মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাজ্যে এসআইআর নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরের মধ্যেই বুধবার দিল্লি গেলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। দেখা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah) সঙ্গে। শাহের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি, এদিন জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দফতরেও (Election Commission) যান শুভেন্দু। দেখা করেন নির্বাচন কমিশনার বিবেক জোশীর সঙ্গে।
অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাত
বুধবার দিল্লি গিয়েছিলেন শুভেন্দু। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীই ডেকে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে। সংসদে অমিত শাহের অফিসে তাঁদের বৈঠক হয়। মিনিট ২৫ কথা হয়। তবে কী কথা হয়েছে, তা নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেননি শুভেন্দু। সূত্রের খবর, রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে শাহের সঙ্গে কথা হয়েছে শুভেন্দুর।
নির্বাচন কমিশনের দফতরে শুভেন্দু
সেইসঙ্গে দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দফতরেও যান শুভেন্দু। দেখা করেন নির্বাচন কমিশনার বিবেক জোশীর সঙ্গে। জানা গিয়েছে, কমিশনে একাধিক অভিযোগ জানান তিনি। দলের নির্দেশে তিনি নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন বলে বিরোধী দলনেতা জানান। নির্বাচন কমিশনের দফতর থেকে বেরিয়ে শুভেন্দু বলেন, “২৬, ২৭ ও ২৮ নভেম্বর বিএলও-দের কাছ থেকে ওটিপি নিয়ে যেভাবে ১ কোটি ২৫ লক্ষ নাম ডিজিটাইজড করা হয়েছে, সেটা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক গতিবিধি। অনেক বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীর বাবার নাম, মায়ের নাম পাল্টে দিয়ে এটা করা হয়েছে। একাধিক মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় এটা দেখবেন।”
কমিশনকে চিঠিতে শুভেন্দুর দাবি
এসআইআর এর প্রথম দফার কাজকর্মে বাংলায় বুথ লেবেল অফিসারদের নানাভাবে তৃণমূল ম্যানেজ করেছে বলে বিজেপির অভিযোগ। এমন পরিস্থিতিতে এসআইআর (SIR) এর দ্বিতীয় দফা প্রক্রিয়া শুরুর আগে কমিশনকে মঙ্গলবার চিঠি দেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । মঙ্গলবার পাঠানো চিঠিতে কমিশনের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করে শুভেন্দু সতর্ক করেছেন, “এই পর্যায়ে কোনও আপস হলে চিরস্থায়ী ক্ষতি হবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকার সততায়।” চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR)-এর দ্বিতীয় ধাপ পুরো প্রক্রিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কারণ, এই ধাপেই দাবি-আপত্তি, নথি জমা ও খতিয়ে দেখার কাজ হয়। সেই কাজেই নাকি ‘অতিমাত্রায় অনাকাঙ্ক্ষিত প্রভাব’ খাটানো হচ্ছে বলে “নির্ভরযোগ্য ও ধারাবাহিক রিপোর্ট” পাচ্ছেন তিনি। তাঁর কথায়, এই অভিযোগগুলির কারণেই প্রশ্নের মুখে পড়ছে এসআইআর-এর নিরপেক্ষতা।
মাইক্রো অবজার্ভারের তত্ত্বাবধানে স্ক্রুটিনি
শুভেন্দুর দাবি, এসআইআর এর দ্বিতীয় ধাপকে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও নিরাপদ রাখতে নির্বাচন কমিশনকে অবিলম্বে দু’টি ব্যবস্থা নিতে হবে। এক, পুরো প্রক্রিয়াই রাখতে হবে মাইক্রো অবজার্ভারের কঠোর তত্ত্বাবধানে। এবং নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে এই মাইক্রো অবজার্ভারদের কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী হওয়া জরুরি। দুই, দাবি-আপত্তি শুনানি ও যাচাইয়ের কাজ ১০০ শতাংশ সিসিটিভি–র আওতায় রাখতে হবে। এবং সেই সমস্ত ফুটেজ সংরক্ষণ করতে হবে এসআইআর-এর শেষ দিন পর্যন্ত। তাঁর দাবি, এটা না হলে কারচুপি আটকানো অসম্ভব। চিঠিতে আরও লেখা আছে, ভোটার তালিকা দ্রুত ত্রুটি মুক্ত না হলে ভবিষ্যতের নির্বাচনী প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই নির্বাচন কমিশনকে “অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করে স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও কঠোর নজরদারি” নিশ্চিত করার অনুরোধ জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা।

Leave a Reply