মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সিঁদুর অভিযান চলাকালীন শত্রুঘাঁটিতে অব্যর্থ নিশানা শানিয়েছে। তার ক্ষমতা চাক্ষুষ করেছে গোটা বিশ্ব। সেই সুপারসনিক (শব্দের চেয়ে বেশি গতিবেগ সম্পন্ন) ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্র ব্রহ্মসকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে ভারত। এরই মধ্যে সোমবার বঙ্গোপসাগরে পরীক্ষামূলক ভাবে একটি ব্রহ্মস উৎক্ষেপণ করল ভারতীয় সেনা। দূরপাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষমতা ফের একবার পরখ করে নিল বাহিনী। ওই উৎক্ষেপণে পরীক্ষার সব মাপকাঠিতেই সফল হয়েছে ব্রহ্মস।
বিভিন্ন মাপকাঠিতে পরখ করে দেখা হয় ব্রহ্মস
সোমবার সেনার ব্রহ্মস ইউনিটের দক্ষিণ কমান্ড এবং তিন বাহিনীর আন্দামান-নিকোবর কমান্ড যৌথভাবে পরীক্ষাটি চালিয়েছে। ব্রহ্মসের পাল্লা, প্রযুক্তিগত নানা দিক পরীক্ষা করে নেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট লক্ষ্যে নির্ভুলভাবে আঘাত হানার ক্ষেত্রে আরও একবার সফল হয়েছে ক্ষেপণাস্ত্রটি। যুদ্ধক্ষেত্রে যে ধরনের পরিস্থিতি থাকে, তারই অনুরূপ পরিস্থিতিতে ব্রহ্মসটি পরীক্ষা করা হয়। তাতে দেখা গিয়েছে, সব ধরনের পরিস্থিতিতে এটি সফল হয়েছে। অর্থাৎ, অপারেশনাল উদ্দেশ্য পূরণ হয়েছে। ভারতীয় সেনার ব্রহ্মস ইউনিটগুলির রিয়েল টাইম প্রস্তুতি এবং দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হানায় নির্ভুলতা খতিয়ে দেখার ক্ষেত্রেও এই পরীক্ষাটি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে ব্রহ্মসের পাল্লা-সহ বিভিন্ন মাপকাঠিতে পরখ করে দেখা হয় ক্ষেপণাস্ত্রটি। এই পরীক্ষার মাধ্যমে ব্রহ্মসের উন্নত দিক্নির্দেশনা ব্যবস্থা, নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা, বেশি গতিতে ছুটে যাওয়ার সময়ে স্থিতিশীলতা, নির্ভুলতা এবং নির্দিষ্ট ভাবে নিশানায় আঘাত হানার ক্ষেত্রে ফের সফল হয়েছে ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্রটি।
নয়া ব্রহ্মস আরও আধুনিক
সিঁদুর অভিযানের পর থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। এমনকি, পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের বক্তৃতাতেও উঠে এসেছিল রাশিয়ার সহযোগিতায় ভারতে তৈরি সেই ব্রহ্মস ক্রুজ সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের কথা। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ইসলামাবাদকে হুঙ্কার দিয়েছিলেন, সিঁদুর অভিযান শুধুই ঝলক ছিল। পাকিস্তানের প্রতিটি কোনাই ব্রহ্মসের নাগালের মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। এরই মধ্যে সম্প্রতি দক্ষিণ চিন সাগরে ইসলামাবাদের বন্ধু বেজিঙের আগ্রাসন রুখতে ভারত থেকে কেনা সেই ক্ষেপণাস্ত্রেই ভরসা রেখেছে ফিলিপিন্স। সেখানে ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে তারা। অপারেশন সিঁদুরের পর থেকে ব্রহ্মসের পাল্লা আরও বৃদ্ধি করতে উদ্যোগী হয়েছে ভারত। স্থলভূমি বা যুদ্ধজাহাজ থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ব্রহ্মসের পাল্লা ২৯০ থেকে ৪০০ কিলোমিটার। বিমান বা ডুবোজাহাজে ব্যবহৃত সংস্করণের কিছুটা কম। নতুন পাঁচ দফা পরিকল্পনায় ব্রহ্মসের পাল্লা এবং গতিবেগ দু’টিই বাড়ানো হচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে, নয়া সংস্করণে স্থলভূমি বা যুদ্ধজাহাজ থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ব্রহ্মসের পাল্লা হবে ৮০০ কিলোমিটার। পাশাপাশি, সুপারসনিক থেকে হাইপারসনিক (শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ বা তার বেশি গতিবেগসম্পন্ন) ক্ষেপণাস্ত্রের স্তরে উন্নীত হবে ব্রহ্মস।

Leave a Reply