গিরিশের নিমন্ত্রণে রাত্রেই যেতে হবে। এখন রাত নটা — ঠাকুর রাত্রির আহার গ্রহণ করবেন বলে প্রস্তুতি চলছে।
পাছে বলরাম মনে কষ্ট পান, ঠাকুর গিরিশের বাড়ি যাইবার সময় তাকে বুঝিয়ে বলছেন,
“বলরাম, তুমিও খাবার পাঠিয়ে দিও।”
দোতলা থেকে নামতে নামতেই ঠাকুর ভগবদভাব-বিভোর। যেন মাতাল — সঙ্গে নারায়ণ, মাস্টার, রাম, চুনী প্রমুখ ভক্তগণ।
একজন ভক্ত বললেন, “সঙ্গে কে যাবে?”
ঠাকুর বললেন, “একজন থাকলেই হবে।”
নামতে নামতেই বিভোর অবস্থায় নারায়ণ হাত ধরতে গিয়েছিল, সঙ্গে সঙ্গে পড়ে যায়।
ঠাকুর কিছুটা বিরক্ত হন, পরে সস্নেহে নারায়ণকে বললেন,
“হাত ধরিস না, লোকে ভাববে আমি মাতাল।”
এরপর তিনি চললেন বৌসপাড়া তেমাথার দিকে।
ভক্তরা পশ্চাতে পড়ে যাচ্ছেন। কে জানে তাঁর হৃদয়ের মধ্যে তখন কেমন এক অদ্ভুত দেবভাব প্রবাহিত হচ্ছিল।
যাকে বেদে “বাক্য, মন ও চিন্তার অতীত” বলেছে — সেই রূপেই কি তিনি অনুভব করছেন তাঁকে?
ঠাকুর যেন পাগলের মতো পদক্ষেপ করছেন। একটু আগে বলরামের বাড়িতে বলেছিলেন:
“সেই পুরুষ বাক্য-মন-এর অতীত নন — তিনি শুদ্ধ মনের, শুদ্ধ বুদ্ধির, শুদ্ধ আত্মার গোচর।”
তবে কি তিনি সেই পুরুষের সাক্ষাৎ পাচ্ছেন? এই কি সেই দর্শন?
এমন সময় নরেন আসছেন — ঠাকুর বলতে লাগলেন,
“নরেন্দ্র, নরেন্দ্র…”
পাগলের মতো আচরণ।
নরেন আসতেই ঠাকুর কথা বললেন না।
লোকে বলছে — এটাই ‘ভাব’। এই রূপ শ্রীগৌরাঙ্গের ক্ষেত্রেও হয়েছে।
এ ভাব কে বুঝবে?
গিরিশের বাড়ির গলির সামনে ঠাকুর এসে উপস্থিত হলেন।
সঙ্গে ভক্তগণ। এবার ঠাকুর নরেনকে সম্ভাষণ করলেন।
নরেন্দ্র বললেন,
“ভালো আছেন?”
Leave a Reply