শকুনি খুব উঁচুতে উড়ে, কিন্তু নজর থাকে ভাগাড়ে — কোথায় মরা।
নরেন্দ্র খুব ভালো — গাইতে, বাজাতে, পড়াশোনায়, বিদ্যায়। এদিকে জিতেন্দ্র, বিবেক, বৈরাগ্য আছে। সত্যবাদী, অনেক গুণ।
মাস্টারের প্রতি কেমন রে? কেমন গা? খুব ভালো নয়।
মাস্টার: “আজ্ঞে হ্যাঁ, খুব ভালো।”
শ্রীরামকৃষ্ণ: “মাস্টারের প্রতি দেখো — ওর (গিরিশের) খুব অনুরাগ আর বিশ্বাস।”
মাস্টার অবাক হইয়া গিরিশকে একদৃষ্টে দেখিতেছেন। গিরিশ ঠাকুরের কাছে কয়েকদিন আসিতেছেন মাত্র। মাস্টার কিন্তু দেখিলেন — যেন পূর্ব পরিচিত, অনেক দিনের আলাপ। পরম আত্মীয় যেন — এক সূত্রে গাঁথা মণিগণের একটি মণি।
নারান বলিলেন, “মহাশয়, আপনার গান হবে না।”
শ্রী রামকৃষ্ণ সেই মধুর কণ্ঠে মায়ের নাম ও গুণগান করিতেছেন:
“যতনে হৃদয়ে রেখো আদরিনী শ্যামা মাকে,
মাকে তুমি দেখো, আর আমি দেখি—আর যেন কেউ নাহি দেখে।
কামাদিরে দিয়ে থাকি, আয় মন, বিরলে দেখি।
রচনার সঙ্গে রাখি—সে যেন ‘মা’ বলে ডাকে।
কুরুচি, কুমন্ত্রী যত, নিকট হতে দিও না কো;
জ্ঞাননয়নকে প্রহরী রেখো—সে যেন সাবধানে থাকে।”
ঠাকুর ত্রিতাপে স্থবির সংসারী জীবের ভাব আরোপ করিয়া মার কাছে অভিমান করিয়া গাহিতেছেন:
“গো আনন্দময় হয়ে মা, আমায় নিরানন্দ করো না।
ও মা, ও দুটি চরণ বিনে আমার মন অন্য কিছু আর জানে না।
তপন তনয় আমায় মন্দ কয়—কি বলিব, তাই বলো না।
ভবানী বলিয়ে ভবে যাব চলে—মনে ছিল এই বাসনা।
অতল পাতালে ডুবাবি আমায়, স্বপ্নেও তা তো জানি না।
অহর্নিশি শ্রী দুর্গা নামে ভাসি, তবু দুঃখরাশি গেল না।
এবার যদি মরি, ও হরসুন্দরী, তোর ‘দুর্গা’ নাম আর কেউ লবে না।”
Leave a Reply