Ramakrishna 441: আত্মীয় হতে যিনি পরম আত্মীয়, তাঁর উপর অভিমান না করলে আর কাদের উপর করবেন?

https://www.madhyom.com/ramkrishna-kathamrita-by-mahendra-gupta-393th-copy

লোকের খোসামোদ করে বেড়ান কলকাতা থেকে। তাদের গাড়ি করে আনতে গৃহস্থ ভক্তদের সর্বদা বলেন— ‘ওদের নিমন্ত্রণ করে খাওয়াও, তাহলে তোমাদের ভালো হবে।’ একে মায়া নয়, স্নেহ নয়— বিশুদ্ধ ঈশ্বরপ্রেম। মাটির প্রতিমাতে যতভাবে ষোড়শ উপাচারে ঈশ্বরের পূজা ও সেবা হয়, আর শুদ্ধ নরদেহে কি হতে পারে না? তাছাড়া এরাই ভগবানের প্রত্যেক লীলার সহায়, জন্মে জন্মে সাঙ্গোপাঙ্গ।
নরেন্দ্রকে দেখতে দেখতে বাহ্যজগৎ ভুলে গেলেন, ক্রমে ‘দেহী’ নরেন্দ্রকে ভুলে গেলেন। বাহ্যিক মানুষকে ভুলে, ‘প্রকৃত মানুষ’-কে দর্শন করিতে লাগলেন।
অখণ্ড সচ্চিদানন্দে মন লীন হইলো। যাকে দর্শন করে কখনো অবাক, স্পন্দনহীন হয়ে চুপ করে থাকেন, কখনো বা ‘ওম ওম’ বলেন, কখনো বা ‘মা মা’ করে পালকের মতো ডাকেন।
নরেন্দ্রর ভিতর তাঁকে (ঈশ্বরকে) বেশি প্রকাশ পেতে দেখেন। ‘নরেন্দ্র নরেন্দ্র’ করে পাগল!
নরেন্দ্র অবতার মানেন নাই— তাঁর আর কী হয়েছে? ঠাকুরের দিব্য চক্ষু! তিনি দেখলেন যে এ অভিমান হতে পারে, তিনি যে বড় আপনার লোক! তিনি যে আপনার মা পাতানো, মাথানত— তিনি কেন বুঝিয়ে দেন না? তিনি দপ করে আলো জ্বেলে দেন না!

তাই বুঝি ঠাকুর বলেছিলেন—
“মান কয়েলই তো কয়েলি, আমরাও তোর মানে আছি।”
আত্মীয় হতে যিনি পরম আত্মীয়, তাঁর উপর অভিমান না করলে আর কাদের উপর করবেন?

ধন্য নরেন্দ্রনাথ!
তোমার উপর এই পুরুষোত্তমের (ঠাকুরের) এত ভালোবাসা!
তোমাকে দেখেই এত সহজে ঈশ্বরচিন্তার উদ্দীপনা জাগে।

এইরূপ ভাবনাচিন্তা করতে করতে গভীর রাত্রে, শ্রীরামকৃষ্ণকে স্মরণ করতে করতে ভক্তেরা গৃহে প্রত্যাবর্তন করছিলেন।

১৮৮৫ সালের ৬ এপ্রিল।
স্থান: বলরাম মন্দির। সময়: দুপুর তিনটে।
চৈত্র মাসের তীব্র রৌদ্র।

শ্রীরামকৃষ্ণ বলরামের বৈঠকখানায় কয়েকজন অন্তরঙ্গ ভক্তের সঙ্গে বসিয়া আছেন।
মাস্টারমশাই উপস্থিত। কথোপকথন চলছে। ভক্তির কথা ঘিরে। এই দিনটি—সোমবার, ১৮৮৫ সালের ৬ এপ্রিল, বাংলা ১২৯১ সালের চৈত্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের সপ্তমী তিথি।
ঠাকুর তখন কলকাতার ভক্তমন্দিরে এসেছেন।
সেখান থেকে পরে যাবেন ফণি গোস্বামীর গলির দেবেন্দ্রর বাড়িতে।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share