Palliative Care: ক্যান্সার চিকিৎসায় ওষুধের মতোই সমান জরুরি ‘প্যালিয়েটিভ কেয়ার’! কী এটা? কেন প্রয়োজন?

what is Palliative care importance in cancer treatment benefits

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

শুধুই ওষুধ, কেমো থেরাপি কিংবা রেডিওথেরাপি নয়। ক্যান্সার চিকিৎসায় (Cancer Treatment) অন্যতম জরুরি ‘দাওয়াই’ ‘প্যালিয়েটিভ কেয়ার’ (Palliative Care)। ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, ক্যান্সার আক্রান্তের চিকিৎসা চলাকালীন এবং ক্যান্সার আক্রান্তের ফের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে হলে প্যালিয়েটিভ কেয়ার সবচেয়ে জরুরি। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে ক্যান্সার চিকিৎসায় অন্যতম বাধা এই প্যালিয়েটিভ কেয়ার। অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালের ক্যান্সার বিভাগে প্যালিয়েটিভ কেয়ার নেই। তাই অনেক সময়েই ক্যান্সার আক্রান্তের চিকিৎসায় জটিলতা বাড়ে।

প্যালিয়েটিভ কেয়ার (Palliative Care) কী?

ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, যেকোনও ধরনের ক্যান্সার চিকিৎসায় অধিকাংশ সময়েই দেখা যায়, রোগী চিকিৎসা চলাকালীন শরীরের পাশপাশি মানসিক ভাবেও অসুস্থ হয়ে পড়েন। ক্যান্সার আক্রান্তের শরীরে নানান হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। তাই বাড়তে থাকে মানসিক চাপ এবং অবসাদ। যা তাঁর চিকিৎসার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তাই প্রয়োজন প্যালিয়েটিভ কেয়ার। অর্থাৎ, যারা আগে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়েছেন। চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে ফের স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন। এমন অভিজ্ঞতার মানুষের প্রয়োজন। যারা ক্যান্সার আক্রান্তের ‘সার্পোট সিস্টেম’ হিসাবে পাশে থাকবেন। আক্রান্তের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করবেন। তার ফলে রোগী চিকিৎসায় আরও দ্রুত সাড়া দেবেন।

কেন জরুরি প্যালিয়েটিভ কেয়ার?

অঙ্কোলজিস্ট বা ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, ক্যান্সার চিকিৎসার পথ দীর্ঘ। অধিকাংশ সময়েই রোগী হতাশ হয়ে পড়েন। চিকিৎসক মূলত অস্ত্রোপচার, ওষুধ এবং কেমো কিংবা রেডিওথেরাপির বিষয়ে নজর দেন। কিন্তু এই সমস্ত প্রক্রিয়ার একটি চাপ রোগীর মনের উপরে পড়ে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, ক্যান্সার আক্রান্ত ফের সুস্থ হয়ে জীবন যাপনের আশা হারিয়ে ফেলছেন। কিংবা এই দীর্ঘ জটিল চিকিৎসা প্রক্রিয়ায় আক্রান্ত মানসিক অবসাদের শিকার হচ্ছেন। অনেক সময়েই তার ফলে আক্রান্তের শরীরে চিকিৎসা সাড়া দেয় না। কিন্তু রোগী এই প্যালিয়েটিভ কেয়ার (Palliative Care) পেলে সহজেই নিজের সমস্যার কথা বলতে পারেন। যেহেতু যার কাছে রোগী নিজের সমস্যা জানাচ্ছেন, তিনিও অভিজ্ঞ, তাই সহজেই সমস্যা বোঝানো যায়। পাশপাশি ক্যান্সার আক্রান্ত হলেও ফের স্বাভাবিক জীবন যাপন সম্ভব, এটা বারবার চোখের সামনে দেখলে রোগীর মধ্যে ইতিবাচক জোর আসে। যা তাঁর শরীর ও মনে গভীর প্রভাব ফেলে। তাই ক্যান্সার চিকিৎসায় ওষুধ, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপির মতোই সমান জরুরি প্যালিয়েটিভ কেয়ার। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, রোগীর শরীরে ওষুধের মতোই কাজ করে প্যালিয়েটিভ কেয়ারের থেরাপি। নিয়মিত এই প্যালিয়েটিভ কেয়ার পেলে রোগীর মানসিক চাপ কমে। ফলে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে। এর ফলে অস্ত্রোপচার পরবর্তী চিকিৎসাতেও সুবিধা হয়। কেমো থেরাপি বা রেডিওথেরাপির মতো চিকিৎসায় শরীরে অন্যান্য হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি। তাতে চিকিৎসা আরও ভালো হয়। দ্রুত সাড়া পাওয়া যায়।

রাজ্যে সমস্যা কোথায়?

চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, রাজ্যের অধিকাংশ হাসপাতালেই এই প্যালিয়েটিভ কেয়ার (Palliative Care) নেই। ফলে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি হাসপাতালে ক্যান্সার চিকিৎসায় (Cancer Treatment) জটিলতা আরও বাড়ছে। রোগীদের ভোগান্তিও বাড়ছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, প্যালিয়েটিভ কেয়ার গড়ে তুলতে হলে ক্যান্সার চিকিৎসার তথ্য সংগ্রহ জরুরি। রোগী কোথায় থাকেন, কতদিন চিকিৎসা চললো, এখন কেমন আছেন, এই সমস্ত বিষয় সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ জরুরি। ক্যান্সার আক্রান্ত সুস্থ হয়ে ওঠার পরে, তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা জরুরি। কারণ প্যালিয়েটিভ কেয়ার, যারা দেবেন, তাঁদের নূন্যতম প্রশিক্ষণ জরুরি। রোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করা, কথা বলা, তাঁর মনের অবস্থা বোঝার মতো প্রশিক্ষণ জরুরি। কিন্তু চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, রাজ্যের অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালে প্যালিয়েটিভ কেয়ার (Palliative Care) তৈরির প্রাথমিক কাজ ঠিক মতো হয় না। অর্থাৎ, তথ্য সংগ্রহের কাজ ঠিকমতো হয় না। ফলে রাজ্যের কোনো সরকারি হাসপাতালেই ক্যান্সার আক্রান্তেরা প্যালিয়েটিভ কেয়ারের সুবিধা পাচ্ছেন না।

 

DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share