Dharmasthala Mass Burial: মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করেছিলেন সাফাইকর্মী! কর্নাটকে ধর্মস্থল মামলায় গ্রেফতার মূল অভিযোগকারী

dharmasthala mass burial case the key whistleblower has been arrested for allegedly misleading the

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গণকবর কাণ্ডে নয়া মোড়। কর্নাটকের ধর্মস্থল (Dharmasthala Mass Burial) থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল মেয়ে। তা নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন সুজাতা ভাট নামে এক মহিলা। শুক্রবার সেই সুজাতাই জানালেন, তিনি পুলিশকে যা বলেছিলেন সে সবটাই নাকি মিথ্যে। তাঁর মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার গল্পটা পুরোটাই সাজানো। তাঁর কোনও মেয়েই নেই। তাঁর এই জবানবন্দির পর শনিবার সকালে ধর্মস্থল কাণ্ডের মূল অভিযোগকারীকে গ্রেফতার করে বিশেষ তদন্তকারী দল।

সাফাইকর্মীর মিথ্যা তথ্য

দক্ষিণ ভারতের অন্যতম পবিত্র স্থান হিসেবে পরিচিত কর্নাটকের ধর্মস্থল মন্দির এখন চাঞ্চল্যের কেন্দ্রে। এক প্রাক্তন সাফাইকর্মীর বিস্ফোরক অভিযোগ, ১৯৯৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রায় দুই দশক ধরে তিনি “শত শত মৃতদেহ” কবর দিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে বহু নারী, কিশোরী এবং কিছু দরিদ্র পুরুষের দেহ, যাদের অনেককেই ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হতে হয়েছে। কিন্তু বিশেষ তদন্তকারী দল অনুসন্ধানের পর দেখেছে, ওই সাফাইকর্মী মিথ্যা তথ্য দিয়ে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিমকে (SIT) বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে।

সাফাইকর্মীকে গ্রেফতার

সূত্রের খবর, ধর্মস্থল মন্দির (Dharmasthala Mass Burial) প্রশাসনের ওই প্রাক্তন সাফাইকর্মীকে শুক্রবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদের পর শনিবার সকাল ৬টা নাগাদ গ্রেফতার করা হয়। তিনি দাবি করেছিলেন যে তিনি বহু মৃতদেহ কবর দিয়েছেন। তবে তদন্তে উঠে আসে, তিনি যে খুলি সিট-কে দেখিয়েছিলেন, সেটি ছিল নকল। তাঁর বলা ১৫টি কবরস্থলের মধ্যে শুধুমাত্র একটি জায়গা থেকে একটি পুরুষের কঙ্কাল উদ্ধার হয়েছে। বাকি স্থানে কিছুই পাওয়া যায়নি। যদিও ওই সাফাইকর্মীর দাবি, জঙ্গলের বৃদ্ধি ও নির্মাণকার্য চলার ফলে বাকি স্থানগুলো ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, “আমি মন্দিরের বদনাম করে কী পাব? আমি হিন্দু, তাও আবার তফসিলি জাতির মানুষ।”

পুলিশকে ভুয়ো তথ্য

অন্যদিকে, এই ঘটনার অপর সাক্ষী, সুজাতা ভাট সম্প্রতি একটি ইউটিউব চ্যানেলে জানিয়েছেন, অনন্যা ভাট নামে তাঁর কোনও মেয়ে ছিল না। ২০০৩ সালের মে মাসে তাঁর মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার যে গল্প তিনি পুলিশকে বলেছিলেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যে। মেয়ের যে ছবি প্রমাণ হিসেবে তিনি পুলিশকে দেখিয়েছিলেন তা ভুয়ো। সুজাতার দাবি, তাঁকে গিরিশ মাত্তান্নাভার এবং টি জয়ন্তী নামে দুই ব্যক্তি এই মিথ্যে গল্প বানানোর জন্য চাপ দিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, ধর্মস্থল মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁদের পরিবারিক জমি নিয়ে একটি পুরনো বিবাদ ছিল। সেই বিবাদকে কেন্দ্র করেই দুই প্রধান আন্দোলনকারী গিরিশ মত্তন্নাভর এবং টি জয়ন্তী তাঁকে মিথ্যা কথার বলার জন্য জোর দিয়েছিলেন। সুজাতা জানিয়েছেন, তিনি মিথ্যে কথা বলার জন্য কখনও কারও কাছে টাকা চাননি। এমনকী নেননি। সুজাতার দাদুর সম্পত্তি মন্দির কর্তৃপক্ষ তাঁর সই ছাড়াই নিয়ে নিয়েছিল। সেই ঘটনার প্রতিবাদ করতেই সুজাতাকে এই মিথ্যে গল্প বলতে হয়েছিল।

ধর্মস্থলের ভক্তদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা

প্রসঙ্গত, এর আগে সুজাতা পুলিশকে জানিয়েছিলেন, তাঁর ১৮ বছরের মেয়ে অনন্যা ভাট ২০০৩ সালের মে মাসে বন্ধুদের সঙ্গে ধর্মস্থলে (Dharmasthala Mass Burial) ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয়ে যান। সুজাতা জানিয়েছেন, এর পরে তিনি যখন নিজের মেয়েকে খুঁজছিলেন তখন তাঁকে অপহরণ করে মারধর করা হয়। তাঁকে মুখ বন্ধ করে রাখার পাশপাশি ধর্মস্থলে ফিরে না আসার জন্য হুমকি দেওয়া হয়েছিল। সুজাতার দাবি, তাঁকে তখন এত মারধর করা হয়েছিল যে তিনি এক মাস কোমায় ছিলেন। পুলিশের কাছে মেয়ের নিখোঁজের অভিযোগ জানাতে এসে এ সবই বলেছিলেন সুজাতা। কিন্তু শুক্রবারের বিবৃতিতে তিনি নিজের বলা সমস্ত কথা অস্বীকার করে কর্নাটকের মানুষ এবং ধর্মস্থলের ভক্তদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share