তাঁর কণ্ঠে করুণাভরা প্রতিটি শব্দ।
হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়লেন — নরেনের দিকে চেয়ে বললেন:
জীব, জগৎ, ঈশ্বর — এসব কি তিনি দেখছিলেন? কে জানে!
দু-একটি কথা উচ্চারিত হলো — যেন বেদবাক্য, যেন দৈববাণী।
অথবা যেন অনন্ত সমুদ্রতীরে দাঁড়িয়ে আছি — আর অনন্ত তরঙ্গের শব্দ শুনছি।
অনাহত ধ্বনির এক-দুটি সুর যেন কর্ণকুহরে প্রবেশ করল।
১১ মার্চ ১৮৮৫ — গিরিশ ঠাকুরের বাড়িতে শ্রী রামকৃষ্ণ
সন্ধ্যার পর গিরিশ ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণকে গৃহে নিয়ে এলেন।
ঠাকুর ভক্তদের সঙ্গে গিরিশের বাড়ির নিকট পৌঁছাতেই,
গিরিশ দণ্ডবৎ হয়ে পড়লেন — ঠাকুরের পদস্পর্শ করলেন।
তাঁকে নিয়ে উঠলেন দ্বিতীয় তলার বৈঠকখানায়।
ভক্তরা দ্রুত আসন গ্রহণ করলেন — সবার ইচ্ছা ঠাকুরের কাছে বসে তাঁর মধুর বচন শ্রবণ করা।
ঠাকুর আসনে বসতে যাচ্ছিলেন, হঠাৎ দেখলেন একখানা খবরের কাগজ পড়ে আছে।
খবরের কাগজে বিশ্বজিতের কথা, বিষয়-আলোচনা, পরনিন্দা — অপবিত্র সবকিছু।
ঠাকুর ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিলেন — যেন তা সরিয়ে ফেলা হয়।
খবরের কাগজ সরানোর পর তিনি আসনে বসলেন।
নিত্যগোপাল প্রণাম করলেন।
শ্রীরামকৃষ্ণ বললেন,
“ওখানে?”
নিত্য বললেন, “হ্যাঁ, দক্ষিণেশ্বরে যেতে চাই। তবে শরীর ভালো নয় — মাথাব্যথা।”
ঠাকুর বললেন,
“কেমন আছিস?”
নিত্য বললেন,
“ভালো নয়।”
ঠাকুর বললেন,
“দুই-একদিন নিচে থাকিস।”
নিত্য বললেন,
“লোক ভালো লাগে না। অনেক কথা বলে — ভয় লাগে। আবার কখনো সাহস হয়।”
ঠাকুর বললেন,
“তা হবে বৈকি। তোদের সঙ্গে কে থাকে?”
নিত্য বললেন, “তারক — সে সব সময় সঙ্গে থাকে। তবে সেও ভালো সময় কাটাতে পারছে না।”
Leave a Reply