তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
সুস্থ জীবন যাপনের চাবিকাঠি খাবারেই লুকিয়ে রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, দিনভরের কাজের শক্তি সকালের জলখাবারে থাকে। শরীর কতখানি সক্রিয় থাকবে, ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে, হৃদরোগ থেকে কিডনির রোগের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করবে। তাই প্রাতঃরাশে কোন খাবার খাওয়া হবে, সে নিয়ে বাড়তি সতর্কতা জরুরি। তাঁরা জানাচ্ছেন, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং রোগের ঝুঁকি কমাতে অনেকেই ভারতীয় খাবার এড়িয়ে চলেন। ভরসা রাখছেন পশ্চিমী খাবারে। কিন্তু পুষ্টিবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই ধারণা সবসময় ঠিক হয় না। অনেক সময়েই দেখা যাচ্ছে, একাধিক ভারতীয় খাবারের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। তাই সেগুলো শরীরের জন্য খুবই উপকারি।
জলখাবারে পরোটায় ভরসায় রাখছেন পুষ্টিবিদরা?
সকালে স্বাস্থ্যকর খাবার হিসাবে পরোটা শুনে অনেকেই নাক কুঁচকে দেন। তরুণ প্রজন্মের একাংশ ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে, হৃদরোগ, কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিসের মতো রোগের ঝুঁকি কমাতে পরোটার মতো খাবার প্রাতঃরাশের মেনুতে রাখতে একেবারেই নারাজ। কিন্তু পুষ্টিবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, পরোটাতেই ভরসা রাখছেন।
পুষ্টিবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, ময়দা দিয়ে তৈরি একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়। কিন্তু ভারতীয় খাবারে বৈচিত্র্য অনেক। তাই পরোটাও নানান রকমের হয়। আটা, মিলেট, রাগি, বাজরার মতো একাধিক দানাশস্য দিয়ে পরোটা তৈরি করা যায়। শুধুই দানাশস্যের তৈরি নয়। পরোটার ভিতরে নানান সব্জির পুর দেওয়া যায়। এমনকি মাংস কিংবা পনিরের পুর দিয়েও পরোটা তৈরি করা যায়। তাঁরা জানাচ্ছেন, মিলেট, বাজরা কিংবা রাগির মতো দানাশস্যের সঙ্গে টক দই মিশিয়ে অল্প পরিমাণ বাটারে পরোটা তৈরি করলে শরীরের জন্য খুবই উপকারি হবে। বিশেষত ভিতরে পালং শাক, গাজর, বিনস্, বিট, মাংসের পেস্ট কিংবা পনিরের টুকরোর পুর ঢুকিয়ে দিলে এই পরোটার পুষ্টিগুণ আরও বেড়ে যায়।
সব্জির পুর ভরা পরোটা খেলে…
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এই ধরনের জলখাবারে সপ্তাহে অন্তত তিন থেকে চারদিন খেলে শরীরের জন্য খুবই উপকারি হবে। তাঁরা জানাচ্ছেন, এই ধরনের খাবার থেকে একদিকে শরীর পর্যাপ্ত ফাইবার পাবে। কারণ, মিলেট, বাজরা, রাগির মতো দানাশস্যে থাকে পর্যাপ্ত ফাইবার। এই উপাদান কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখবে, অতিরিক্ত মেদ বাড়তে দেবে না। কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকিও কমাবে। এর ফলে অন্ত্র ভালো থাকবে। সব্জির পুর ভরা পরোটা খেলে ফাইবারের সঙ্গে শরীরে ভিটামিন, আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামের মতো প্রয়োজনীয় উপাদানের চাহিদা পূরণ হবে। পনীর কিংবা মাংসের টুকরো মেশানো পরোটা থাকলে প্রোটিনের জোগান ও থাকবে। ফলে সারাদিনের প্রয়োজনীয় এনার্জি সহজেই পাওয়া যাবে। এই ধরনের খাবারে স্বল্প পরিমাণ বাটার জাতীয় উপকরণ ব্যবহার করতে হয়। এর ফলে শরীরে ফ্যাটের চাহিদাও পূরণ হবে। আবার বাড়তি মেদ তৈরির ঝুঁকিও থাকবে না।
তাই জলখাবারে পরোটাতে ভরসা রাখছেন বিশেষজ্ঞ মহল। তবে অবশ্যই অতিরিক্ত তেলে ভাজা ময়দার পরোটা নয়। বরং স্বাস্থকর উপাদানে তৈরি পরোটা। যাতে সকালেই শরীর প্রয়োজনীয় প্রোটিন, ভিটামিন এবং ফাইবারের মতো উপাদান পায়। তাতে সারাদিনের কাজের এনার্জি সহজেই পাওয়া যাবে। আবার একাধিক রোগের ঝুঁকিও কমানো যাবে।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
Leave a Reply