BBC: ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চাইল বিবিসি, তার পরেও আদালতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট!

Bbc tenders apology to us president Donald trump

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) কাছে ক্ষমা চাইল বিবিসি (BBC)। এই সংবাদ সংস্থার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তার পরেই ক্ষমা চেয়ে নেন বিবিসি কর্তৃপক্ষ। অবশ্য ভুল স্বীকার করে নিলেও, ট্রাম্পকে ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকার করেছে বিবিসি। ব্রিটিশ এই সংবাদ সংস্থার দাবি, এই মানহানি মামলার কোনও ভিত্তি নেই। ট্রাম্প প্রশাসনকে লেখা একটি চিঠিতে সংস্থার তরফে চেয়ারম্যান সামির শাহ লিখেছেন, “সেই ভুল সিদ্ধান্তের জন্য বিবিসি ক্ষমাপ্রার্থী।” তাঁর দাবি, সংস্থাটি সাংবাদিকতা, ন্যায়পরায়ণতা এবং নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত।

মানহানি মামলার হুঁশিয়ারি (BBC)

১৩ নভেম্বর বিবিসি তাদের কারেকশন অ্যান্ড ক্ল্যারিফিকেশন বিভাগে জানিয়েছে, প্যানোরামা অনুষ্ঠানটি সমালোচনার পর ফের পরীক্ষা করা হয়েছে। কারণ এতে ট্রাম্পের বক্তব্য বিকৃতভাবে উপস্থাপিত হয়েছিল। বিবিসির তরফে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে,  “আমরা স্বীকার করি যে আমাদের সম্পাদনা অনিচ্ছাকৃতভাবে এমন ধারণা তৈরি করেছে যে আমরা বক্তৃতার একটি একটানা অংশ দেখাচ্ছি, অথচ বাস্তবে তা ছিল বক্তৃতার বিভিন্ন অংশ থেকে নেওয়া উদ্ধৃতি। এর ফলে ভুল ধারণা সৃষ্টি হয়েছে যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সরাসরি হিংসাত্মক কাজের আহ্বান জানিয়েছিলেন।” বিবিসির তরফে ক্ষমা চাওয়ার কারণ ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে, তিনি এক মিলিয়ন ডলারের মানহানির মামলা করবেন।

‘ফাইট লাইক হেল’

প্রসঙ্গত, প্যানোরামায় ট্রাম্পের ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসের বক্তৃতার বিভিন্ন অংশ জোড়া দিয়ে এমনভাবে দেখানো হয়েছিল যেন তিনি (Donald Trump) তাঁর সমর্থকদের ‘ফাইট লাইক হেল’ এবং তাঁর সঙ্গে ক্যাপিটল ভবনের দিকে মিছিল করতে উৎসাহিত করছেন (BBC)। ওই অনুষ্ঠানে ট্রাম্পকে বলতে শোনা গিয়েছে, “আমরা ক্যাপিটল ভবনের দিকে হাঁটব…আমি তোমাদের সঙ্গে থাকব। এবং আমরা লড়ব। আমরা ভীষণভাবে লড়ব।” এর পরেই ট্রাম্পের হুমকি এবং তার পর বিবিসি কর্তৃপক্ষের তরফে ক্ষমা চাওয়া হয়। ব্রিটিশ এই সংবাদ সংস্থা এও স্বীকার করেছে যে, প্যানোরামার অনুষ্ঠানটি এমন ভুল ধারণা দিয়েছিল যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সরাসরি হিংসার আহ্বান জানিয়েছিলেন। আর কখনওই ওই অনুষ্ঠানটি প্রচার করা হবে না বলেও আশ্বাস দিয়েছে বিবিসি।

ক্যাপিটল হিলে হামলা

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর হামলা হয় ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল হিলে। অভিযোগ, সেখানে হামলা চালিয়েছিল উত্তেজিত জনতা। যদিও অভিযোগের আঙুল উঠেছিল ওই নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী তথা প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিকে। বিবিসির তরফে ট্রাম্পকে নিয়ে যে তথ্যচিত্র সম্প্রচার করা হয়, তাতে ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনায় ট্রাম্পকে কার্যত কাঠগড়ায় তোলা হয় বলে অভিযোগ (BBC)। নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্প যেসব বক্তৃতা দিয়েছিলেন (Donald Trump), সেগুলি এমনভাবে সম্পাদনা করা হয়েছিল, যাতে মনে হয় ওই হামলায় প্রত্যক্ষভাবে উসকানি দিয়েছিলেন তিনি। আর এখানেই আপত্তি হোয়াইট হাউসের। প্রেস সচিবের দাবি, এভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করা হয়েছে।

প্রবল বিতর্ক

বিবিসির ওই অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হতেই শুরু হয় প্রবল বিতর্ক। ঘটনার দায় ঘাড়ে নিয়ে সপ্তাহের প্রথমেই ইস্তফা দেন সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল টিম ডেভি ও খবর সম্প্রচার বিভাগের প্রধান ডেবোনার টারনেস। পরে ওয়াশিংটনের চাপে পড়ে দফায় দফায় ক্ষমাও চেয়েছে ব্রিটিশ এই সংবাদ সংস্থা। যদিও তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছে, মানহানির জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণের শর্ত মানতে রাজি নয়।

কী বললেন ট্রাম্প

এর পরেই ট্রাম্প জানিয়ে দেন মামলা করার কথা (Donald Trump)। তিনি বলেন, “আমরা ১ বিলিয়ন থেকে ৫ বিলিয়ন ডলারের মামলা করব। সম্ভবত আগামী সপ্তাহের কোনও এক সময়। আমার মনে হয়, আমাকে এটা করতেই হবে। ওরা প্রতারণা করেছে, সেটা মেনে নিয়েও নিয়েছে। আমার মুখ থেকে বের হওয়া কথাগুলি বদলে দিয়েছে। ভুয়ো খবর কথাটা দারুন চালু। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা যথেষ্ট নয়। এটি তো ভুয়োর চেয়েও বেশি, এটি দুর্নীতি বিষয়ক। ওরা প্রায় এক ঘণ্টার ব্যবধানে বক্তৃতার দু’টি অংশ এক সঙ্গে কেটে নিয়েছিল। একটায় আমাকে খারাপ লোক বানিয়ে দিচ্ছিল, আর অন্যটা ছিল অত্যন্ত শান্ত একটি বক্তব্য।” ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “আপনি ভাবতে পারেন, বিবিসি ভুয়ো খবর প্রচার করে! এই ঘটনায় ব্রিটেনের মানুষও খুব রেগে গিয়েছে।” তিনি বলেন, “এই কেলেঙ্কারিতে স্যার কিয়ার স্টারমার খুবই লজ্জিত। এ নিয়ে আমি কথা বলব তাঁর সঙ্গে (BBC)।” ট্রাম্প বলেন, “তারা (বিবিসি) আমায় একটি সুন্দর চিঠি লিখেছে। বলেছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। কিন্তু আপনি যদি বলেন এটি অনিচ্ছাকৃত, তবে আমি মনে করি অনিচ্ছাকৃত হলে ক্ষমা করতে হয় না।”

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share