Ramakrishna 516: “মেয়েভক্তদের গোপাল ভাব—‘বাৎসল্য ভাব’ বেশি ভাল নয়, ওই ‘বাৎসল্য’ থেকেই আবার একদিন ‘তাচ্ছল্য’ হয়”

https://madhyom.com/ramakrishna-kathamrita-by-mahendranath-gupta-515th-copy

৪৯ শ্রীশ্রীরথযাত্রা বলরাম-মন্দিরে

চতুর্থ পরিচ্ছেদ

১৮৮৫, ১৪ই জুলাই
পূর্বকথা—৺কাশীধামে শিব ও সোনার অন্নপূর্ণাদর্শন—
অদ্য ব্রহ্মাণ্ডকে শালগ্রাম রূপে দর্শন

শ্রীরামকৃষ্ণ (সারদার প্রতি)—দক্ষিণেশ্বরে যাস না কেন? কলিকাতায় যখন আসি, তখন আসিস না কেন?

সারদা—আমি খবর পাই না।

শ্রীরামকৃষ্ণ (Kathamrita) — এইবার তোকে খবর দিব। (মাস্টারকে সহাস্যে) একখানা ফর্দ করো তো—ছোকরাদের। (মাস্টার ও ভক্তদের হাস্য)

পূর্ণের সংবাদ—নরেন্দ্রদর্শনে ঠাকুরের আনন্দ

সারদা—বাড়িতে বিয়ে দিতে চায়। ইনি (মাস্টার) বিয়ের কথায় আমাদের কতবার বকেছেন।

শ্রীরামকৃষ্ণ—এখন বিয়ে কেন? (মাস্টারের প্রতি) সারদার বেশ অবস্থা হয়েছে। আগে সঙ্কোচ ভাব ছিল। যেন ছিপের ফাতা টেনে নিত। এখন মুখে আনন্দ এসেছে।

ঠাকুর একজন ভক্তকে বলিতেছেন, “তুমি একবার পূর্ণর জন্য যাবে?”

এইবার নরেন্দ্র আসিয়াছেন। ঠাকুর নরেন্দ্রকে জল খাওয়াইতে বলিলেন। নরেন্দ্রকে দেখিয়া বড়ই আনন্দিত হইয়াছেন। নরেন্দ্রকে খাওয়াইয়া যেন সাক্ষাৎ নারায়ণের সেবা করিতেছেন। গায়ে হাত বুলাইয়া আদর করিতেছেন, যেন সূক্ষ্মভাবে হাত-পা টিপিতেছেন! গোপালের মা (‘কামারহাটির বামনী’) ঘরের মধ্যে আসিলেন। ঠাকুর বলরামকে কামারহাটিতে লোক পাঠাইয়া গোপালের মাকে আনিতে বলিয়াছিলেন। তাই তিনি আসিয়াছেন। গোপালের মা ঘরের মধ্যে আসিয়াই বলিতেছেন, “আমার আনন্দে চক্ষে জল পড়ছে।” এই বলিয়া ঠাকুরকে ভূমিষ্ঠ হইয়া নমস্কার করিলেন।

শ্রীরামকৃষ্ণ — সে কি গো। এই তুমি আমাকে গোপাল বল—আবার নমস্কার!

“যাও, বাড়ির ভিতর গিয়ে একটি বেন্নন রাঁধ গে-খুব ফোড়ন দিও — যেন এখানে পর্যন্ত গন্ধ আসে।” (সকলের হাস্য)

গোপালের মা—এঁরা (বাড়ির লোকেরা) কি মনে করবে?

গোপালের মা কি ভাবিতেছেন যে, এখানে নূতন এসেছি,—যদি আলাদা রাঁধব বলে বাড়ির লোকেরা কিছু মনে করে!

বাড়ির ভিতর যাইবার আগে তিনি নরেন্দ্রকে সম্বোধন করিয়া কাতরস্বরে বলিতেছেন (kathamrit), “বাবা! আমার কি হয়েছে; না বাকী আছে?”

আজ রথযাত্রা—শ্রীশ্রীজগন্নাথের ভোগরাগাদি হইতে একটু দেরি হইয়াছে। এইবার ঠাকুর সেবা হইবে। অন্তঃপুরে যাইতেছেন। মেয়ে ভক্তেরা ব্যাকুল হইয়া আছেন,—তাঁহাকে দর্শন ও প্রণাম করিবেন।

ঠাকুরের অনেক স্ত্রীলোক ভক্ত ছিলেন। কিন্তু তিনি তাঁহাদের কথা পুরুষ ভক্তদের কাছে বেশী বলিতেন না। কেহ মেয়ে ভক্তদের কাছে যাতায়াত করিলে, বলিতেন, ‘বেশী যাস নাই; পড়ে যাবি!’ কখন কখন বলিতেন, ‘যদি স্ত্রীলোক ভক্তিতে গড়াগড়ি যায়, তবুও তার কাছে যাতায়াত করবে না।’ মেয়েভক্তেরা আলাদা থাকবে—পুরুষ-ভক্তেরা আলাদা থাকবে। তবেই উভয়ের মঙ্গল। আবার বলিতেন, “মেয়েভক্তদের গোপাল ভাব—‘বাৎসল্য ভাব’ বেশি ভাল নয়। ওই ‘বাৎসল্য’ থেকেই আবার একদিন ‘তাচ্ছল্য’ হয়।”

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share