Terrorist Tahir Habib: লস্কর কমান্ডারকে জঙ্গি তাহিরের জানাযায় যোগ দিতে বাধা, দিন বদলাচ্ছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে?

Pok villagers revolt against lashkar at the funeral of terrorist tahir habib

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সীমান্তপার সন্ত্রাসবাদে পাকিস্তানের সরাসরি জড়িত থাকার বিষয়টি ফের একবার প্রকাশ্যে চলে এল সাম্প্রতিক এক ঘটনার মাধ্যমে। জম্মু-কাশ্মীরে অপারেশন ‘মহাদেবে’ খতম লস্কর-ই-তৈবা (LeT) জঙ্গি তাহির হাবিবের (Terrorist Tahir Habib) শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় পাক অধিকৃত কাশ্মীরে (POK), তার নিজের গ্রাম রাওয়ালকোটের খাই গালায়। সেখানে যে জানজা-গায়েব অনুষ্ঠিত হয়, সেখানে পাক জঙ্গি নিয়োগকারী চক্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন স্থানীয়রা।

তাহির পাক সেনার প্রাক্তন সদস্য (Terrorist Tahir Habib)

তাহির পাক সেনার প্রাক্তন সদস্য। লস্কর-ই-তৈবার ‘এ’ ক্যাটেগরির সক্রিয় জঙ্গি। ২২ এপ্রিল দক্ষিণ কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে বেছে বেছে যে ২৬ জন হিন্দু পর্যটককে হত্যা করা হয়, সেই হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্তও এই তাহির। তার জানাজায় অশান্তি শুধুমাত্র এই হামলায় তার জড়িত থাকার বিষয়টিই নিশ্চিত করেনি, পাক-সমর্থিত জঙ্গি নেটওয়ার্কগুলির বিরুদ্ধে একটি প্রতিরোধের বার্তাও হয়ে উঠেছে। ‘অপারেশন মহাদেবে’ ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী শ্রীনগরে তাহির-সহ তিন জঙ্গিকে নিকেশ করে। কিছুদিন আগেই ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি তাহিরের লস্কর-ই-তৈবার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এবং পহেলগাঁওয়ে হামলায় তার সক্রিয় ভূমিকার কথা জানতে পারে। তার পরেই চালানো হয় অপারেশন। তাহিরের মৃত্যুকে এখন আর কেবল একটি কৌশলগত সাফল্য হিসেবে নয়, বরং পাক-আশ্রিত জঙ্গিদের মদত দেওয়ায় ভারতের প্রতিরোধ অভিযানে একটি প্রতীকী জয় হিসেবেও দেখা হচ্ছে।

জানাজা-গায়েবে অশান্তি

খাই গালায় জানাজা-গায়েব শুরু হয় এক শান্ত পরিবেশে। উপস্থিত ছিলেন গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা ও তাহিরের পরিবারের সদস্যরা। শোকাবহ এই পরিবেশেই জোর করেই জানাজায় যোগ দেওয়ার চেষ্টা করে লস্কর-ই-তৈবার কমান্ডার রিজওয়ান হানিফ। এর পরেই দেখা দেয় বিশৃঙ্খলা। তাহিরের পরিবার আগেই জানিয়ে দিয়েছিল, জানাজায় যেন লস্করের কোনও প্রতিনিধি যোগ না দেয়। আরুশি ভাট নামে একজন সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, #পাহেলগাঁও জঙ্গি হাবিব তাহিরের জানাজা-গায়েব খাই গালা, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে অনুষ্ঠিত হয়। এটি পাকিস্তানের তরফে সন্ত্রাসবাদের প্রশংসা। একটি দেশ (Terrorist Tahir Habib) যে খুনিদের পূজা করে, তারা কখনওই ‘ভিকটিম’ হতে পারে না।
#সন্ত্রাসবাদী_রাষ্ট্র_পাকিস্তান (POK)।

লস্কর কমান্ডারকে ঘাড়ধাক্কা

জানাজায় উপস্থিত লোকজন হানিফকে যোগ দিতে বাধা দিলে তার সাঙ্গোপাঙ্গোরা (পড়়ুন, লস্করের সশস্ত্র জঙ্গিরা) তাঁদের দিকে আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে ভয় দেখাতে থাকে। এতেই খেপে যান স্থানীয়রা।  বহু বছর ধরে সন্ত্রাসবাদের জেরে ক্লান্ত গ্রামবাসীরা তাদের তাড়া করেন। একপ্রকার বাধ্য হয়েই পিছু হঠে হানিফ-বাহিনী। স্থানীয়দের এই নজিরবিহীন প্রতিবাদকে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দাদের মানসিকতায় বদলের এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ থেকে স্পষ্ট যে, পাকিস্তান সরকারের মদতপুষ্ট জঙ্গিদের প্রতি সাধারণ মানুষের মোহভঙ্গ হয়েছে। বিশেষত সেভাবে, যেভাবে লস্করের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলি বহু বছর ধরে খাই গালার মতো অঞ্চলগুলিতে সন্ত্রাসবাদ ছড়ানো ও সেখানকার তরুণদের নিয়োগের কাজ করে এসেছে।

দিন বদলাচ্ছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে

বহু বছর ধরে ভয় ও জোরজবরদস্তি করে এই ভিন্নমতটাকেই দমন করে রেখেছিল জঙ্গিরা। এখন যে স্থানীয়রা আর জঙ্গিদের পরোয়া করেন না, এই ঘটনায়ই তা স্পষ্ট। শোনা যাচ্ছে, খাই গালার বাসিন্দারা জঙ্গিদের এবং তাদের নিয়োগকারীদের সামাজিক বয়কটের পরিকল্পনা করছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এটি পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে পরিচালিত জঙ্গি নেটওয়ার্কগুলির উদ্দেশে একটি জোরালো বার্তা (Terrorist Tahir Habib)। এই ঘটনাটি ভারতের সাম্প্রতিক কঠোর অবস্থানের প্রেক্ষাপটেও এসেছে, বিশেষ করে ‘অপারেশন সিঁদুরের মতো সামরিক অভিযানের মাধ্যমে, যা পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের পাল্টা হিসেবে শুরু হয়েছিল। যদিও ‘সিঁদুর’ মূলত একটি সামরিক মিশন, তবুও এর মানসিক ও সামাজিক প্রভাব সীমান্ত পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে, যার প্রতিফলন খাই গালায় স্থানীয়দের এই প্রতিরোধে স্পষ্ট।

ভারতের বহুমাত্রিক কৌশলের সাফল্যের ইঙ্গিত

রাজনৈতিক মহলের মতে, এই পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এটি শুধু কাশ্মীরে পাকিস্তানি জঙ্গিদের যোগ সম্পর্কে ভারতের দাবিকে মান্যতাই দেয় না, বরং ভারতের বহুমাত্রিক কৌশলের সাফল্যের ইঙ্গিতও দেয় (POK)। এই কৌশলের মধ্যে রয়েছে সুনির্দিষ্ট সামরিক অভিযান, পরিকাঠামো উন্নয়ন, এবং জঙ্গিবাদবিরোধী প্রচেষ্টা। এর সম্মিলিত প্রভাব এখন কেবল জম্মু ও কাশ্মীরেই নয়, বরং পাকিস্তানের নিজস্ব ভূখণ্ডেও টের পাওয়া যাচ্ছে, যেখানে সাধারণ মানুষ ক্রমশ সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছেন। লস্কর-ই-তৈবায় যোগ দেওয়ার আগে তাহির যুক্ত ছিল ইসলামী জমিয়তে তালবা এবং স্টুডেন্ট লিবারেশন ফ্রন্টের সঙ্গে। এগুলি পাকিস্তানের জঙ্গি তরুণদের আদর্শিক প্রস্তুতির প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে তার কর্মজীবন তাকে প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ দেয়। এটাকেই সে লস্করের জঙ্গি কার্যকলাপে কাজে লাগায় (Terrorist Tahir Habib)।

পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী পরিকাঠামো টিকে থাকা নিয়েও প্রশ্ন

গোয়েন্দা সংস্থার রেকর্ডে সে ‘আফগানি’ নামেই পরিচিত। এটি তার সদোজাই পাঠান বংশের প্রতি ইঙ্গিত দেয়। এই সম্প্রদায়টি ১৮শ শতকে আফগানিস্তান থেকে অভিবাসিত হয় এবং ঐতিহাসিকভাবে বিদেশি শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের জন্য পরিচিত ছিল। এখন সেই সম্প্রদায় আর ভারতের বিরুদ্ধে নয়, বরং পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্বশীল যুদ্ধের দমনমূলক ছায়ার বিরুদ্ধেই নতুন ধরনের প্রতিরোধ দেখাচ্ছে। স্থানীয় এক বাসিন্দার জানাজায় লস্করের উপস্থিতিকে জনসাধারণের প্রত্যাখ্যান এবং গ্রামবাসীদের সাহসী প্রতিরোধ এই অঞ্চলের অভ্যন্তরীণ গতিবিধিতে এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।এই ঘটনা একই সঙ্গে (POK) পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী পরিকাঠামো টিকে থাকা নিয়েও গুরুতর প্রশ্ন তোলে, বিশেষ করে যখন স্থানীয় জনগণ বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন (Terrorist Tahir Habib)।

ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে এই ঘটনা তাদের কৌশলের এক সুস্পষ্ট সাফল্য প্রমাণ করে, যে হাবিবের মতো চাঁইদের নিকেশ করলে শুধু সন্ত্রাসী শক্তি দুর্বল হয় না, বরং ভয়ের দ্বারা দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবিত জনগণের মধ্যে প্রতিরোধের বীজও বপন করা হয়। খাই গালায় যা ঘটেছে, তা আপাত দৃষ্টিতে ছোট্ট একটি গ্রামের সংঘর্ষ মনে হলেও, এর তাৎপর্য ব্যাপক (Terrorist Tahir Habib)।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share