শ্রী রামকৃষ্ণ মাস্টারের প্রতি— “এখানে অপর লোক কেউ নাই। সেদিন হরিশ কাছে ছিল। দেখলাম খোলটি ছেড়ে সচিদানন্দ বাহিরে এলো, এসে বললে ‘আমি যুগে যুগে অবতার।’ তখন ভাবলাম বুঝি মনের খেয়ালে ওইসব কথা বলছি। তারপর চুপ করে থেকে দেখলাম— তখন দেখি আপনি বলছেন, ‘শক্তির আরাধনা চৈতন্য করেছিল।’”
ভক্তেরা সকলে অবাক হইয়া শুনিতে চান। কেউ কেউ ভাবিতে চান— সচিদানন্দ ভগবান কি শ্রী রামকৃষ্ণের রূপ ধারণ করিয়া আমাদের কাছে বসিয়া আছেন? ভগবান কি আবার অবতীর্ণ হইয়াছেন?
শ্রী রামকৃষ্ণ কথা কহিতেছেন, মাস্টারকে সম্বোধন করিয়া আবার বলিতেছেন, “দেখলাম পূর্ণ আবির্ভাব, তবে সত্য, গুণের ঐশ্বর্য।”
ভক্তেরা সকলে অবাক হয়ে এই সকল কথা শুনিতেছেন।
যোগমায়া, আদ্যাশক্তি ও অবতারলীলা
শ্রী রামকৃষ্ণ ‘মাস্টার’-এর প্রতি- “এখন মাকে বলছিলাম, আর বকতে পারি না। আর বলছিলাম, মা যেন একবার ছুঁয়ে দেন, তাহলে লোকের চৈতন্য হয়।
যোগমায়ার এমনই মহিমা। তিনি ভেলকি লাগিয়ে দিতে পারেন। বৃন্দাবনলীলা—যোগমায়া ভেলকি লাগিয়ে দিলেন। তারই বলে সুবল, কৃষ্ণের সঙ্গে শ্রীমতির মিলন ঘটিয়ে দিচ্ছিলেন।
যোগমায়া, যিনি আদ্যাশক্তি, তাঁর একটি আকর্ষণশক্তি আছে। আমি সেই শক্তিরই আরোপ করেছিলাম।”
— “আচ্ছা, যারা আসে, তাদের কিছু কিছু হচ্ছে।”
মাস্টার: “আজ্ঞে, হ্যাঁ হচ্ছে বৈকি।”
শ্রীরামকৃষ্ণ: “কেমন করে জানলে?”
মাস্টার সহাস্যে: “সবাই বলে—তার কাছে যারা যায়, তারা আর ফেরে না।”
শ্রীরামকৃষ্ণ সহাস্যে:
“একটা কোলা ব্যাঙ হেলে সাপের পাল্লায় পড়েছিল। সাপ ওটাকে গিলতেও পারছে না, ছাড়তেও পারছে না। আর কোলা ব্যাঙটা যন্ত্রণায় ক্রমাগত ডাকছে। ঢোঁড়া সাপটারও যন্ত্রণা। কিন্তু গোখরো সাপের পাল্লায় যদি পড়ত, তাহলে দু’এক ডাকেই শান্তি হয়ে যেত।”
— সকলের হাস্য।
ছোকরা ভক্তদের প্রতি:
“তোরা ‘ত্রৈলোক’-এর সেই বইখানা পড়িস—ভক্তি-চৈতন্যচন্দ্রিকা।
তার কাছ থেকে একখানা চেয়ে নিস। বেশ চৈতন্যদেবের কথা আছে।”
Leave a Reply