তির ফলে উভয় দেশই উপকৃত হতে পারে। এদিন প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে বৈঠকে ভান্স দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে জোর দেন। হোয়াইট হাউসের তরফে জানানো হয়েছে যে, ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী। ভারতের সঙ্গে এই বাণিজ্য চুক্তিটি হলে তা বিশ্বের বৃহত্তম পণ্য প্রস্তুতকারক চিনের সঙ্গে তাঁদের বাণিজ্য যুদ্ধের ধাক্কা কিছুটা হলেও কমাতে সাহায্য করবে আমেরিকাকে। বিদেশমন্ত্রক সূত্রে খবর, জুলাই মাসের শেষেই এই বাণিজ্য চুক্তিটি সম্পন্ন করার ব্যাপারে আশাবাদী দিল্লি। সূত্রের খবর, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নয়াদিল্লির এক কর্তা জানিয়েছেন যে, প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং জেডি ভান্সের মধ্যে বৈঠকের পরপরই, এই সপ্তাহে নির্দিষ্ট একটি বাণিজ্য চুক্তি সম্পর্কিত আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। অপরদিকে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন শীঘ্রই আইএমএফ বৈঠকের জন্য ওয়াশিংটনে যাবেন। সেখানে তিনি ভারত-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করার জন্য ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা করবেন বলেও জানা গিয়েছে।

    ভারতীয় পোশাকে ভান্সের সন্তানরা

    সোমবার সকালেই ভারতে পৌঁছন ভান্স। সকাল ১০টার কিছু আগে দিল্লির পালাম বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে তাঁর বিমান। ভান্সের সঙ্গে ছিলেন তাঁর ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্ত্রী উষা ভান্স এবং তিন শিশুসন্তান— ইওয়ান, বিবেক ও মিরাবেল। তিন সন্তানেরই পরনে ছিল ভারতীয় পোশাক। দুই পুত্র পরেছিল কুর্তা-পাঞ্জাবি। কন্যার পরনে ছিল চোলি-লেহঙ্গা। পালাম বিমানঘাঁটিতে ভান্সকে স্বাগত জানান কেন্দ্রীয় রেল এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। বিমানঘাঁটিতে ভান্সকে ‘গার্ড অফ অনার’ দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী মোদির ৭ লোক কল্যাণ মার্গের সরকারি বাসভবনে সৌজন্য সাক্ষাতের সময়ও স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে গিয়েছিলেন ভান্স। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সময়েও ভান্সের তিন সন্তানের পরনে ছিল ভারতীয় পোশাক। ইওয়ানের পরনে কালো বন্ধগলা, বিবেক সেজেছিল কুর্তা এবং জহর কোটে। হালকা রঙের চুড়িদার পরেছিল ছোট্ট মিরাবেল।

    প্রধানমন্ত্রী না ‘দাদু’ মোদি

    সোমবার রাতে সপরিবারে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে যান ভান্স। গাড়ি থেকে নেমেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দিব্যি ভাব হয়ে যায় ভান্সের (Modi-Vance Meeting) তিন সন্তানের। ভান্স পরিবারকে নিজের বাসভবন ঘুরিয়ে দেখান প্রধানমন্ত্রী। তাঁর বাড়িতে গিয়ে রীতিমতো হুটোপাটিতে মাতে তিন খুদে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর কোলে চড়তে দেখা গিয়েছে ইওয়ান এবং বিবেককে। তখন তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদি নন, ‘দাদু’ মোদি। ভান্সের তিন সন্তানকে ময়ূরের পালক উপহার দেন মোদি। ভান্স মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের তরফে শুভেচ্ছাবার্তা দেন মোদিকে। মোদিও ‘বন্ধু’ ট্রাম্পকে ভান্সের মাধ্যমে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠান। বৈঠকের শেষে ভান্স এবং তাঁর পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ছিল বিশেষ নৈশভোজের আসর।

    জ্বালানি, প্রতিরক্ষা নানা ক্ষেত্রে সাহায্যের বার্তা

    বাণিজ্যচুক্তির পাশাপাশি এদিন জ্বালানি, প্রতিরক্ষা, কৌশলগত প্রযুক্তি এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ভারত মার্কিন সহযোগিতা নিয়ে মোদি ও ভান্সের মধ্যে আলোচনা হয়। নানা ক্ষেত্রে ভারত-আমেরিকা সম্পর্কের দৃঢ়তা বাড়ানো নিয়ে কথা হয়েছে তাঁদের। চলতি বছরের শেষের দিকে ভারত সফরে আসতে পারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও, এমন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে মোদি-ভান্স বৈঠকের পর। মঙ্গলবার দিল্লি থেকে জয়পুর যাবেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট। আমের ফোর্ট-সহ নানা স্থাপত্য ঘুরে দেখবেন তিনি। তারপর রাজস্থান ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে বক্তৃতাও দেবেন।

    দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৫০,০০০ কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য

    কিছুদিন আগে ভারতীয় পণ্যের উপর ২৬ শতাংশ পারস্পরিক শুল্কের কথা ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। তবে আপাতত ৯০ দিনের জন্য সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত রেখেছেন তিনি। দুই দেশের স্বার্থে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তিতে অনেকটাই এগিয়েছে ভারত ও আমেরিকা। ২০৩০ সালে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৫০,০০০ কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে চুক্তি করতে চায় নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটন। এখন যা প্রায় ১৯,১০০ কোটি ডলার। অতিরিক্ত বাণিজ্যসচিব এবং এই আলোচনায় ভারতের প্রধান প্রতিনিধি রাজেশ আগরওয়াল সম্প্রতি জানিয়েছেন, মে-র শেষে মুখোমুখি বৈঠক শুরু হবে বলে আশা করছেন তাঁরা। এখনও পর্যন্ত সময়সীমা মেনেই সব কিছু এগোচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পারস্পরিক শুল্ক নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথে এগোনো সম্ভব বলেও মনে করছে কূটনৈতিক মহল।

     

     

     

     

     

     

  • Manipur Violence: কুকি নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে বিদ্রোহীদের গোপন বৈঠক! মণিপুরে ভাইরাল নোটিশ ঘিরে ফের উত্তেজনা

    Manipur Violence: কুকি নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে বিদ্রোহীদের গোপন বৈঠক! মণিপুরে ভাইরাল নোটিশ ঘিরে ফের উত্তেজনা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আরও এক বার উত্তপ্ত হয়ে উঠল মণিপুর (Manipur Violence)। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি বিতর্কিত নোটিশ নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ওই নোটিশে কুকি সম্প্রদায়ভুক্ত কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের এক অজ্ঞাতনামা বৈঠকে হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেখানে অংশ নেবে কুকি বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলিও। এই নোটিশটি কুকি-প্রধান এলাকার এক স্থানীয় গ্রাম উন্নয়ন কমিটির পক্ষ থেকে জারি করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। তাতে বলা হয়েছে, সামসাও নামে পরিচিত একটি কুকি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক আয়োজিত হবে। এই সংগঠনটিকে সাধারণত কুকি ন্যাশনাল ফ্রন্ট (KNF)-এর গুপ্ত বাহিনী হিসেবে ধরা হয়। গ্রামপ্রধানরা যেন নিশ্চিত করেন, এই বৈঠকে ইন্ডিয়ান রিজার্ভ ব্যাটালিয়ন (IRB), মণিপুর রাইফেলস এবং মণিপুর পুলিশের কুকি সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন।

    কেন এই নোটিশ ঘিরে আতঙ্ক

    ২০২৩ সাল থেকেই কুকি ও মেইতেইদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে অশান্ত মণিপুর (Manipur Violence)। রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পর পরিস্থিতি খানিক নিয়ন্ত্রণে এলেও এখনও বিক্ষিপ্ত অশান্তি চলছে রাজ্য জুড়ে। চলতি মাসের শুরুতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ‘অবাধ চলাচল’ নির্দেশের প্রতিবাদে মণিপুরের কুকি জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন‍্ধের ডাক দেওয়া হয়। গত ১৩ মার্চ বন্‌ধ প্রত্যাহার করা হলেও কুকিরা জানিয়ে দিয়েছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশ তাঁরা মানবেন না৷ কুকিদের দাবিদাওয়া পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা ‘অবাধ চলাচল’-এর বিরোধিতা করে যাবেন। এমন এক সংবেদনশীল সময়ে, এই ধরনের নোটিশ ভাইরাল হওয়ায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে। প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থা এবং নাগরিক সমাজের মধ্যে তৈরি হয়েছে চাপা আতঙ্ক।

    নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের আশঙ্কা

    নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নোটিশ যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে এটি এক ভয়ঙ্কর ইঙ্গিত বহন করে। এটি দেখায় যে রাজ্য সরকারের সেবায় নিযুক্ত কর্মীরা হয়তো জোর করে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংযুক্ত হতে বাধ্য হচ্ছেন। এই ঘটনা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরপেক্ষতায় বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক বলেন, “জাতিগত ভিত্তিতে যদি বাহিনীর উপর প্রভাব খাটানোর চেষ্টা হয়, তবে তা সরকারি কাঠামোর উপরেই আঘাত। এটি বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।” সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে যদি কোনও ধরনের ‘সমন্বয়’ হয়, তবে তা রাজ্যের স্থিতিশীলতা ও শান্তি ফেরানোর প্রচেষ্টায় বড়সড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এই বিষয়ে এখনো পর্যন্ত মণিপুর সরকার কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। তবে সূত্রের খবর, গোটা বিষয়টি নিয়ে গোয়েন্দা ব্যুরো (IB) এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কড়া নজর রাখছে।

  • PM Modi: দু’দিনের সফরে সৌদি আরবে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি! কী কী বিষয়ে আলোচনার সম্ভাবনা?

    PM Modi: দু’দিনের সফরে সৌদি আরবে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি! কী কী বিষয়ে আলোচনার সম্ভাবনা?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দু’দিনের সফরে সৌদি আরবে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। সৌদির প্রধানমন্ত্রী তথা সে দেশের যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সলমনের আমন্ত্রণে আগামী ২২-২৩ এপ্রিল সেখানে যাচ্ছেন তিনি। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই নিয়ে তৃতীয় বার সৌদিতে যাচ্ছেন মোদি। মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান অস্থির ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে এই সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে ভারত ও সৌদি আরবের মধ্যে একাধিক সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হবে।

    দুই দেশের মধ্যে দৃঢ় সম্পর্ক

    বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, সৌদির যুবরাজ তথা প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে দু’দিনের সফরে সে দেশে যাচ্ছেন মোদি (PM Modi)। এর আগে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতে এসেছিলেন সৌদির যুবরাজ। ওই সময়েই ভারত এবং সৌদি আরবের কৌশলগত অংশীদারি পরিষদ (স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ কাউন্সিল)-এর প্রথম বৈঠক হয়েছিল। ওই বৈঠকের প্রায় দেড় বছর পরে প্রধানমন্ত্রী মোদির সৌদিযাত্রা এই সফরের গুরুত্বকে আরও বৃদ্ধি করেছে। রতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি জানিয়েছেন, “সৌদি আরব ভারতের এক কৌশলগত অংশীদারিত্ব। এই সফরের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও মজবুত হবে।”

    কী কী বিষয়ে আলোচনার সম্ভাবনা

    সৌদি আরবের ১০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের সামগ্রিক পরিস্থিতি, ইজরায়েল-হামাস সংঘাত এবং ইউক্রেন যুদ্ধ-সহ একাধিক আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যুতে মতবিনিময় করবেন দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্ব। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি চুক্তি স্বাক্ষর হতে চলেছে সবুজ হাইড্রোজেন (Green Hydrogen) খাতে। ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি জানান, “জ্বালানি সহযোগিতায় কৌশলগত মাত্রা যোগ করার চেষ্টা করা হবে।” সৌদি যুবরাজের ভারত সফরের সময় ঘোষিত ১০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ পরিকল্পনার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হবে। ইতিমধ্যেই উচ্চপর্যায়ের টাস্ক ফোর্স অন ইনভেস্টমেন্ট (HLTFI) গঠন করা হয়েছে, যার প্রথম বৈঠক হয়েছে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে। আলোচনায় থাকবে ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডর (IMEEC)-এর ভবিষ্যত পরিকল্পনাও। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সামরিক মহড়া এবং উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ বৃদ্ধির বিষয়েও রূপরেখা তৈরি হতে পারে। প্রতিরক্ষা খাতে যৌথ প্রকল্প, অস্ত্র ক্রয়ের সুযোগ এবং প্রশিক্ষণসহ আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

  • Rajnath Singh: ‘‘পাক অধিকৃত কাশ্মীরিরা শীঘ্রই চাইবেন ভারতের সঙ্গে যুক্ত হতে’’, বললেন রাজনাথ

    Rajnath Singh: ‘‘পাক অধিকৃত কাশ্মীরিরা শীঘ্রই চাইবেন ভারতের সঙ্গে যুক্ত হতে’’, বললেন রাজনাথ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের (Pak Occupied Kashmir) বাসিন্দারাই খুব শীঘ্র ভারতের সঙ্গে যুক্ত হতে চাইবে। মোদি সরকারের সাফল্যে ভারতে এখন ‘আচ্ছে দিন’। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং (Rajnath Singh) লখনউয়ে এক সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, “ভারতের অর্থনীতি এখন বিশ্বের মধ্যে দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনীতিগুলোর একটি। আগে বিশ্বে ভারতের পরিচয় ছিল দরিদ্র দেশ হিসেবে, কিন্তু আজ এই চিত্র বদলে গিয়েছে। ভারতের অর্থনীতি এখন বিশ্বে পঞ্চম স্থানে, যা এক সময় একাদশ স্থানে ছিল। আগামী দুই বছরের মধ্যে ভারত শীর্ষ তিন অর্থনীতির মধ্যে স্থান পাবে বলে আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলি দাবি করছে।”

    ভারতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা

    লখনউয়ের মহর্ষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সভায় রাজনাথ সিং (Rajnath Singh) বলেন, “১১ বছর আগে ভারতে মাত্র দুটি মোবাইল ফোন কারখানা ছিল, আর আজ তা বেড়ে হয়েছে ২৭০টি। এছাড়াও, ডিজিটাল লেনদেনে ভারত এখন বিশ্বে প্রথম স্থানে রয়েছে। লখনউ থেকেই এক সময় মুসলিম লিগ পাকিস্তান গঠনের দাবি তুলেছিল। আর আজ সময় এসেছে এখান থেকেই ভারতের সঙ্গে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সংযুক্তিকরণের দাবি তোলার। আমি বিশ্বাস করি, খুব শীঘ্রই পিওকে-র মানুষ নিজেরাই বলবে— ‘‘আমাদের ভারতেই যুক্ত করে দিন।’’

    জন সংলাপ কর্মসূচিতে রাজনাথ

    লখনউয়ের এই সভায় কেশব নগরে একটি সড়ক নির্মাণের দাবি উঠলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সংশ্লিষ্ট বিধায়ক ডঃ নীরজ বোরাকে নির্দেশ দেন সড়ক নির্মাণের ব্যবস্থা নিতে। এই অনুষ্ঠানে উপ-মুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক বলেন, “এক সময় ফৈজুল্লাগঞ্জ সংক্রামক রোগে ভোগা একটি এলাকা ছিল। সেখান থেকেই রাজ্য সরকার সংক্রামক রোগ বিরোধী অভিযান শুরু করেছিল। আজ আমরা বলতে পারি, এই রোগ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে।” এই জন সংলাপ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নগর সভাপতি আনন্দ দ্বিবেদী, এমএলসি মুকেশ শর্মা, রামচন্দ্র প্রধান, দিবাকর ত্রিপাঠী, পুষ্কর শুক্লা, ত্রিলোক অধিকারী, মিডিয়া ইনচার্জ প্রবীণ গার্গ, ঘনশ্যাম আগরওয়াল, শৈলেন্দ্র শর্মা অতল, মণ্ডল সভাপতি শৈলেন্দ্র মৌর্য, কাউন্সিলর রশ্মি সিং, প্রদীপ শুক্লা, প্রিয়াঙ্কা বাজপেয়ী, রামদাস কনৌজিয়া প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নগর সহ-সভাপতি ডঃ বিবেক সিং তোমর।

    প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরিতে আত্মনির্ভর

    প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরিতে ক্রমশ আত্মনির্ভর হয়ে উঠছে ভারত। শুধু আত্মনির্ভরই হচ্ছে না। বিদেশে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানিও বেড়েছে। আর কয়েক বছরের মধ্যে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানি বছরে ৫০ হাজার কোটি টাকার গণ্ডী পার করবে বলে আশাবাদী প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। ২০১৪ সালের পর থেকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানি বেড়েছে। বর্তমানে বছরে ২৪ হাজার কোটি টাকার প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানি করা হয়। তিনি আশাবাদী, ২০২৯-৩০ সালের মধ্যে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানি বেড়ে ৫০ হাজার কোটি টাকা হবে। প্রসঙ্গত, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ২৩ হাজার ৬২২ কোটি টাকার প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানি করেছে ভারত।

    পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের জমিতে সন্ত্রাসের আখড়া

    ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর (Rajnath Singh) সাফ কথা, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের (Pak Occupied Kashmir) জমি সন্ত্রাসবাদের ব্যবসা চালাতে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেখানে সন্ত্রাসের ট্রেনিং ক্যাম্প, সীমার কাছে লঞ্চ প্যাড যে রয়েছে তার খবর ভারত সরকারের কাছে রয়েছে। রাজনাথ সিং বলেন,’ জম্মু ও কাশ্মীর পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর ছাড়া অসম্পূর্ণ। ভারতের মাথার মুকুটমণি সেটি। আর তাছাড়াও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর পাকিস্তানের কাছে একটি বিদেশি এলাকা ছাড়া আর কিছুই নয়।’ উল্লেখ্য, পাক অধিকৃত কাশ্মীর জম্মু ও কাশ্মীরেরই অংশ, দেশ তো বটেই আন্তর্জাতিক মঞ্চে বারবার এ কথা জানিয়ে এসেছে ভারত। এই ইস্যুতে মামলাও চলছে আন্তর্জাতিক আদালতে। সম্প্রতি কাশ্মীরকে নিজেদের বলে দাবি করেছিলেন পাক সেনাপ্রধান।

    পাক অধিকৃত কাশ্মীর অধিবাসীদের দাবি

    কাশ্মীর নাকি পাকিস্তানের ‘জুগুলার ভেইন’ অর্থাৎ প্রধান শিরা! পাক সেনাপ্রধানের বিস্ফোরক মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কড়া জবাব দেয় নয়াদিল্লি। বিদেশমন্ত্রকের হুঁশিয়ারি, “বেআইনিভাবে দখল করে রাখা অধিকৃত কাশ্মীর আগে খালি করুন। বিদেশি সম্পত্তি কী করে আপনার দেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ হতে পারে?” “কোনও বিদেশি জিনিস কীভাবোজনাথের দাবি আপনার প্রধান শিরা বা ‘জুগুলার ভেইন’ হতে পারে? এটা ভারতের একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। আর কাশ্মীরে পাকিস্তানের একটাই কাজ, সেটা হল বেআইনিভাবে দখল করে থাকা অংশটা ফাঁকা করে দেওয়া। সেখানকার বাসিন্দারাও ভারতের সঙ্গে জুড়তে চায়। তাঁদের দাবি, এই অঞ্চলের মাটিকে ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে ভারতের বিরুদ্ধে ছায়াযুদ্ধ বা প্রক্সি ওয়ার চালাচ্ছে পাক সরকার। কিন্তু কাশ্মীর বাসীরা এই অঞ্চলের মাটিকে সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য পাকিস্তান সরকার ও সেনাকে ব্যবহার করতে দিতে চান না। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের কথায় এখানকার সাধারণ মানুষ খুব শীঘ্রই ভারতের সঙ্গে এক হতে চাইবে।

  • Smartphone’s Export: ২০১৪-এ ১৬৭তম স্থানে, ২০২৫ ভারতের শীর্ষ রফতানি পণ্য স্মার্টফোন! মোদি জমানার ১০ বছরে বিপুল সাফল্য

    Smartphone’s Export: ২০১৪-এ ১৬৭তম স্থানে, ২০২৫ ভারতের শীর্ষ রফতানি পণ্য স্মার্টফোন! মোদি জমানার ১০ বছরে বিপুল সাফল্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতের বাজারে তৈরি হওয়া মোবাইল (India’s Smartphone) এখন বিশ্ব বাজারে দাপট দেখাচ্ছে। তৈরি হল নতুন মাইলস্টোন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে ভারতে তৈরি মোবাইল বিশ্বের বাজারে ২ লক্ষ কোটি রফতানি (Smartphone’s Export) করা হয়েছে। এর ফলে ভারতের স্মার্টফোন রফতানি এক নজিরবিহীন উচ্চতায় পৌঁছেছে । এই সময়কালে, মোবাইল ফোন রফতানির মূল্য দাঁড়িয়েছে $১৮.৩১ বিলিয়ন (প্রায় ₹২ লক্ষ কোটি), যা ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দেশের সর্ববৃহৎ একক রফতানি পণ্যে পরিণত হয়েছে। আইসিইএ-র পক্ষ থেকে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ফলে ভারতে তৈরি মোবাইল শিল্প যে আগামীদিনে বিশ্বের বাজারে দাপট দেখাবে সেটা বলাই যায়।

    মেক ইন ইন্ডিয়া প্রকল্পের সাফল্য

    ভারতের বাণিজ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, হরমোনাইজড সিস্টেম কোড (HS code)-এর ভিত্তিতে স্মার্টফোন এখন দেশের সর্বাধিক রফতানি হওয়া পণ্য, যা অটোমোটিভ ডিজেল ফুয়েলকে (মূল্য $১৬.০৪ বিলিয়ন) পেছনে ফেলেছে। ২০২৪-এ একই সময়ে (এপ্রিল-জানুয়ারি) স্মার্টফোন ছিল চতুর্থ স্থানে। এই অভাবনীয় উত্থানকে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্প ও উৎপাদন-ভিত্তিক প্রেরণা (PLI) প্রকল্পের সাফল্য হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। ২০১৪ সালে যেখানে স্মার্টফোন রফতানি ছিল ১৬৭তম স্থানে, আজ তা উঠে এসেছে শীর্ষে। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তারপরই এই পরিবর্তন। ১০ বছরের মধ্যেই সাফল্যের শীর্ষে ভারতের স্মার্টফেন।

    যুক্তরাষ্ট্রে ২০৮% বেশি রফতানি

    আইসিইএ-র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এই শিল্পে যে হারে ভারত উন্নতি করছে তাতে এই শিল্প আগামীদিনে আরও উন্নতি করবে। চলতি বছরে এই শিল্পে ৫,১০,০০০ কোটি টাকার টার্গেট রাখা হয়েছে। এরফলে বিশ্বের বাজারে মোবাইল শিল্পে ভারত যে শুধু আত্মনির্ভর হয়েছে তাই নয়, ভারতে তৈরি মোবাইল (India’s Smartphone) বিশ্বের বাজারে যে কতটা স্থান নিয়েছে সেটাও সামনে এসে গিয়েছে। ২০২৫ অর্থবর্ষের এপ্রিল-জানুয়ারি সময়কালে স্মার্টফোন রফতানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৫৪.৭ শতাংশ, যেখানে গত অর্থবছরে একই সময়ে তা ছিল $১১.৮৩ বিলিয়ন। বিশেষ করে অ্যাপল-এর আইফোন-এর নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রে রফতানির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে ২০৮%। ভারতের স্মার্টফোন রফতানির $৬.৬ বিলিয়ন গেছে যুক্তরাষ্ট্রে।

    মহিলা কর্মসংস্থানে নতুন দিগন্ত

    ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, ২০২৫ অর্থবর্ষে ২ লক্ষ কোটি মূল্যের রফতানি (Smartphone’s Export) হয়েছে স্মার্টফোন খাতে, যার মধ্যে আইফোন-এর অংশ ১.৫ লক্ষ কোটি। তিনি বলেন, “এই সাফল্য ১০ বছরের সরকার ও শিল্পক্ষেত্রের যৌথ প্রচেষ্টার ফল।” এই খাতে লক্ষ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে নারীদের জন্য, এবং ভারতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোগী সংস্থাগুলির জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। মন্ত্রী আরও জানান, গত দশ বছরে ইলেকট্রনিক্স উৎপাদন পাঁচ গুণ এবং রফতানি ছয় গুণ বেড়েছে। বর্তমানে উৎপাদন বৃদ্ধির হার ১৭% রফতানির ক্ষেত্রে তা ২০%। দেশের ৪০০-রও বেশি উৎপাদন ইউনিট এখন বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স কম্পোনেন্ট তৈরি করছে। সেই সঙ্গে, সরকার নতুন ইলেকট্রনিক্স কম্পোনেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং স্কিম-এর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে চলেছে। কেন্দ্র ইতিমধ্যেই ২২,৯১৯ কোটি টাকা অনুমোদন দিয়েছে এই প্রকল্পে। এর আওতায় কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স, মেডিকেল ইলেকট্রনিক্স, পাওয়ার ইলেকট্রনিক্স, অটোমোবাইল ও অন্যান্য সেক্টরে ব্যবহৃত অ্যাকটিভ ও প্যাসিভ কম্পোনেন্ট তৈরির ওপর জোর দেওয়া হবে।

    আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ

    বিগত বছর থেকে এই রফতানির পরিমান অনেকটাই বেশি তা এবারের এই হার থেকেই স্পষ্ট। ভারতের তৈরি মোবাইল ফোন যে গোটা বিশ্ব মেনে নিয়েছে তা এখান থেকেই স্পষ্ট। তবে এই সফর এখানেই থেমে থাকবে না। এই শিল্পে আরও সুযোগ রয়েছে। যেভাবে ভারতের (India’s Smartphone) বাজারে মোবাইলের যন্ত্রাংশ তৈরিতে জোর দেওয়া হয়েছে সেখান থেকে আগামীদিনে এই পরিস্থিতি আরও উন্নতি ঘটবে। কেন্দ্রীয় সরকার এবিষয়ে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ভারতে তৈরি মোবাইল যাতে বিশ্বের দরবারে আরও ব্যবসা করবে সেটাই এখন প্রধান টার্গেট। মনে করা হচ্ছে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ভারত মোবাইল ফোন তৈরিতে অনেক বেশি আত্মনির্ভর হয়ে যাবে। সেখান থেকে ভারতে এই শিল্প অনেক বেশি কর্মসংস্থানও তৈরি করবে। বিশ্বখ্যাত সংস্থা মার্ক ও লিন্ডে ইতিমধ্যেই ভারতে তাদের উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করছে। সরকার জানিয়েছে, দেশে ক্যাপিটাল ইকুইপমেন্ট তৈরিতে পূর্ণ সহযোগিতা করা হবে। এই অসাধারণ সাফল্য ভারতের ইলেকট্রনিক্স উৎপাদন ক্ষমতা ও রফতানি সক্ষমতার এক যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত—এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

    চিন নির্ভরতা অতীত

    এতদিন পর্যন্ত ভারত মোবাইলের বিষয়ে প্রধানত চিনের উপর নির্ভর করে থাকত। সেখান থেকে আসা মোবাইল ফোন নিয়ে নানা ধরনের সমস্যা এবং বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। তবে সেখান থেকে ধীরে ধীরে সরে এসেছে ভারত। এখন সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে মোবাইল ফোন বানিয়ে ভারত নিজের আলাদা পরিচিতি তৈরি করেছে। এই রফতানির (Smartphone’s Export) হিসেব তার বিরাট প্রমাণ।

     

     

LinkedIn
Share