ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ প্রহ্লাদচরিত্রাভিনয় দর্শনে স্টার থিয়েটারে
চতুর্থ পরিচ্ছেদ
১৮৮৪, ১৪ই ডিসেম্বর
সত্ত্বগুণ এলে ঈশ্বরলাভ—“সচ্চিদানন্দ না কারণানন্দ”
ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) ছোকরা ভক্তদের কথা কহিতেছেন।
শ্রীরামকৃষ্ণ (গিরিশাদির প্রতি)—ধ্যান করতে করতে ওদের সব লক্ষণ দেখি। “বাড়ি করব” এ-বুদ্ধি ওদের নাই। মাগ-সুখের ইচ্ছা নাই। যাদের মাগ আছে একসঙ্গে শোয় না। কি জানো—রজোগুণ না গেলে শুদ্ধসত্ত্ব না এলে, ভগবানেতে মন স্থির হয় না। তাঁর উপর ভালবাসা আসে না, তাঁকে লাভ করা যায় (Kathamrita) না।
গিরিশ—আপনি আমায় আর্শীবাদ করেছেন!
শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—কই! তবে বলেছি আন্তরিক হলে হয়ে যাবে।
কথা বলিতে বলিতে ঠাকুর ‘আনন্দময়ী’! ‘আনন্দময়ী’! এই কথা উচ্চারণ করিয়া সমাধিস্থ হইতেছেন। সমাধিস্থ হইয়া অনেকক্ষণ রহিলেন। একটু প্রকৃতিস্থ হইয়া বলিতেছেন, “শালারা, সব কই?” মাস্টার বাবুরামকে ডাকিয়া আনিলেন।
ঠাকুর বাবুরাম ও অন্যান্য ভক্তদের দিকে চাহিয়া প্রেমে মাতোয়ারা হইয়া বলিতেছেন (Kathamrita), “সচ্চিদানন্দই ভাল (Ramakrishna)! আর কারণানন্দ?” এই বলিয়া ঠাকুর গান ধরিলেন:
এবার আমি ভাল ভেবেছি।
ভাল ভাবীর কাছে ভাব শিখেছি ॥
যে দেশে রজনী নাই, সেই দেশের এক লোক পেয়েছি।
আমি কিবা দিবা কিবা সন্ধ্যা সন্ধ্যারে বন্ধ্যা করেছি ॥
ঘুম ভেঙেছে আর কি ঘুমাই যোগে যাগে জেগে আছি।
যোগনিদ্রা তোরে দিয়ে মা, ঘুমেরে ঘুম পাড়ায়েছি ॥
সোহাগা গন্ধক দিয়ে খাসা রঙ চড়ায়েছি।
মণি মন্দির মেজে লব অক্ষ দু’টি করে কুঁচি ॥
প্রসাদ বলে ভুক্তি মুক্তি উভয়ে মাথায় রেখেছি।
(আমি) কালীব্রহ্ম জেনে মর্ম ধর্মাধর্ম সব ছেড়েছি ॥
ঠাকুর আবার গান ধরিলেন:
গয়া গঙ্গা প্রভাসাদি কাশী কাঞ্চী কেবা চায়।
কালী কালী বলে আমার অজপা যদি ফুরায় ॥
ত্রিসন্ধ্যা যে বলে কালী, পূজা সন্ধ্যা সে কি চায়।
সন্ধ্যা তার সন্ধ্যানে ফেরে কভু সন্ধি নাহি পায় ॥
কালী নামের কতগুণ কেবা জানতে পারে তায়।
দেবাদিদেব মহাদেব যার পঞ্চমুখে গুণ গায় ॥
দান ব্রত যজ্ঞ আদি আর কিছু না মনে জয়।
মদনের যাগ যজ্ঞ ব্রহ্মময়ীর রাঙ্গা পায়।
Leave a Reply