India Beats Pakistan: ‘‘ভারত-পাকিস্তান আর কোনও লড়াই-ই নয়’’! অভিষেক-গিলের দাপটে ম্যাচ জিতে সাহসী জবাব সূর্যর

india beats pakistan in asia cup 2025 super four match abhishek sharma shubhman gil proves pak bollowing attack cant fight wth bharat

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারত বনাম পাকিস্তান এখন আর কোনও লড়াই-ই নয়। এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচ ৬ উইকেটে জিতে পাকিস্তানের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দিলেন ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। ভারত পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে মাঠের পাশাপাশি মাঠের বাইরেও মাইন্ড গেমে নেমেছিল পাকিস্তান। সূর্যকুমার যাদবের বিরুদ্ধে অভিযোগের হুংকার, এশিয়া কাপ বয়কটের দাবি, একাধিক সমস্যা তৈরি করে আলোচনায় থাকার চেষ্টায় ছিল। কিন্তু খেলার মাঠে পারফরম্যান্স সেই তলানিতেই। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর এ দিনও দু’দলের ক্রিকেটারেরা হাত মেলাননি। তবে আগের দিনের মতো ভারত সাজঘরের দরজা বন্ধ করেনি। আসলে খেলাটা তো মাঠেই জিতে গিয়েছে ভারত।

ভারতকে থামানোর ক্ষমতা নেই

ভারতকে থামানোর ক্ষমতা নেই পাকিস্তানের। সেটাই ফের দেখা গেল এশিয়া কাপের সুপার ফোরের লড়াইয়ে। ভারত জেতার পরে শোনা গেল ‘চক দে’। ম্যাচ জেতায় সুপার ফোরের পয়েন্ট তালিকায় সবার উপরে চলে গেল ভারত। সূর্যকে সাংবাদিক সম্মেলনে এক পাকিস্তানি সাংবাদিক জিজ্ঞাসা করেন, এই ‘ঐতিহাসিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা’ নিয়ে তিনি কী বলবেন? ভারত অধিনায়ক বলেন, ‘‘এই প্রশ্নের উত্তরে আমি একটা কথা বলতে চাই। আমার মনে হয় আপনাদের সকলের ভারত-পাকিস্তান লড়াই নিয়ে এ বার প্রশ্ন করা বন্ধ করা উচিত।’’ এখানেই থেমে থাকেননি ভারত অধিনায়ক। বলেন, ‘‘আমার মতে, যদি দুটো দল ১৫-২০টা ম্যাচ খেলে এবং স্কোরলাইন ৭-৭, অথবা ৮-৭ হয়, তবেই সেটাকে ভালো ক্রিকেট বলা যায়। আমি সঠিক পরিসংখ্যান জানি না। কিন্তু একটা দলের পক্ষে যদি স্কোরলাইন ১৩-০, ১০-১ হয়, তা হলে এখন আর এটা কোনও লড়াই নয়। আর কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়।’’ সত্যিই ক্রিকেটে গত ১৫ বছরে ভারত পাকিস্তানের উপর আধিপত্য বিস্তার করেছে। ৩১টি ম্যাচের মধ্যে ২৩টিতেই জিতেছে ভারত।

পাকিস্তানকে জবাব দেওয়ার প্রয়োজন ছিল

পরিসংখ্যান যাই হোক, ভারত-পাকিস্তান লড়াই তা সে বাইশ গজেও হোক আর সীমান্তে সবসময় উত্তেজনার। রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় বারবার তা চোখে পড়েছে। ম্যাচে ভারতের ইনিংস চলাকালীন শাহিন আফ্রিদিকে কোনও কথার জবাব দিতে এগিয়ে গিয়েছিলেন শুভমন গিল। কয়েক বল পরেই আবার অন্য এক দৃশ্য। এ বার হ্যারিস রউফের সঙ্গে ঝামেলা হয় অভিষেক শর্মার। তখন স্পষ্ট বোঝা যায়নি কী হয়েছে। তবে বিষয়টি যে গুরুতর ছিল এটা ম্যাচের পরেই বুঝিয়ে দিয়েছেন অভিষেক। জানিয়েছেন, পাকিস্তান বড্ড বেশি বাড়াবাড়ি করছিল। সেটারই জবাব ব্যাট হাতে দিয়েছেন তিনি। ম্যাচ শেষে অভিষেক বলেন, “পাকিস্তানের বোলারেরা বেশি বাড়াবাড়ি করছিল। কোনও কারণ ছাড়াই আমাদের দিকে তেড়ে আসছিল, তর্ক করছিল। আমার সেটা একেবারেই পছন্দ হয়নি। তাই জন্যই ওদের জবাব দেওয়া দরকার ছিল। দলকে জেতাতে চেয়েছিলাম। সেটা পেরেছি।” এশিয়া কাপের চারটি ম্যাচেই ভালো খেলেছেন অভিষেক। রবিবারই প্রথম অর্ধশতরান এল তাঁর ব্যাট থেকে। সাফল্যের নেপথ্যে দলের সমর্থনের কথা উল্লেখ করেছেন অভিষেক। বলেছেন, “যখন দেখবেন কোনও ব্যাটার এত ভালো খেলছে, তখন বুঝবেন নিশ্চয়ই তাঁর পাশে দল রয়েছে। কোচ এবং অধিনায়ক আমাকে খুবই সমর্থন করে। তাই জন্যই এত ভালো খেলার সাহস পাই।”

শুভমন-অভিষেক ঝড়

টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ১৭১ খুব একটা খারাপ স্কোর নয়। পাকিস্তান প্রথমে ব্যাট করে তুলেছিল ৫ উইকেটে ১৭১ রান। সেই রান তাড়া করতে নেমে ভারত দাদাগিরি দেখাল। অভিষেক শর্মা ও শুভমান গিলের ব্যাট শুরু থেকেই চলতে শুরু করল। শাহিন আফ্রিদিকে প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে অভিষেক রান তাড়া শুরু করেছিলেন। খেলা যত এগোল ভারতের দুই ওপেনার ততই মারমুখী ব্যাটিং শুরু করে দিলেন। অভিষেক শর্মা ও শুভমান গিলের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ধুয়ে গেল পাক বোলিং আক্রমণ। ৯.৫ ওভারেই ভারত ১০৫ করে ফেলে। শুভমন গিল ৪৭ রানে আশরাফের বলে বোল্ড হন। রুদ্রমূর্তি ধরেন অভিষেক। নাগাড়ে আক্রমণ করে যান পাক বোলারদের। পাক বোলাররা কোথায় বল ফেলবেন তাই বুঝে উঠতে পারছিলেন না। শেষমেশ আবরারের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। যাওয়ার আগে ৩৯ বলে ৭৪ করে যান তিনি। ৬টি চার ও পাঁচটি ছক্কা মারেন তিনি। আউট হওয়ার আগের বলেই ছক্কা মেরেছিলেন অভিষেক। পরের বলেও মারতে গিয়ে ডাগ আউটে ফেরেন। বাকি কাজটা সারেন তিলক (১৯ বলে ৩০ অপরাজিত) ও হার্দিক। ৭ বল বাকি থাকতে ছয় উইকেটে ভারত ম্যাচ জেতে।

পাকিস্তান ম্যাচই রানে ফেরার মঞ্চ

তিন ম্যাচে ৩৫ রান করা শুভমনকে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য রানে ফিরতেই হত। পাকিস্তান ম্যাচেই সেই মঞ্চটা বেছে নিয়েছিলেন শুভমন। শনিবার ঐচ্ছিক অনুশীলন থাকলেও তিনি অনুশীলন করেছিলেন। আর অনুশীলন করিয়েছিলেন তাঁর ওপেনিং সতীর্থ তথা ছোটবেলার বন্ধু অভিষেক শর্মা। তার প্রতিফলন দেখা গেল রবিবার। আকাশে শট খেলার দিকে নজর দেননি শুভমন। বরং মাটিতে রেখে বল বাউন্ডারিতে পাঠানোর চেষ্টা করেছেন। ইনিংসে আটটি চারই তার প্রমাণ। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে শুভমনের সঙ্গে শতরানের জুটি গড়ে ভারতের চাপ অনেকটাই হালকা করে দেন অভিষেক। ছোটবেলা থেকেই দু’জনে একসঙ্গে খেলেছেন। সেই প্রসঙ্গে বললেন, “স্কুলে পড়ার সময় থেকেই আমরা একসঙ্গে খেলছি। একে অপরকে সঙ্গ দিতে পছন্দ করি। আগেই ঠিক করে নিয়েছিলাম, আজই কিছু একটা করতে হবে। যে ভাবে শুভমন খেলছিল সেটা দারুণ লেগেছে।”

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share