Shaheen Shahid: ফরিদাবাদকাণ্ডে ধৃত চিকিৎসক শাহিন জইশের মহিলা ব্রিগেডের ভারতীয় শাখার প্রধান!

shaheen shahid was tasked with setting up jaish's women wing in india

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাজধানীতে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় মহিলা চিকিৎসক শাহিন শাহিদকে (Dr Shaheena Shahid arrested) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, লখনউ-এর ওই চিকিৎসক পাক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ-এর (JeM) মহিলা সংগঠনের ভারতীয় শাখার প্রধান মুখ।

জইশ-এর মহিলা ব্রিগেড গঠন

পহেলগাঁও হামলার বদলা নিতে অপারেশন সিঁদুরে জইশের কোমর ভেঙে দিয়েছিল ভারতীয় সেনা। সেই অভিযানে মৃত্যু হয় মাসুদ আজাহারের পরিবারের ১১ সদস্যের। এর ঠিক পরই ভারতের বিরুদ্ধে বদলা নিতে মাসুদ আজাহারের বোন সাদিয়ার নেতৃত্বে নয়া মহিলা ব্রিগেড তৈরির ঘোষণা করে জইশ। ভাওয়ালপুরের মার্কাজ-উসমান-ও-আলি থেকেই এই সংগঠন তৈরি করা শুরু করে জইশ। নতুন এই মহিলা ব্রিগেডের নাম জামাত-উল-মোমিনাত। যার মাথায় বসানো হয় মাসুদ আজহারের বোন সাদিয়াকে। সূত্রানুসারে, শাহিন শাহিদকেই দেওয়া হয়েছিল এই ব্রিগেডের ভারতীয় শাখার দায়িত্ব। লখনউয়ের লালবাগের বাসিন্দা ছিল শাহিন। তার গাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি অ্যাসল্ট রাইফেল। সে চিকিৎসক আল-ফালা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করত।

শাহিন শাহিদ কে?

দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, শাহিন শাহিদ ছিল জইশ প্রধান মাসুদ আজহারের বোন সাদিয়া আজহারের অধীনে। সাদিয়া ‘জমাত উল-মোমিনাত’ নামে (JeM’s women’s wing, Jamaat ul-Mominaat) সংগঠনের মহিলা শাখাকে নেতৃত্ব দেয়। এই শাখাটি তৈরি করা হয় পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুরে, যেখানে মহিলাদের সংগঠনে নিয়োগের কাজ শুরু হয় গত অক্টোবর মাস থেকেই। জইশ সদস্যদের স্ত্রী ও দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের এই সংগঠনে নেওয়া হচ্ছিল। সাদিয়ার স্বামী ইউসুফ আজদার ছিল কান্দাহার বিমান অপহরণের ‘মাস্টারমাইন্ড’। অপারেশন সিঁদুরে সে খতম হয়। অনুমান করা হচ্ছে, আপাতত জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানার মতো রাজ্যগুলিতে এই মহিলা ব্রিগেড নিজেদের জাল ছড়াতে শুরু করেছে। তবে সে জাল বেশিদূর অগ্রসর হওয়ার আগেই মাসুদের ‘জেনানা জেহাদি’দের সন্ত্রাসকে গোড়া থেকে উপড়ে ফেলতে কোমর বাঁধছে তদন্তকারীরা।

শাহিনের বাড়ি উত্তরপ্রদেশে

পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, শাহিন শাহিদের বাড়ি উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের লালবাগে। আগে একটি বারবিকিউ রেস্তরাঁয় কাজ করত। পরে আল-ফলাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত হয় এবং সেখানে থেকেই সংগঠনের হয়ে কাজ শুরু করত বলে পুলিশ জানায়। ফরিদাবাদে (Faridabad Explosive) যখন বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার হয়, তখন পুলিশের হাতে আসে শাহিনের নাম।

সীমান্তের ওপারের হ্যান্ডলারদের সঙ্গে যোগাযোগ

সূত্রের দাবি, জেইএম প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ আজহারের বোন সাদিয়া আজহার-ই নাকি এই দায়িত্ব দিয়েছিল শাহিনকে। তদন্তকারীরা বিশ্বাস করছেন, শাহিন সীমান্তের ওপারের হ্যান্ডলারদের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখত এবং সামাজিক মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদী মহিলাদের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করছিল। ধর্মশিক্ষার পাশাপাশি, জিহাদ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ রাখা হয় সিলেবাসে। সাদিয়ার পাশাপাশি, আর এক বোন সামাইরা আজহারকেও ওই আনলাইন কোর্স চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। পুলওয়ামার হামলাকালী উমর ফারুখের স্ত্রী আফরিরা ফারুখও জইশের মহিলা শাখায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে জানা যায়। আইসিস, এলটিটিই-র মতো মেয়েদের ফিদায়েঁ বা আত্মঘাতী বাহিনী তৈরি করাই লক্ষ্য তাদের।

উদ্দেশ্য ছিল ভারতে আরও মহিলা সদস্য তৈরি করা

এখনও পর্যন্ত যা জানা যাচ্ছে, এদিকে ফরিদাবাদ থেকে যে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করার পর গ্রেফতার করা হয়েছে মুজাম্মিল গনি ওরফে মুসাইব নামে সন্দেহভাজন এক জঙ্গিকে। তার ভাড়াবাড়ির দু’টি ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২৯০০ কেজি বিস্ফোরক। উল্লেখ্য, সোমবার লালকেল্লার কাছে হওয়া ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় ইউএপিএ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। এটি সন্ত্রাসবিরোধী আইন। দিল্লির কোতোয়ালি থানা UAPA-এর ১৬, ১৮ ধারা, বিস্ফোরক আইন এবং বিএনএসের একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মুজাম্মিলকে জেরা করেই উঠে আসে শাহিনের নাম। পরে পুলিশ তাঁর মারুতি সুইফট গাড়িতে (HR 51) তল্লাশি চালিয়ে একটি অ্যাসল্ট রাইফেল, একটি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের দাবি, শাহিন শাহিদ ভারতে থেকে জইশের মহিলা শাখা গঠনের কাজ করছিলেন। সংগঠনের উদ্দেশ্য ছিল ভারতে আরও মহিলা সদস্য তৈরি করা এবং ছোট ছোট ইউনিট গঠন করা।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share