Agni missile: পরমাণু কেন্দ্র নিয়ে শঙ্কায় পাকিস্তান! ভারত তৈরি করছে বাঙ্কার বাস্টার ‘অগ্নি’ ক্ষেপণাস্ত্র

agni missile india builds bunker buster to strike underground enemy target

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভয় পাচ্ছে চিন, পাকিস্তান! ভারত তার সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটিকে আরও মারাত্মক করে তুলতে চলেছে, এর জন্য ক্ষেপণাস্ত্রের ওয়ারহেডে বিস্ফোরকের পরিমাণ বাড়ানো হবে। যা বি-২ বম্বার বিমান থেকে নিক্ষেপ করা জিবিইউ-৫৭ বোমার চেয়েও বেশি মারাত্মক হবে। অগ্নি-৫ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের একটি নতুন, বিস্ফোরক বহনকারী রূপ তৈরি করা হচ্ছে। ৭.৫ টন অর্থাৎ ৭৫০০ কেজি ওজনের বিশাল বিস্ফোরক ওয়ারহেড সহ এই নতুন ক্ষেপণাস্ত্রটি এক ধাক্কায় শত্রুর আস্তানা ধ্বংস করে দেবে। এই উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের সামরিক আধিপত্য আরও জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠা পাবে, বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের।

আমেরিকার মতোই বাঙ্কার ধ্বংসকারী অস্ত্র

সম্প্রতি ইরান ইজরায়েল যুদ্ধের মাঝেই ইরানে সরাসরি হামলা চালিয়েছিল আমেরিকা। ইরানের তিনটি পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালায় আমেরিকার বাহিনী। মাটির নীচে ওই পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘জিবিইউ ৫৭/এ ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর’। ভারতও এরকমই বাঙ্কার বাস্টার তৈরি করতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আত্মনির্ভর ভারত প্রতিরক্ষা খাতে বিপুল বরাদ্দ করেছে। এর ফলে ভারতও তৈরি করছে তার নিজস্ব ভারী বাঙ্কার ধ্বংসকারী অস্ত্র। তবে এটি বিমানের মাধ্যমে নয়, ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাবে—যা এক অভিনব কৌশল।

কী করবে ভারতের বাঙ্কার বাস্টার

ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (DRDO) এখন ‘অগ্নি-৫’ আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের একটি বিশেষ সংস্করণ তৈরি করছে, যা বহন করবে ৭,৫০০ কেজির একটি অত্যন্ত শক্তিশালী ওয়ারহেড। এই ওয়ারহেড ৮০ থেকে ১০০ মিটার গভীর পর্যন্ত শক্ত কংক্রিটের নিচে লুকানো শত্রুপক্ষের বাঙ্কার, কমান্ড সেন্টার, ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি বা পারমাণবিক পরিকাঠামো ধ্বংসে সক্ষম। মূল অগ্নি-৫ যেখানে ৫,০০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে আঘাত হানতে পারে, সেখানে এই ভারী সংস্করণের পাল্লা কমে ২,৫০০ কিলোমিটারে দাঁড়াবে। তবে এর বিধ্বংসী শক্তি ও নিখুঁত নিশানার ক্ষমতা এটিকে আঞ্চলিক প্রতিরোধের কৌশলে একটি শক্তিশালী অস্ত্র হিসেবে গণ্য হবে। অগ্নি-৫ এর বর্তমান পরিসর কমানোর পেছনের আসল উদ্দেশ্য হল দূরত্বের চেয়ে পেলোড ক্ষমতা বৃদ্ধি করা, যাতে শত্রুর লক্ষ্যবস্তুতে সঠিক এবং মারাত্মক আক্রমণ করা যায়। বিশেষ করে চিন ও পাকিস্তানের সম্ভাব্য হুমকির মুখে এই ক্ষেপণাস্ত্র দেশকে ভরসা জোগাবে।

কী থাকবে নয়া সংস্করণে

এই ক্ষেপণাস্ত্রের ওয়ারহেডে যুক্ত থাকবে উন্নত ন্যাভিগেশন ও গাইডেন্স সিস্টেম, যার ফলে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁত আঘাত হানার সক্ষমতা অর্জিত হবে। পাশাপাশি, ডিআরডিও একে ‘এয়ারবাস্ট’ মোডে ফাটানোর ব্যবস্থাও রাখছে, যাতে নির্দিষ্ট উচ্চতায় বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আশেপাশের রাডার, বিমানঘাঁটি বা সাঁজোয়া যানবাহন ধ্বংস করা যায়। এটি একটি তিন-স্তরের, কঠিন জ্বালানি-চালিত ক্ষেপণাস্ত্র। অগ্নি-৫ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দুটি ভিন্ন ওয়ারহেড কনফিগারেশনে সজ্জিত থাকবে।

১. এয়ারবার্স্ট ওয়ারহেড- এই ওয়ারহেডের উদ্দেশ্য হল বিশাল ভূপৃষ্ঠের উপর শত্রুর স্থল লক্ষ্যবস্তুতে সর্বাধিক ক্ষতি সাধন করা। ওয়ারহেডটি লক্ষ্যবস্তুর ঠিক উপরে বিস্ফারিত হবে, যার ফলে একটি শক্তিশালী শক ওয়েভ তৈরি হবে যা পরিকাঠামো, সামরিক ঘাঁটি এবং অন্যান্য পৃষ্ঠতল লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করবে।

২. বাঙ্কার বাস্টার ওয়ারহেড- এই ওয়ারহেডটি এতটাই মারাত্মক হবে যে এটি বি-২ বম্বারে ব্যবহৃত জিবিইউ-৫৭ বাঙ্কার বাস্টার বোমার চেয়েও বেশি মারাত্মক হবে। জিপিইউ-৫৭ বোমা ৬০ মিটার গভীরতা পর্যন্ত নির্মিত বাঙ্কারগুলিকে ধ্বংস করতে পারে, যেখানে অগ্নি-৫ এর বাঙ্কার বাস্টার ওয়ারহেড ৮০-১০০ মিটার গভীরতায় নির্মিত শক্তিশালী ভূগর্ভস্থ কাঠামো, বাঙ্কার এবং কমান্ড সেন্টারগুলিকে এক ধাক্কায় ধ্বংস করতে পারে। এটি পাকিস্তানের কাছে শঙ্কার কারণ। পাকিস্তানের কিরানা পাহাড়ে থাকা পারমাণবিক কেন্দ্রকে যে কোনও সময় উড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখবে।

 ভারতের প্রতিরোধমূলক কৌশলের মূলস্তম্ভ

ভারতের এই সাহসী পদক্ষেপ শুধুমাত্র কৌশলগত স্বাধীনতা অর্জনের প্রয়াস নয়, বরং দেশীয় প্রতিরক্ষা শিল্পে এক বড় সাফল্যের ইঙ্গিত। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত এই বাঙ্কার বাস্টার অগ্নি ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের অস্ত্রভাণ্ডারে এক যুগান্তকারী সংযোজন। অগ্নি ক্ষেপণাস্ত্র সিরিজ বহুদিন ধরেই ভারতের প্রতিরোধমূলক কৌশলের মূলস্তম্ভ। এখন এই সিরিজে বাঙ্কার বাস্টার সংস্করণ যুক্ত হতে চলেছে। এর ফলে ভারত একটি অভিজাত দেশসমূহের তালিকায় যুক্ত হয়ে যাবে, যারা ভূগর্ভস্থ লক্ষ্যবস্তু ধ্বংসের ক্ষমতা রাখে—এবং এর ফলে আরও শক্তিশালী ও দায়িত্বশীল সামরিক শক্তি হিসেবে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করবে।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share