মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতের চাপেই সাবধানী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। দিল্লির বার্তার পরে ভারত থেকে পলাতক জাকির নায়েককে আপাতত বাংলাদেশ সফরের অনুমতি দিচ্ছে না সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকার। মঙ্গলবার বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জাকিরের (Zakir Naik) বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানো এবং বিদ্বেষমূলক বক্তৃতার অভিযোগ রয়েছে। জঙ্গি কার্যকলাপেও তাঁর যোগ থাকতে পারে বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের। তবে এই সিদ্ধান্ত আপাতত। স্থায়ী সিদ্ধান্ত নয়। পাকিস্তানের পথ অনুসরণ করে জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে মহম্মদ ইউনূসের বাংলাদেশ। তা দৃশ্যতই। কিন্তু বেড়ে খেলতে গিয়ে, ধাক্কা খেল ঢাকা! আপাতত ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও খারাপ করতে নারাজ বাংলাদেশ।
কেন এই সিদ্ধান্ত নিল বাংলাদেশ
বাংলাদেশের তরফে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সচিব পর্যায়ে একটি বৈঠক করেছে মঙ্গলবার। সেই বৈঠকে জাকির নায়েকের সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, আইন শৃঙ্খলা বিঘ্ন হতে পারে। জাকির নায়েকের নাকি বাংলাদেশে এতটাই জনপ্রিয়তা যে, ব্যাপক ভিড় হবে তাঁকে দেখতে ও তাঁর কথা শুনতে। সেই ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে প্রচুর পুলিশ অফিসার ও নিরাপত্তরক্ষী প্রয়োজন। এই মুহূর্তে পুরো ফোকাস রয়েছে জাতীয় নির্বাচনের দিকে। তাই জাকির নায়েকের এত নিরাপত্তা দেওয়া কঠিন। তবে, ভারতে সন্ত্রাসে উস্কানিমূলক ভাষণ দেওয়া জাকিরের সফর স্থগিত হয়ে যাওয়ার আরও একটি কারণ হল আন্তর্জাতিক চাপ। আর সেই চাপের অন্যতম হল ভারত। আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় ভারত এই মুহূর্তে কার্যত চালকের আসনে রয়েছে। বিশ্বের তাবড় অর্থনীতিগুলির মধ্যে অন্যতম। আর ভারত ছাড়া বাংলাদেশের গতি নেই। যতই পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্ব বাড়াক, ঢাকা জানে, তাদেরই মতো বা তাদের থেকেও কাঙাল অবস্থা পাকিস্তানের।
ভারতের চাপের কাছে নতিস্বীকার
গত সপ্তাহে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে বলেছিলেন জাকির নায়েক (Zakir Naik) ঢাকায় গেলে বাংলাদেশ সরকারের উচিত হবে তাঁকে গ্রেফতার করে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া। বাংলাদেশের একটি অসরকারি প্রতিষ্ঠান জাকির নায়েককে চলতি মাসের ২৮ ও ২৯ নভেম্বর ঢাকায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। দু’দিনই দুটি বড় স্টেডিয়ামে তাঁর ভাষণ দেওয়ার কথা। এই খবর জানাজানি হতে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়ে ছিল, ঢাকার উচিত হবে জাকির নায়েককে গ্রেফতার করে দিল্লির হাতে তুলে দেওয়া। দীর্ঘদিন যাবত মালয়েশিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন। ২০১৬ সালে ঢাকায় হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর ভারত সরকার জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারের অভিযোগ আনে। সেই সময় দেশজুড়ে তুমুল বিতর্ক হয়েছিল জাকিরের মন্তব্যকে ঘিরে। তাঁকে গ্রেফতারের দাবি উঠেছিল। ভারতে একাধিক আদালতে এই ইসলামিক স্কলার ও সুবক্তার বিরুদ্ধে মামলা চালু আছে। জাকিরকে নিয়ে ভারতের চাপের মুখে বাংলাদেশ করা প্রতিক্রিয়া দেয়নি। সে দেশের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র শুধু বলেন ভারতের প্রতিক্রিয়ার দিকে তাদের নজর আছে। দেখা গেল ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের কঠোর মনোভাবের পর বাংলাদেশ সরকারের শীর্ষ পদাধিকারীরা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত করলেন জাকিরকে ঢাকায় যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না।

Leave a Reply