মাধ্যম ডেস্ক নিউজ: নেশন ফার্স্ট। অর্থাৎ দেশ আগে। ঠিক এমন মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী মোদি (PM Modi)। ২০২৫ সালের বিজয় দশমীতেই শতবর্ষে পদার্পণ করেছে আরএসএস। এবার এই সামাজিক সংগঠনের হয়ে সমাজমাধ্যমে কলম ধরেছেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদি। বুধবার নতুন দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং সেখাওয়াত এবং সংঘের (RSS at 100) সর কার্যবাহ দত্তাত্রেয় হোসাবেলের উপস্থিতিতে নরেন্দ্র মোদি শতবর্ষ উপলক্ষে ডাকটিকিট এবং মুদ্রা প্রকাশ করেছেন। শতবর্ষের এই পুরাতন সামাজিক সংগঠন কীভাবে ব্যক্তি নির্মাণ করে? ব্যক্তি থেকে পরিবার এবং পরিবার থেকে দেশ তথা সমাজ ও রাষ্ট্র নির্মাণের কথাই বৃহস্পতিবার, বিজয় দশমীর দিন নিজের পোস্টে তুলে ধরেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী।
নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ (PM Modi)
প্রধানমন্ত্রী (PM Modi) আরএসএস-এর উপর একটি বিশেষ প্রবন্ধ রচনা করেছেন। সেই প্রবন্ধে সংঘের কাজ সম্পর্কে নানা দিক তুলে ধরেছেন। এরপর নিজের লেখাটি যে ব্লগে প্রকাশ পেয়েছে তা এক্স হ্যান্ডলের তুলে ধরেছেন। মোদি রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ সম্পর্কে লিখেছেন, “একশ বছর আগে বিজয়দশমীর দিনেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। দীর্ঘ সময় ধরে অসংখ্য স্বয়ং সেবক এই সংকল্পকে বাস্তবায়নের জন্য নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। আমি সংঘের (RSS at 100) প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করছি। গত ১০০ বছর ধরে ভারত নির্মাণ এবং সেবা কাজে আরএসএস ব্যাপক ভাবে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে।”
অহংকার মুক্তির আশ্রয়স্থল শাখা
আরএসএস সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী (PM Modi) লিখেছেন, সংঘ হল পুণ্যময় অবতার। স্বয়ংসেবকরা সামজসেবা, শিক্ষা, নারীর প্রগতি, জনজাতি সমাজের কল্যাণ, জরুরি সঙ্কটের সময় ত্রাণকাজ, এককথায় সকল স্তরে আরএসএস সামাজিক দায়বদ্ধতায় এগিয়ে থেকে কাজ করে আসছে গত ১০০ বছর ধরে। আরএসএস হল একটি নদীর মতো। তার সঙ্গে স্পর্শে থাকা সব কিছুকেই লালন পালন করে সে। নিজের সঙ্গে মিলিয়ে মিশিয়ে নেয়। দেশপ্রেম, ঐতিহ্য সংরক্ষণ, পরম্পরা, সংস্কৃতি, ধর্ম, দর্শন এবং ইতিহাসবোধের প্রতি শ্রদ্ধা ভাবকে পুনঃস্মরণ করার কাজ করে সংঘ। সংঘের শাখায় নিয়মিত স্বয়ংসেবকরা এই সব অনুশীলন করেন। মোদির ভাবনায় শাখাই (RSS at 100) হল অহংকার মুক্তির আশ্রয়স্থল। আবার এই শাখাই মানুষকে নিঃস্বার্থ করে। এই দুইয়ে সমন্বয়েই ব্যক্তি নির্মাণ হয়।
শতবর্ষে মাইলফলেক সংঘ
অপর দিকে ব্রিটিশ ভারত তথা পরাধীন ভারতেও শত প্রতিকূলতার মধ্যেও সংঘ নিজের মতো করে সমাজ-রাষ্ট্র-দেশ জাগরণের নিরলস ভাবে কাজ করে গিয়েছে। সামাজিক মুক্তি, বৈষম্য এবং অস্পৃশ্যতার বিরদ্ধে আরএসএস লাগাতার অভিযান চালিয়ে হিন্দু সমাজকে এক করার কাজ করে গিয়েছে। জাতিভেদ বর্ণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চালাচ্ছে সংগঠন। সাম্প্রদায়িক হিংসা কবলিত এলাকায় নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়িয়ে দেশের এক ও অখণ্ডতার বার্তা দেয় সংঘ। সামাজিক সম্প্রীতি, ধর্মান্তরণ, হিন্দুত্ব জাগরণে বিশেষ বিশেষ অভিযান চালিয়েছে সঙ্ঘ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi) বলেন, “আদিবাসী, বনবাসী, তফশিলি জাতিকে মুখ্যধারায় আনার জন্য সামাজিক কাজে নেতৃত্ব দিয়েছে আরএসএস। সংঘ নিপীড়িত মানুষের পাশে বারবার দুর্যোগে ত্রাণ নিয়ে সবার আগে পৌঁছে গিয়েছে। সংঘের স্বয়ংসেবকরা মনে করেন সর্বপরি রাষ্ট্র আগে। তাইতো দেশ ভক্তি, রাষ্ট্রভক্তির সঙ্গে কোনও দিন আপোষ করেনা স্বয়ংসেবকরা।” সংঘ কাজের মধ্যে জনসংখ্যার ভারসাম্য, পারিবারিক মূল্যবোধ, পরিবেশ রক্ষা, আত্মীয়তা বোধ, স্ব-এর বোধ এবং নাগরিক কর্তব্যের মতো বিষয়গুলিকে ব্যাপক প্রশংসা করেছেন নরেন্দ্র মোদি। তাই সংঘ (RSS at 100) কাজের এই দৃষ্টান্তগুলি শতবর্ষে মাইলফলেকের মতো কাজ করবে।
Leave a Reply