মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ইতিহাস গড়ার পথে ইলন মাস্ক। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের তালিকার শীর্ষে থাকা টেসলার সিইও এবার ট্রিলিয়নিয়ার হওয়ার দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছেন। টেসলার শেয়ারহোল্ডাররা সম্প্রতি মাস্কের জন্য এক বিশাল বোনাস পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন, যা তাঁকে বিশ্বের প্রথম ট্রিলিয়ন ডলারের ব্যক্তি করে তুলতে পারে। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রায় ৭৫ শতাংশ শেয়ারহোল্ডার এই পরিকল্পনাকে সমর্থন করেন। বৈঠকে মাস্ক বলেন, “আমরা যে পর্যায়ে পৌঁছতে যাচ্ছি, তা শুধু টেসলার ভবিষ্যতের একটি নতুন অধ্যায় নয়, বরং একটি সম্পূর্ণ নতুন বই।”
কর্পোরেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্যাকেজ
টেসলার এই নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী, যদি মাস্ক কোম্পানির নির্ধারিত দীর্ঘমেয়াদি কর্মক্ষমতা লক্ষ্য অর্জন করতে পারেন, তাহলে তিনি ১ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারবেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, মাস্ক কোনো নিয়মিত বেতন গ্রহণ করেন না — তার আয় পুরোপুরি স্টক অপশনের ওপর নির্ভরশীল। নতুন এই প্যাকেজের আওতায় আগামী দশকে তিনি টেসলার প্রায় ৪২৩.৭ মিলিয়ন শেয়ার পেতে পারেন। যদি কোম্পানির বাজারমূল্য ৮.৫ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছে যায়, তাহলে মাস্কের আয় প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে।
টেসলার কাছে চ্যালেঞ্জ
চলতি আর্থিক বছরে (পড়ুন ২০২৫-’২৬) এখনও পর্যন্ত টেসলা যে দুর্দান্ত ব্যবসা করেছে, এমনটা নয়। কারণ সাম্প্রতিক সময়ে নানা কারণে কমেছে ইলেকট্রিক ভেহিকেল বা ইভির চাহিদা। এর প্রভাব টেসলার ব্যবসায় পড়েছে। সেখান থেকে সংস্থাকে কী ভাবে মাস্ক সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান, সেটাই এখন দেখার। বিশেষজ্ঞদের মতে, টেসলার এই লক্ষ্য পূরণ করতে হলে কোম্পানির শেয়ারমূল্য বর্তমান স্তর থেকে প্রায় ৪৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে হবে। যদি সেটাই ঘটে, তাহলে টেসলা এনভিডিয়াকে ছাড়িয়ে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানির আসনে বসবে। অর্থাৎ, মাস্কের সম্পদও নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে। অনুমান করা হচ্ছে, যদি মাস্ক এই প্যাকেজের ১২টি কিস্তির সবকটিই পান, তাহলে তার দৈনিক আয় হবে প্রায় ২৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই বেতন পরিকল্পনাকে ইতিমধ্যেই কর্পোরেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্যাকেজ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
লগ্নিকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা
গত বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর স্টকে লগ্নিকারীদের নিয়ে বার্ষিক সভার আয়োজন করে টেসলা। সেখানে মাস্কের স্টক-ভিত্তিক ক্ষতিপূরণ পরিকল্পনার পক্ষে ভোট দেন ৭৫ শতাংশ শেয়ার হোল্ডার। বাকি ১৫ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা অবশ্য রয়েছে টেসলার সিইও-র হাতেই। এই ভোটাভুটির পর তাঁর বিপুল বেতনে সংস্থার পরিচালন গোষ্ঠীর যে সিলমোহর পড়তে চলেছে, তা একরকম স্পষ্ট হয়ে যায়। ভোটাভুটি শেষ হতেই মাস্কের নামে জয়ধ্বনি দেন টেসলার শেয়ার হোল্ডারেরা। আর তাই সভাশেষের ভাষণে তাঁদেরও কৃতজ্ঞতায় ভরিয়ে দেন মার্কিন ধনকুবের।
আগামী এক দশকে আরও কয়েকজন ট্রিলিয়নিয়ার
বিশ্বে আগামী এক দশকে আরও কয়েকজন ট্রিলিয়নিয়ার উঠে আসতে পারেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নামগুলো হল—
এনভিডিয়া সিইও জেনসেন হুয়াং, যার কোম্পানি সম্প্রতি ৫ ট্রিলিয়ন ডলার মার্কেট ক্যাপ ছুঁয়েছিল,
ভারতের গৌতম আদানি,
ইন্দোনেশিয়ার প্রাজোগো পাংগেস্তু,
অ্যামাজনের জেফ বেজোস,
অরাকলের ল্যারি এলিসন,
মেটার মার্ক জাকারবার্গ,
এবং এলভিএমএইচের বার্নার্ড আরনল্ট।

Leave a Reply