মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কথায় বলে, সকাল বুঝিয়ে দেয় সারা দিনটা কেমন যাবে। ভারতের শুরুটা ভয় ধরাচ্ছে সমর্থকদের মনে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে ৫টি শতরান করেছেন ভারতীয় ব্যাটারা, তারপরও হার মানতে হল শুভমনদের। হেডিংলেতে ভারতকে ৫ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে ১-০ এগিয়ে গেলেন বেন স্টোকসেরা। এখনও চারটে টেস্ট বাকি। প্রথম টেস্টে হারের ধাক্কা কাটিয়ে ফেরা কঠিন ভারতের। হেডিংলে টেস্টের শেষ দিন নাটকীয় একটা লড়াই দেখার অপেক্ষায় ছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজের প্রথম টেস্টের পঞ্চম দিন বেন স্টোকসের দলের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৩৫০ রান। আর ভারতের জেতার জন্য প্রয়োজন ছিল ১০টি উইকেট। কিন্তু শেষটা ভালো হল না ভারতের। ইংরেজদের হাতে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করল ভারতের বোলার-ফিল্ডাররা।
হতশ্রী বোলিং-ফিল্ডিং
ভারতের বোলিং ও ফিল্ডিং নিয়ে যেন যত কম বলা যায় ততই ভালো! এ কথা বলার জায়গা আসতই না, যদি টিম ইন্ডিয়ার বোলাররা মান রাখতে পারতেন। যদি টিম ইন্ডিয়ার ক্রিকেটাররা ফিল্ডিংয়ে কিছুটা গোছানো হতেন। যে টিমের ফিল্ডারদের নিয়ে এত প্রশংসা হয়, সেখানে এমন ফিল্ডিং দেখে, ক্যাচের পর ক্যাচ মিস দেখে হতবাক অনেকে! গোটা ম্যাচে সাতটা ক্যাচ ফসকেছে ভারত। এর মধ্যে চারটি ফেলেছেন যশস্বী, দুটি পন্থ। যে জসপ্রীত বুমরাকে নিয়ে এত আলোচনা, যিনি প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নিলেন, সেই তিনিই কি না দ্বিতীয় ইনিংসে একটি উইকেটের দেখাও পেলেন না। স্টোকসদের বিরুদ্ধে হেডিংলে টেস্টের শেষ দিন বোলিংয়ে বুমরার ঝাঁঝ দেখাই গেল না। যার ফল চোখের সামনে বেন ডাকেটের ১৪৯, জ্যাকের ৬৫, রুটের ৫৩ নট আউট! সেই সুবাদে ৮৪ বল বাকি থাকতেই ৫ উইকেটে ম্যাচ জয় ইংল্যান্ডের।
কোহলি-হীন ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ লোয়ার-অর্ডার
ইংল্যান্ডে রওনা হওয়ার আগে কোচ গৌতম গম্ভীর বলেছিলেন, সেরা দল নিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। এই যদি সেরা দলের নমুনা হয়, তা হলে খারাপ দল কোনটা? চারটে ব্যাটার (যশস্বী, শুভমন, রাহুল ও পন্থ) আর দেড়খানা বোলার (বুমরা ও জাডেজা) নিয়ে আর যা-ই হোক, টেস্ট ম্যাচ জেতা যায় না। সিরিজ তো অনেক দূরের কথা। দুই ইনিংসেই ভারতের লোয়ার অর্ডার হতাশ করেছে। প্রথম ইনিংসে ৪১ রানে পড়েছে শেষ ৭ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে শেষ ৬ উইকেট পড়েছে ৩১ রানে। সেই কারণেই দুই ইনিংস মিলিয়ে পাঁচটা শতরানের পরেও হারতে হয়েছে ভারতকে। ব্যাটিংয়ের এই রোগ সারাতে না পারলে পরের টেস্টেও ফেরা মুশকিল। কারণ মার্ক উড, জফ্রা আর্চাররা ফিরলে আর করুণ দশা হবে বিরাট হীন ভারতীয় ব্যাটিংয়ের।
মনে পড়ল অধিনায়ক রোহিতকে
প্রশ্ন উঠতে বাধ্য অধিনায়ক শুভমনের নেতৃত্ব নিয়েও। দেখে মনে হল না, প্ল্যান বি, সি রয়েছে তাঁর কাছে। একই গতে বল করিয়ে গেলেন। প্রসিদ্ধ রান দিচ্ছেন দেখেও তাঁকে সরালেন না। রানের গতি কম থাকলে হয়তো এই ম্যাচ ড্র হতে পারত। শার্দূল নতুন বলে উইকেট নিতে পারেন। তাঁকে প্রথম ইনিংসে নতুন বল দিলেনই না শুভমন। প্রশ্ন উঠল তাঁর ফিল্ডিং সাজানো নিয়েও। রান বাঁচাবেন, না উইকেট তুলবেন, সেই ধন্দ কাটিয়ে উঠতে পারলেন না। টেস্ট ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব যে কতটা কঠিন তা হয়তো বুঝতে পারলেন শুভমন। ভারতের ক্রিকেট অনুরাগীরা বারবার মিস করলেন অধিনায়ক রোহিতকে।
Leave a Reply