তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
দেশ জুড়ে বাড়ছে হাড়ের ক্ষয় (Bone Decay) রোগ। ভারতের মহিলাদের মধ্যে ৬০ শতাংশের বেশি হাড়ের সমস্যায় ভোগেন। বাদ নেই শিশুরাও। বহু ভারতীয় শিশু হাড়ের রোগে আক্রান্ত। বয়স চল্লিশের চৌকাঠ পেরোলেই অনেকে কোমড় ও হাঁটুর ব্যথায় কাবু হচ্ছেন। আর চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, হাড়ের সমস্যার জন্যই কোমড়, হাঁটুর যন্ত্রণার উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। দীর্ঘসময় একনাগাড়ে হাঁটাচলা করতেও সমস্যা হচ্ছে। অনেকেই হাড়ের সমস্যার জেরে সুস্থ জীবন যাপন করতে পারছেন না। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, সতর্কতা জরুরি। প্রথম থেকেই সচেতন না হলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোগান্তি আরও বাড়বে। এর ফলে স্বাভাবিক জীবন যাপনে অসুবিধা হবে।
কেন হাড়ের সমস্যা বাড়ছে?
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, হাড়ের সমস্যা (Bone Decay) বাড়ার অন্যতম কারণ পুষ্টির সমস্যা। তাঁরা জানাচ্ছেন, ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে ভিটামিনের অভাব হাড়ের সমস্যা বাড়াচ্ছে। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়ামের পাশপাশি ভিটামিন কে-র (Vitamin K) অভাব দেখা দিচ্ছে। অধিকাংশ ভারতীয় বিশেষত তরুণ প্রজন্মদের মধ্যে ভিটামিন কে-র অভাব বাড়ছে। যার জেরেই হাড়ের সমস্যায় আক্রান্তের সংখ্যাও এ দেশে উদ্বেগজনক ভাবে বাড়ছে। তাই চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, নিয়মিত ভিটামিন কে জাতীয় খাবার খেলে হাড়ের সমস্যা কমবে।
কেন হাড়ের জন্য ভিটামিন কে জরুরি?
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ভিটামিন কে (Vitamin K) হাড়ের ভিতরের মজ্জা অর্থাৎ অস্থি মজ্জার জন্য জরুরি। অস্থি মজ্জা ঠিক রাখতে ভিটামিন কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পাশপাশি ভিটামিন কে পেশির তন্তু শক্তিশালী করতেও সাহায্য করে। তাঁরা জানাচ্ছেন, পেশির তন্তু শক্তিশালী হলে তবেই শরীরের একাধিক কাজের এনার্জি পাওয়া যায়। কাজ করাও সহজ হয়। অস্থি মজ্জা ঠিক থাকলে হাড় ভেঙে (Bone Decay) যাওয়ার ঝুঁকিও কমে। তাই শরীরের কাঠামো মজবুত করতে ভিটামিন কে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কীভাবে পর্যাপ্ত ভিটামিন কে পাওয়া যাবে?
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ভিটামিন কে-র (Vitamin K) ঘাটতি পূরণ করার জন্য ঠিকমতো পুষ্টিকর খাবার নিয়মিত খাওয়া জরুরি। তাঁরা জানাচ্ছেন, হাড়ের রোগ রুখতে অনেকেই নিয়মিত ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবারের দিকে নজর দেন। কিন্তু হাড় মজবুত (Strong Bones) করতে ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি ভিটামিন কে জাতীয় খাবার খাওয়া সমান জরুরি। পুষ্টিকর খাবার শরীর সুস্থ রাখার মূল চাবিকাঠি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
নিয়মিত শাক খাওয়া জরুরি!
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, খাওয়ার শুরুতে শাক খাওয়ার রেওয়াজ বহু পুরোনো। কিন্তু আধুনিক ব্যস্ত জীবনে অনেকেই নিয়মিত শাক খান না। ওয়ান পট মিল অর্থাৎ, একরকম খাবারেই পেট ভরিয়ে ফেলেন। আর তার জেরেই বাড়ছে বিপত্তি। পুষ্টিবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, শাক হলো ভিটমিন কে-র সবচেয়ে বড় উৎস। যে কোনও রকম শাক থেকে সহজেই ভিটামিন কে পাওয়া যায়। বিশেষত পালং শাক, মেথির শাকের মতো সবুজ পাতা শরীরে ভিটমিন কে জোগান সহজ করে।
ব্রকোলি ভিটামিন কে জোগান দেবে!
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ব্রকোলি হাড়ের জন্য বিশেষ উপকারি। তাঁরা জানাচ্ছেন, ব্রকোলি ভিটামিন কে সমৃদ্ধ একটি খাবার। নিয়মিত ব্রকোলি খেলে শরীর সহজেই ভিটামিন কে (Vitamin K) পাবে। ব্রকোলি রোস্ট কিংবা তরকারি হিসাবে সপ্তাহে অন্তত দুই থেকে তিন দিন খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, এই সব্জি নিয়মিত খেলে হাড়ের রোগের (Bone Decay) ঝুঁকি কমবে।
রোজ একটি ডিম খেলে কমবে সমস্যা!
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ভিটামিন কে-র অন্যতম উৎস ডিম। ডিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে থাকে। তাই নিয়মিত একটি ডিম খেলে শরীরে ক্যালসিয়াম, প্রোটিনের পাশপাশি ভিটামিন কে-র জোগান ঠিকমতো হয়। পুষ্টিবিদদের একাংশের পরামর্শ, শিশুদের নিয়মিত একটি ডিম খাওয়ানো জরুরি। ডিমের পুষ্টিগুণ প্রচুর। একাধিক ভিটামিনের চাহিদাও ডিম সহজেই পূরণ করে। তাই ডিম নিয়মিত খেলে শিশুদের ও হাড়ের রোগের (Bone Decay) ঝুঁকি কমবে।
কিউই জাতীয় ফল!
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, কিউই জাতীয় ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে (Vitamin K) থাকে। তাই সপ্তাহে অন্তত দুদিন কিউই খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, এই ধরনের ফল থেকে শরীর সহজেই ভিটামিন কে পাবে। ফলে হাড়ের রোগের ঝুঁকিও কমবে।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
Leave a Reply