Kasba Gangrape: বিকৃত কামনায় আসক্ত মনোজিৎ, রয়েছে অতীত অপরাধের ভয়ঙ্কর রেকর্ড, আগেও হয়েছে গ্রেফতার

Kasba Gangrape incident accused Monojit Mishra old case

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কসবার (Kasba Gangrape) আইন কলেজের ক্যাম্পাসেই ছাত্রীকে ধর্ষণে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা মনোজিৎ মিশ্র (Monojit Mishra) গ্রেফতার হতেই তার বিরুদ্ধে একের পর এক কুকীর্তির অভিযোগ সামনে আসতে শুরু করেছে। জানা গিয়েছে, বিয়ের প্রস্তার দিয়ে একাধিক বার মেয়েদের যৌন হেনস্থা ও শ্লীলতাহানি করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা মনোজিৎ। কেউ প্রতিবাদ করলেই তাঁকে মারধরও করত মনোজিৎ। মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ প্রায়ই মেয়েদের উদ্দেশ্য করে বলত, ‘তুই কি আমায় বিয়ে করবি?’ সহপাঠী ও কলেজের ছাত্রীরা জানিয়েছেন, এই কথাটি তার মুখ থেকে বারবার শোনা যেত। যদিও সব অভিযোগ লিখিত আকারে দায়ের করা হয়নি, তবু অনেকেই তার হাতে নির্যাতিত হয়েছেন।

গুণধর মনোজিতের একাধিক কীর্তি- ভাঙচুর, মারধর, শ্লীলতাহানি, অশ্লীল ছবি তোলা

মনোজিৎ ২০১৩ সালে কলেজে ভর্তি হয় (Kasba Gangrape)। কিন্তু তার খারাপ আচরণের কারণে ২০১৪ সালে তাকে কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর প্রভাব ব্যবহার করে ২০১৭ সালে পুনরায় কলেজে ভর্তি হয় মনোজিৎ। যদিও ২০২২ সালে তার পড়াশোনা শেষ হয়ে যায়, তবুও বহিরাগত হিসেবে নিয়মিত কলেজে উপস্থিত থাকত সে। তার বিরুদ্ধে নানা সময়ে গুন্ডাদের দিয়ে মারধরের হুমকির অভিযোগ ওঠে। চেতলা থানায় তার বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগও রয়েছে। বেআইনি অস্ত্র রাখার জন্য একবার তাকে গ্রেফতারও করা হয়। অনেক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তার বিরুদ্ধে রয়েছে। কেউ প্রতিবাদ করলে সে তাদের বাবা-মাকে গ্রেফতার করানোর হুমকি দিত। কলেজের কয়েকজন জুনিয়র ও সহপাঠী জানিয়েছেন, মনোজিৎ দীর্ঘদিন ধরে মেয়েদের প্রতি অশালীন মন্তব্য করত। মেয়েদের অশ্লীল ছবি ও ভিডিও তৈরি করে বিভিন্ন স্থানে ছড়াত। ২০১৬ সালে গুন্ডাদের সঙ্গে নিয়ে কলেজে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ তার বিরুদ্ধে রয়েছে। কলেজে শ্লীলতাহানি এবং মদের আসর বসানো তার কাছে স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল। কলেজ কর্তৃপক্ষ বা পুলিশ কেউই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সাহস দেখাতে পারেনি।

বিকৃত কামনার প্রতি আসক্ত ছিল মনোজিত (Kasba Gangrape)

কসবার গণধর্ষণকাণ্ড প্রকাশ্যে আসার (Kasba Gangrape) পরেই পুলিশ মনোজিৎ এবং তার সঙ্গীদের গ্রেফতার করে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মনোজিতের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে রাজ্যে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়েছে। পুলিশও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে পেয়েছে। এর ফলে মনোজিত ও তার সঙ্গীদের শাস্তি পেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। কসবা কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রের একাধিক কুকীর্তি ইতিমধ্যেই প্রকাশ পেয়েছে। কলেজ ক্যাম্পাসে তার প্রভাব ও দাপটের কথা বহু ছাত্রছাত্রী স্বীকার করেছেন। এবার তার বিকৃত মানসিকতার কিছু দৃষ্টান্তও সামনে এসেছে। মনোজিতের বন্ধু, জুনিয়র এবং ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, সে বিকৃত কামনার প্রতি আসক্ত ছিল এবং তাঁরা এ সংক্রান্ত নানা উদাহরণও তারা উপস্থাপন করেছেন।

কসবা কাণ্ডের অভিযুক্ত মনোজিতের আরও নানান কুকীর্তি (Kasba Gangrape)

দক্ষিণ কলকাতার ওই ল’কলেজের ক্যাম্পাসে খুবই দাপট ছিল গণধর্ষণ কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত মনোজিতের। ঘটনা সামনে আসতেই তার তৃণমূল যোগ সামনে এসেছে। দেখা গিয়েছে, তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে ছবিও। সেই সঙ্গেই রাজ্যজুড়ে শোরগোল ফেলেছে তার একাধিক কুকীর্তি। মনোজিতের বন্ধুবান্ধব, জুনিয়র থেকে শুরু করে ঘনিষ্ঠমহল বলছে, কসবা কাণ্ডের অভিযুক্তের বিকৃত চাহিদা মেটাতে অনেকেই নিজেদের মহিলা সহপাঠীর শরীরের নানান অংশের আপত্তিকর ছবি তুলতে বাধ্য হতেন ও সেগুলি মনোজিতকে দেখানো হত। শুধু তাই নয়, মনোজিৎ নিজেও তাঁর ফোনে মহিলাদের শরীরের নানান অঙ্গের ছবি তুলে রাখত বলে অভিযোগ। জানা যাচ্ছে, ওই ছবি ও ভিডিওগুলি মনোজিৎ তার ঘনিষ্ঠ মহলে শেয়ার করত। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে দাবি করা হয়েছে, অতীতেও মনোজিতের হাতে একাধিক ছাত্রী হেনস্তার শিকার হয়েছেন। সেই ঘটনাগুলিও সে নিজেই ক্যামেরায় ধারণ করত (Kasba Gangrape)। পরে সেগুলি শুধু নিজে দেখেই সন্তুষ্ট থাকত না, তার ঘনিষ্ঠ সঙ্গীদেরও তা দেখাত বলে অভিযোগ।

একাধিক মহিলা তার বিকৃত যৌন আচরণের শিকার হয়েছেন (Kasba Gangrape)

ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে, কসবা কাণ্ডের নির্যাতিতাকে মনোজিৎ বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। অভিযোগ, ক্যাম্পাসে কোনও নতুন ছাত্রীকে পছন্দ হলেই সে সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দিত। আর সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলে শুরু হত হুমকি, হয়রানি ও নানা ধরনের নির্যাতন। জানা যাচ্ছে, কসবা কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ বিভিন্ন সময়ে বহু নারীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়িয়েছে। অভিযোগ, একাধিক মহিলা তার বিকৃত যৌন আচরণের শিকার হয়েছেন। পরে মনোজিৎ সেই মুহূর্তগুলির ভিডিও বা ছবি অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়ে নিজের ‘সফলতা’ হিসেবে প্রচার করত। এমনকি, কতজনের সঙ্গে সে ঘনিষ্ঠ হয়েছে, তার তালিকাও নাকি সে রাখত।

কলেজ ট্রিপে গিয়েও মনোজিৎ তার ‘শিকার’ খুঁজে বেড়াত

শোনা যায়, কলেজ ট্রিপে গিয়েও মনোজিৎ তার ‘শিকার’ খুঁজে বেড়াত। সেই পরিস্থিতিতে একবার এক ছাত্রীকে লুকিয়ে থাকতে হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। ওই ছাত্রীর দাবি, প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে মনোজিৎ তাকে খুঁজে বেরিয়েছিল। কলেজের এক ছাত্রের বক্তব্য অনুযায়ী, মনোজিৎ মারধর ও যন্ত্রণার ভিডিও দেখতে বেশি আগ্রহী ছিল। শুধু নিজে দেখেই থেমে থাকত না, সেগুলি অন্যদেরও দেখাতে সে বিশেষভাবে পছন্দ করত। ‘বিকৃত যৌনতা’ ভীষণভাবে পছন্দ ছিল তার। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, কসবা কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রের (Monojit Mishra) বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই একাধিক অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। সময় যত গড়াচ্ছে, তার কুকর্মের তালিকাও ততই দীর্ঘ হচ্ছে। কীভাবে কলেজের ছাত্রীদের ‘শিকার’ বানাত সে, এবার তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি, উঠে এসেছে তার বিকৃত মানসিকতার একাধিক দৃষ্টান্তও।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share