Ramakrishna 412: যদি কেউ গঙ্গার কাছে গিয়ে গঙ্গাজল স্পর্শ করে, সে বলে—গঙ্গা দর্শন, স্পর্শ করে এলুম

https://www.madhyom.com/ramkrishna-kathamrita-by-mahendra-gupta-405th-copy

শ্রীরামকৃষ্ণ (গিরিশের প্রতি): “তুমি একবার নরেন্দ্রের সঙ্গে বিচার করে দেখো, সে কি বলে।”

গিরিশ: “স্বাচ্ছন্দ্যে—নরেন্দ্র বলে, ঈশ্বর অনন্ত। যা কিছু আমরা দেখি, শুনি—জিনিসটি কি, ব্যক্তিটি কি—সবই তাঁর অংশ। এপর্যন্ত আমাদের বলবার জো নাই।
অনন্ত আকাশ, তার আবার অংশ কী? অংশ হয় না।”

শ্রীরামকৃষ্ণ: “ঈশ্বর অনন্ত, হোন আর যত বড়—তিনি ইচ্ছা করলে তাঁর ভিতরের সারবস্তু মানুষের ভিতর দিয়ে আসতে পারেন, ও আসেন। তিনি অবতার হয়ে থাকেন। এটি উপমা দিয়ে বুঝানো যায় না, অনুভব হওয়া চাই, প্রত্যক্ষ হওয়া চাই।
উপমার দ্বারা কতটা আভাস পাওয়া যায়। গরুর মধ্যে সিমটা যদি ছোঁয়াও, গরুকে ছোঁয়া হলো। পা-টা বা লেজটা ছুঁলেও গরুটাকে ছোঁয়া হলো।
কিন্তু আমাদের পক্ষে গরুর ভিতরের সারপদার্থ হচ্ছে দুধ। সেই দুধ বাটিতে দিয়ে আসে।
সেইরূপ, প্রেমেও ভক্ত শেখাবার জন্য ঈশ্বর মানুষ-দেহ ধারণ করে, সময়ে সময়ে অবতীর্ণ হন।”

গিরিশ: “নরেন্দ্র বলে, তাঁকে কি সব ধারণা করা যায়? তিনি তো অনন্ত।”

শ্রীরামকৃষ্ণ (গিরিশের প্রতি): “ঈশ্বরের সব ধারণা কে করতে পারে? তাঁর বড় ভাবটাও পারে না, আবার ছোট ভাবটাও পারে না।
আর সব ধারণা করা কি দরকার? তাঁকে প্রত্যক্ষ করতে পারলেই হলো। তাঁর অবতারকে দেখলেই তাঁকে দেখা হলো।
যদি কেউ গঙ্গার কাছে গিয়ে গঙ্গাজল স্পর্শ করে, সে বলে—’গঙ্গা দর্শন, স্পর্শ করে এলুম।’
সব গঙ্গাটা হরিদ্বার থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত হাত দিয়ে ছুঁতে হয় না।
তোমার পা-টা যদি ছুঁই, তোমায় ছোঁয়া হলো।
যদি সাগরের কাছে গিয়ে একটু জল স্পর্শ করো, তাহলে সাগর স্পর্শ করাই হল।
অগ্নিতত্ত্ব সব জায়গায় আছে, তবে কাঠে বেশি।”

গিরিশ (হাসিতে হাসিতে):
“যেখানে আগুন পাব, সেইখানেই আমার দরকার।”

শ্রীরামকৃষ্ণ (হাসিতে হাসিতে):
“অগ্নিতত্ত্ব কাঠে বেশি, ঈশ্বরতত্ত্ব খোঁজো—মানুষে খুঁজবে, মানুষের মধ্যেই তিনি বেশি প্রকাশ হন। যে মানুষকে দেখলে ভক্তি উথলে পড়ে ঈশ্বরের জন্য, তিনি অবতীর্ণ হয়েছেন।”

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share