Islamic Conversion Racket: ছাঙ্গুরবাবা সেজে ধর্মান্তরের কারবার ফেঁদেছিল জামালউদ্দিন, শেষ রক্ষা হল কই?

Up police exposes rs 100 cr Islamic conversion racket

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশে (UP) মিলল ধর্মান্তর চক্রের বড়সড় হদিশ। রাজ্য পুলিশ ও সন্ত্রাসবাদ দমন স্কোয়াডের যৌথ অভিযানে মেলে এই চক্রের হদিশ। অভিযোগ, এই চক্র পরিচালনা করছিল জামালউদ্দিন ওরফে ছাঙ্গুরবাবা (Islamic Conversion Racket)। জানা গিয়েছে, এই চক্রটি প্রায় ১০০ কোটিরও বেশি বিদেশি অর্থায়নের সঙ্গে জড়িত। এর প্রধান লক্ষ্য ছিল প্রতারণা ও প্রলোভন দেখিয়ে হিন্দু তরুণীদের ধর্মান্তরিত করা। ঘটনার প্রেক্ষিতে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, “উত্তরপ্রদেশে শান্তি, সম্প্রীতি ও নারীদের নিরাপত্তা বিঘ্নকারীদের কোনও ঠাঁই নেই। ছাঙ্গুরবাবাকে এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে, যা অন্যদের জন্য সতর্কবার্তা হয়ে থাকবে।”

অবৈধ ধর্মান্তকরণের ‘কারবার’ (Islamic Conversion Racket)

উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের দাবি, জামালউদ্দিন এই বাড়ি থেকেই অবৈধ ধর্মান্তকরণের ‘কারবার’ শুরু করেছিল। লখনউ থেকে মুম্বই পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল এই চক্রের জাল। জামালউদ্দিনের লোকজন মানুষকে ভুল বুঝিয়ে, টোপ দিয়ে, কখনও আবার ভয় দেখিয়ে হিন্দু তরুণীদের ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করত। এজন্য লেনদেন হত বিপুল পরিমাণ টাকা। জামালউদ্দিনের ফাঁদে পড়ে কিছু মানুষ মুসলিম হওয়ার পর ফের হিন্দু ধর্মে ফিরে আসেন। এর পরেই প্রকাশ্যে আসে এই চক্রের কথা। তদন্তে নামে এটিএস। এই গ্যাংয়ের বাকিদের গ্রেফতার করতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।

ধর্মান্তরণের এই চক্রের শেকড়

তদন্তে জানা গিয়েছে, ধর্মান্তরণের এই চক্রের শেকড় বিস্তৃত আন্তর্জাতিক পর্যায়েও, বিশেষ করে আরব আমিরশাহিতে। জামালউদ্দিনের প্রাসাদোপম বাংলোয় তার সঙ্গে থাকত নিতু রোহরা, নবীন রোহরা ও তার মেয়ে। এই তিনজনকেই জামালউদ্দিন ইসলাম ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করেছিল। বাড়িটিতে থাকত জামালউদ্দিনের ছেলে মেহবুবও। চারজনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ২০১৪ থেকে ২০১৯ এই পাঁচ বছরে নিতু আরব আমিরশাহিতে গিয়েছিল ১৯ বার। এটিএস জেনেছে (Islamic Conversion Racket), নিতু, তার স্বামী নবীন রোহরা এবং তাদের মেয়ে ২০১৫ সালে দুবাইয়ের ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড চ্যারিটেবল অ্যাক্টিভিটিজ ডিপার্টমেন্ট থেকে ধর্মান্তরণের সার্টিফিকেট নিয়েছিল। যদিও তাদের পাসপোর্টের রেকর্ডে ভ্রমণের তারিখ নিয়ে অসঙ্গতি রয়েছে।

পাঁচ বছরে ১৯ বার আরবে!

মাত্র পাঁচ বছরে এতবার নিতু কেন আরব আমিরশাহিতে গিয়েছিল, বিদেশি অর্থায়নের সঙ্গে এর কী সম্পর্ক, তা খতিয়ে দেখছে এটিএস। জামালউদ্দিনের অপারেশন ছিল অত্যন্ত সুসংগঠিত। সে একাধিক ভুয়ো ট্রাস্ট ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। এর মধ্যে ছিল “আস্বি এন্টারপ্রাইজেস”, “আস্বি চ্যারিটেবল ট্রাস্ট”, “আসিপিয়া হাসনি হুসেইনি কালেকশন” এবং “বাবা তাজউদ্দিন আস্বি বুটিক”। এসব প্রতিষ্ঠান মূলত বিদেশি তহবিলকে সাদা করার (মানি লন্ডারিং) জন্য ব্যবহৃত হত। ধর্মান্তরকরণের উদ্দেশ্যেই এই অর্থ আসত বিদেশ থেকে। এসব ভুয়ো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে (UP) যুক্ত আটটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও খুঁজে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তাঁরা দেখেন, জামালউদ্দিন ৬ লাখ টাকা একটি বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়েছে। এনইএফটির মাধ্যমে স্থানান্তর করেছিল ১০ লাখ টাকাও। এছাড়াও তার সহযোগীদের সঙ্গে আরও অনেক সন্দেহজনক লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে (Islamic Conversion Racket)।

নেটওয়ার্ক বিস্তৃত বহুদূর

জামালউদ্দিনের এক গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী ছিল পুনের ইদুল ইসলাম। সে এই নেটওয়ার্ক বিস্তারে সাহায্য করত। জামালউদ্দিন অন্যান্য রাজ্যেও জমি ও সম্পত্তি কিনে অপারেশনাল বেস গড়ে তুলেছিল। এসটিএফ জানিয়েছে, জামালউদ্দিনের পুনেতে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। লোনাভালায় তার এক সহযোগী মহম্মদ আহমেদ খানের নামে ১৬ কোটি টাকার একটি সম্পত্তিও সে কিনেছে।

মিলত মোটা অঙ্কের ইনাম

এই ধর্মান্তর চক্রে জড়িত মুসলিম পুরুষদের টাকাও দেওয়া হত। কোনও হিন্দু মহিলাকে প্রলুব্ধ করে ধর্মান্তর করলেই জুটত মোটা অঙ্কের ইনাম। যেসব মহিলাদের ধর্মান্তর করা হত, তাঁদের জাত অনুসারে ঠিক হত টাকার অঙ্ক। ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় বা শিখ নারীদের ইসলাম ধর্মে ধর্মান্ততর করতে পারলেই মিলত ১৫-১৬ লাখ টাকা। মহিলা যদি ওবিসি সম্প্রদায়ের হলে মিলত ১০-১২ লাখ টাকা। অন্যান্য জাতের মহিলাদের ধর্মান্তর করতে পারলে মিলত আরও কম টাকা। এর পরিমাণ ৮-১০ লাখ টাকা। তদন্তকারীরা জেনেছেন, জনসংখ্যাগত পরিবর্তন করতেই শুরু হয়েছিল এই ‘ব্যবসা’। প্রসঙ্গত, এই মডেলটি অনেকটা বেওয়ার মুসলিম গ্যাং কেসের মতো। সেখানে হিন্দু স্কুলছাত্রীদের টার্গেট করে শোষণ ও জোরপূর্বক ধর্মান্তরের জন্য একইরকম পন্থা অবলম্বন করা হত (Islamic Conversion Racket)।

রাজনীতির কারবারি থেকে ধর্মান্তর চক্রের চাঁই!

জামালউদ্দিন ছিল রেহরা মাফি গ্রামের বাসিন্দা। সস্তার আংটির (UP) ফেরিওয়ালা ছিল সে। ২০১৫ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিতে গ্রামপ্রধান হয় সে। তার পর থেকেই দ্রুত ঘুরতে থাকে তার ভাগ্যের চাকা। রাজনীতিতে ‘মধু’র স্বাদ পেয়ে ছেলে মেহবুবকেও রাজনীতিতে নিয়ে আসে জামালউদ্দিন। যদিও তার পরের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিপুল টাকা খরচ করেও আর জিততে পারেনি সে। রাজনীতির এই ‘কারবারে’র পাশাপাশি জামালউদ্দিন বিস্তার করতে থাকে ধর্মান্তর চক্রের জাল। এজন্য অর্থও আসতে থাকে বিদেশ থেকে। রাতারাতি বিশাল সম্পত্তির মালিক হয়ে যায় জামালউদ্দিন। সে একাধিক সম্পত্তি কেনে, নির্মাণ করে শোরুম, বানায় বিলাসবহুল বাড়ি, কেনে দামী দামী গাড়িও (Islamic Conversion Racket)।

মঙ্গলবার কোতোয়ালির উতরৌলায় মধুপুরে জামালউদ্দিনের প্রাসাদোপম বাড়িটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় প্রশাসন। প্রশাসনের দাবি, সরকারি জমিতে নির্মাণ করা হয়েছিল বাড়িটি (UP)। সেটি খালি করার জন্য তাকে তিনবার নোটিশও দেওয়া হয়েছিল (Islamic Conversion Racket)।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share