Durga Puja 2025: কেন করা হয় কুমারী পুজো? বয়স অনুযায়ী কুমারীদের কী কী নামে ডাকা হয়?

durga puja 2025 mahashtami rituals significance of kumari puja tradition

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দুর্গাপুজোর (Durga Puja 2025) অষ্টমী মানেই সকালে স্নান করে নতুন জামাকাপড় পরে অঞ্জলি দেওয়া। তবে এদিন আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ রীতি হল কুমারী পুজো (Kumari Puja)। কোনও কুমারীকে দেবীজ্ঞানে পুজো করা হয় এদিন। হিন্দুধর্ম বিশ্বাসীদের মতে, জীব সেবাই শিব সেবা। অর্থাৎ জীবের মধ্যে দিয়েই শিব বা দেবতাকে খোঁজা। শাস্ত্রজ্ঞদের একাংশের মতে, সেই কারণেই দুর্গাপুজোয় হয় কুমারী পুজো।

কেন করা হয় কুমারী পুজো?

শাস্ত্রানুযায়ী, কুমারী পুজোর (Durga Puja 2025) উৎপত্তি হয় কোলাসুরকে বধ করার মধ্যে দিয়ে। গল্পে বলা আছে, কোলাসুর নামে এক অসুর স্বর্গ ও মর্ত্যের অধিকার নেওয়ার ফলে দেবতাগণ মহাকালীর শরণাপন্ন হন। দেবগণের ডাকে সাড়া দিয়ে দেবী পুর্নজন্ম নিয়ে কুমারীরূপে কোলাসুরকে বধ করেন। এর ফলে মর্ত্যে কুমারী পুজোর (Kumari Puja) প্রচলন শুরু হয়। বর্ণনা অনুযায়ী, কুমারী পুজোতে কোনও জাতি, ধর্মভেদ নেই। তবে সাধারণত ব্রাক্ষণ কন্যাকেই পুজো করা হয়। এছাড়াও সেকালের ঋষি-মুনিরা প্রকৃতিকে নারীর সমান মনে করতেন। তাই কুমারী পুজোর মাধ্যমে প্রকৃতিকে পুজো করতেন তাঁরা। কারণ, তাঁরা মনে করতেন, মানুষের মধ্যেই রয়েছে ঈশ্বর। বিশেষ করে যাদের মন সৎ, যারা নিষ্পাপ, তাদের মধ্যেই ভগবানের প্রকট সবথেকে বেশি। এই গুণ কেবলমাত্র কুমারীদের মধ্যে থাকতে পারে, এই ভেবে তাদের দেবীরূপে পুজো করা হয়। আবার শাস্ত্রমতে, এক থেকে ষোল বছর বয়স পর্যন্ত ঋতুমতী না হওয়া বালিকাদেরই কুমারী রূপে পুজো (Kumari Puja) করা হয়। নতুন বস্ত্র, ফুলের মালা, মুকুট, পায়ে আলতা, কপালে সিঁদুরের টিপ ও তিলক পরিয়ে কুমারীদের সাজিয়ে তোলা হয়। বয়সভেদে কুমারীর নাম রয়েছে ভিন্ন।

কুমারীদের কী নামে ডাকা হয়?

এক বছরের কুমারীর নাম সন্ধ্যা। দু’বছরের কুমারী সরস্বতী নামে খ্যাতা। তিন বছরের কন্যাকে বলা হয় ত্রিধামূর্তি। চার বছরের কন্যা দেবী কালিকা নামে পরিচিতা। পাঁচ বছরের কন্যা সুভগা নামে খ্যাতা। ছয় বছরের কুমারীকে বলা হয় উমা। কুমারীর বয়স সাত হলে তিনি মালিনী। বয়স আট হলে তিনি কুঞ্জিকা নামে পরিচিতা হবেন। নয় বছরের কুমারীকে বলা হয় কালসন্দর্ভা। কুমারীর বয়স দশ হলে তিনি হবেন অপরাজিতা। কুমারীর (Kumari Puja) বয়স এগারো হলে তিনি পরিচিত হবেন রুদ্রাণী রূপে। বারো বছরের কুমারী ভৈরবী হিসেবে পরিচিত। কুমারীর বয়স তেরো হলে তিনি হবেন মহালক্ষ্মী। চোদ্দ বছরের কুমারীকে বলা হয় পঠিনায়িকা। কুমারীর বয়স পনেরো হলে তিনি হবেন ক্ষেত্রজ্ঞা। আর ষোল কুমারী যদি ষোলো বছর বয়স্কা হন, তাহলে তিনি অম্বিকা নামে পরিচিত হবেন।

বেলুড় মঠে কবে শুরু হয় কুমারী পুজো?

১৯০১ সালে স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার বেলুড় মঠে প্রথম কুমারী পুজো (Kumari Puja) শুরু করেছিলেন। সেই থেকেই প্রতি বছর বেলুড়ে মহা ধুমধাম করে এই পুজোর প্রথা চলে আসছে। তবে, কুমারী পুজো সর্বত্র হয় না। যাঁদের পারিবারিক রীতি রয়েছে, তাঁদের বাড়িতে হয়। আর ইদানিং হচ্ছে সর্বজনীন পুজোগুলিতেও। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কুমারী পুজো হয় অষ্টমীতে। সপ্তমীতে যেহেতু দেবী আসেন গৃহস্থের বাড়িতে, তাই এদিন কুমারী পুজো হয় না। কুমারী পুজো হয় অষ্টমীর দিন। সন্ধিপুজোর আগে। তবে কোনও কোনও পরিবার কুমারী পুজো হয় নবমীতেও (Durga Puja 2025)। বৃহদ্ধর্মপুরাণ মতে, স্বয়ং মহামায়া কুমারী রূপে দেবতাদের সামনে আবির্ভূতা হয়ে বেলগাছে দেবীর বোধন করতে নির্দেশ দেন। সেই থেকে কুমারী পুজো হয়ে গিয়েছে দুর্গাপুজোর অঙ্গ।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share