Geeta Path Program: পাঁচ নয়, ব্রিগেডে গীতা পাঠ করলেন সাড়ে ৬ লাখেরও বেশি মানুষ

Geeta path program organized at brigade

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নির্বিঘ্নেই শেষ হল ব্রিগেডে (Brigade) পাঁচ লক্ষ কণ্ঠের গীতা পাঠের অনুষ্ঠান (Geeta Path Program)। মাঠময় গেরুয়া। দুর্ঘটনা এড়াতে মাঝপথেই ভাষণ শেষ করে দিতে বাধ্য হন বাগেশ্বর ধামের পীঠাধীশ্বর। রবিবারের এই কর্মসূচির আয়োজক ছিল সনাতন সংস্কৃতি সংসদ।

ভোটব্যাঙ্ক বাঁচাতে অনুপস্থিত মমতা? (Geeta Path Program)

উদ্যোক্তাদের তরফে প্রথম থেকেই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল এই কর্মসূচিটি অরাজনৈতিক। সেই কারণেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীকেও। তবে বিধানসভা নির্বাচনের আগে গা বাঁচাতে প্রত্যাশিতভাবেই অনুপস্থিত রইলেন তিনি। অথচ এই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই দীঘায় ঘটা করে উদ্বোধন করেছিলেন জগন্নাথ ধামের। যে জগন্নাথ আদতে শ্রীকৃষ্ণই। তাঁরই মুখনিঃসৃত বাণী পাঠের দিনই স্রেফ ভোটের রাজনীতি করতে গিয়ে, বলা ভালো, নবান্নের চোদ্দতলার ঠান্ডা ঘরের চেয়ারটা যাতে হাতছাড়া না হয়, তাই এদিন আমন্ত্রণ পেয়েও ব্রিগেডে যাননি মুখ্যমন্ত্রী। অন্তত, বিরোধীদের দাবি তেমনই।

কী বললেন রাজ্যপাল

তবে মুখ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত না হলেও, গিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তাঁর বক্তৃতায় উঠে আসে মহাভারত এবং গীতার নানা অংশের উদ্ধৃতি। গীতার ‘পরিত্রাণায় সাধুনাং’ শ্লোকটি উদ্ধৃত করে তিনি দুষ্টের দমনের ডাক দেন। মহাভারতে শ্রীকৃষ্ণের অর্জুনকে কর্মে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শের কথা মনে করিয়ে দিয়ে রাজ্যপাল বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ কর্ম করার জন্য প্রস্তুত’। পরে বলেন, “পশ্চিমবঙ্গও ধর্মীয় ঔদ্ধত্যকে শেষ করার জন্য প্রস্তুত।” তিনি বলেন, “গীতা আধ্যাত্মিক, দার্শনিক ও সাংস্কৃতিক – সব ক্ষেত্রেই গভীর গুরুত্ব বহন করে।” গীতাকে তিনি ভগবানের সঙ্গীত বলেও উল্লেখ করেন। রাজ্যপাল বলেন, “এই ধর্মগ্রন্থ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রবাহিত, নিঃস্বার্থ কর্ম ও উদ্দেশ্যপূর্ণ জীবনযাপনের জন্য পথনির্দেশ করে। গীতা আজও নাগরিকদের সমাজ ও জাতির প্রতি কর্তব্য পালন করতে প্রাণিত করে।”

কারা ছিলেন অনুষ্ঠানে

গীতাপাঠের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার, রাজ্য বিধানসভার (Geeta Path Program) বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্য বিজেপির দুই প্রাক্তন সভাপতি তথাগত রায়, রাহুল সিনহা, লকেট চট্টোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পাল প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন দিলীপ ঘোষও। গীতা পাঠের জন্য এদিন ব্রিগেডে তিনটি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল (Brigade)। মূল মঞ্চের দুপাশে অপেক্ষাকৃত ছোট দুটি মঞ্চ ছিল। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছিলেন সাধুসন্তরা। এসেছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধিরাও। কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন মতুয়াদের একাংশও।

সাধ্বী ঋতম্ভরা

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দুর্গা বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা সাধ্বী ঋতম্ভরা। গীতা পাঠের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরে প্রথম ভাষণটি দেন তিনিই। বক্তা হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা হতেই বিশৃঙ্খলা শুরু হয়ে যায় মাঠে। মাঠের শেষের দিকে থাকা লোকজন মঞ্চের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন। এই হুড়োহুড়ি দেখে ভাষণ দীর্ঘায়িত করেননি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এই নেত্রী। হিন্দুরাষ্ট্রের নামে জয়ধ্বনি দিয়ে বক্তৃতা শুরু করেন তিনি। এও বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের মাটি জেগে ওঠো, পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু জেগে ওঠো। দুষ্টের দমন করো।” পরে (Geeta Path Program) সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় বিধায়ক হুমায়ূন কবীরের বাবরি মসজিদের শিলান্যাস প্রসঙ্গে ঋতম্ভরা বলেন,  “এ দেশে বাবর বা বাবরির কোনও ভিত্তি নেই। ইট দিয়ে একটি কাঠামো তৈরি করা যায়, কিন্তু বাবরকে মানুষের হৃদয়ে ঠাঁই দেওয়া যায় না। এই দেশ রামের, চিরকাল রামেরই থাকবে। এখানে শুধু ভগওয়া রাজ করবে। এটাই চিরন্তন সত্য (Brigade)।”

“ঐতিহাসিক দৃশ্য”

ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড, যা প্রায়ই বড় রাজনৈতিক সমাবেশের স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়, এদিন সেটিই রূপান্তরিত হয়ে উঠেছিল সন্ন্যাসী ও হিন্দুদের একস্বর শ্লোকপাঠের মধ্যে গেরুয়া সমুদ্রে। বিজেপি নেতা অমিত মালব্য এই সমাবেশকে “ঐতিহাসিক দৃশ্য” বলে বর্ণনা করেছেন এবং জনতার উপস্থিতিকে “অসাধারণ” ও “খাঁটি ভক্তিতে পূর্ণ” বলে আখ্যা দেন (Geeta Path Program)। মালব্যের বক্তব্য যে নিছক কথার কথা নয়, তার প্রমাণ মিলল পুলিশেরই একটি সূত্রে। এদিনের অনুষ্ঠানের নাম ছিল পাঁচ লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ। যদিও সূত্রের খবর, লোক হয়েছিল সাড়ে ৬ লাখেরও বেশি। রবিবারের অনুষ্ঠান যে অরাজনৈতিক, তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন সনাতন সংস্কৃতি সংসদের সভাপতি কার্তিক মহারাজ। তিনি বলেছিলেন, “নির্বাচনের সঙ্গে এই অনুষ্ঠানের কোনও সম্পর্কই নেই। ভোট তো সারা বছরই চলছে। সারা ভারতে চলছে। শ্রীমদ্ভাগবদ গীতার সৃষ্টি হয়েছিল মোক্ষদা একাদশীতে। অগ্রহায়ণ মাসের শুক্লপক্ষের একাদশীই মোক্ষদা একাদশী। এই তিথিটা তো এই সময় আসবেই। তাই এর সঙ্গে ভোটের কোনও সম্পর্ক নেই। এই অনুষ্ঠানের কথা আমরা বিভিন্ন (Brigade) মসজিদেও জানিয়েছি। এটা আমাদের ধর্মের কাজ। কোনও রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শন নয়। কোনও সাধু-সন্ন্যাসীদের শক্তির প্রদর্শনও নয়। এটি একটি অরাজনৈতিক অনুষ্ঠান (Geeta Path Program)।”

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share