RBI Cuts Repo Rate: বড়দিনের আগে বড় ঘোষণা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের! কমল রেপো রেট, সস্তা হবে ঋণের বোঝা

RBI MPC 2025 EMIs set to fall as RBI repo rate cut by 25 bps

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বড়দিনের আগেই বছর শেষের বড় খবর! সাধারণ দেশবাসীর জন্য সুখবর শোনাল দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক। আমজনতাকে সুরাহা দিয়ে রেপো রেট কমানোর ঘোষণা করলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মানিটরি পলিসি বা আর্থিক নীতি রূপায়ণ কমিটির দু’দিনের বৈঠকের পর শুক্রবার সকালে এই ঘোষণা করা হয়। জানানো হয়, রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট বা ০.২৫ শতাংশ কমানো হয়েছে। অর্থাৎ, রেপো রেট ৫.৫০ শতাংশ থেকে নেমে ৫.২৫ হল।

কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হল?

এই নিয়ে চলতি বছরে চতুর্থ বারের জন্য কমল রেপো রেট বা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদের হার। এর আগে গত ফেব্রুয়ারি, এপ্রিলে ২৫ করে এবং জুনে ৫০ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমিয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। নতুন হারে সুদ কমার পর ২০২৫ সালে মোট ১২৫ বেসিস পয়েন্ট কমল রেপো রেট। বিশ্লেষকদরে মতে, এর সরাসরি প্রভাব পড়বে সাধারণ মানুষের উপর। এখন গৃহঋণ, গাড়ি ঋণ এবং ব্যক্তিগত ঋণের ইএমআই আরও কমবে, অর্থাৎ ঋণ নেওয়া সস্তা হবে। অথবা, কেউ মাসিক কিস্তি কমাতে না চাইলে কমবে তাঁর ঋণ পরিশোধের সময়কাল। রেপো রেট কমার ফলে ভাসমান সুদে গৃহঋণ বা গাড়ির ঋণের ক্ষেত্রে প্রতি এক লক্ষ টাকায় আপনার ইএমআই কমতে পারে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। এর ফলে, যাঁরা দীর্ঘমেয়াদের লোন নিয়েছেন, তাঁরা অনেকটা স্বস্তি পাবেন। ফলে, গ্রাহকদের হাতে আসবে বাড়তি টাকা। আর বাজারে বাড়বে নগদের জোগান। তৈরি হবে চাহিদা।

রেপো রেট কী?

রেপো রেট হল সুদের হার। যে সুদের হারে সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি ব্যাঙ্ককে আরবিআই ঋণ দিয়ে থাকে তাকেই বলে রেপো রেট। আরবিআই যদি রেপো রেট বাড়ায়, তাহলে ব্যাঙ্কগুলির ঋণ আরও ব্যয়বহুল হয়ে ওঠে এবং তারা গ্রাহকদের উচ্চ হারে ঋণও দেয় উল্টোদিকে, এই হার কমার অর্থ ব্যাঙ্ক কম সুদে টাকা ধার নিতে পারবে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক থেকে। ব্যাঙ্ক যদি কম সুদের হারে টাকা ধার পায়, তাহলে গ্রাহকদের ঋণেও সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা থাকে। অর্থাৎ বিভিন্ন ধরনের ঋণে সুদের হার কমতে পারে। সুদের হার কমলে লগ্নির জন্য টাকা ধার নেওয়ার প্রবণতা বাড়ে। এর জেরে ব্যবসা বৃদ্ধি, বিভিন্ন পরিকাঠামো উন্নয়নে খরচ বৃদ্ধি সহজ হয়। অর্থনীতি চাঙ্গা করার লক্ষ্যে তাই এই পদক্ষেপ কার্যকরী হিসাবে বিবেচিত হয়।

কী বললেন আরবিআই গভর্নর?

সঞ্জয় জানিয়েছেন, বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় রেপো রেট কমানো হবে। কারণ টাকার দাম পড়লেও কমেছে মুদ্রাস্ফীতির হার। সে কথা মাথায় রেখেই রেপো রেট কমিয়েছে আরবিআই। তিনি আরও জানান, ২০২৫ সালের শেষ মাসে ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চ্যালেঞ্জের মুখে থাকলেও দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও স্থিতিশীল মুদ্রাস্ফীতি রয়েছে। বর্তমানে দেশের অর্থনীতির অবস্থাকে ব্যাখ্যা করা যায় একটাই শব্দে, ‘গোল্ডিলক্স পিরিয়ড।’ অর্থাৎ, একটি আদর্শ অর্থনৈতিক অবস্থা। যেখানে দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল, বৃদ্ধি ভাল, বেকারত্ব কম ও মুদ্রাস্ফীতি কম বা মাঝারি থাকে। চলতি অর্থবর্ষে মুদ্রাস্ফীতি রেকর্ড লো হিট করেছে। অক্টোবরে মুদ্রাস্ফীতি ছিল মাত্র ০.২৫ শতাংশ। এ ছাড়াও প্রথম ৬ মাসে দারুণ জিডিপি বৃদ্ধি দেখেছে দেশ। এমনকি চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে জিডিপি বেড়েছে ৮.২ শতাংশ। যা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পূর্বাভাসকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে বৃদ্ধিকে আরও স্থিতিশীল ও চাঙ্গা করতে সুদের হার কমানো জরুরি ছিল।

অর্থনীতিবিদদের বিশ্লেষণ…

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত বাজারকে আরও গতি দেবে। তাঁদের মতে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির স্থিতাবস্থা এবং ষষ্ঠবার ত্রৈমাসিক বৃদ্ধির অগ্রগতির প্রবণতা সত্ত্বেও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এখনও ধীরেসুস্থে এগনোর নীতি নিয়েছে। ভারতের উৎপাদন বৃদ্ধির হার গত ৬টি ত্রৈমাসিক দ্রুতগামী হয়েছে। অন্যদিকে, মুদ্রাস্ফীতি বেশ খানিকটা কমে মাসিক হিসাবের নিরিখে নিম্নগামী রয়েছে। এই বিরল ঘটনায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এ নিয়ে পরপর চারবার রেপো রেট শক্ত হাতে ধরে রাখল।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share