Delhi Blast: দিল্লি বিস্ফোরণের আত্মঘাতী জঙ্গি কাশ্মীরি চিকিৎসক উমর, যুক্ত ছিল ফরিদাবাদ মডিউলের সঙ্গে!

CCTV image of Delhi Red Fort blast suspect j&k doctor Dr Umar of Faridabad module just before explosion

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সোমাবার সন্ধ্যায় লাল কেল্লার কাছে ঘটে যায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলা। শক্তিশালী গাড়ি বিস্ফোরণে ঝরে গিয়েছে অন্তত ১১টি প্রাণ। আহত বহু। এই ঘটনার পরই, দ্রুত তদন্তে নামে একাধিক কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা এজেন্সি। এরই মধ্যে হামলার আগের মুহূর্তের সিসিটিভি ফুটেজে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা থেকে বিরাট সূত্র পেয়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, সাদা রঙের ওই ‘হুন্ডাই আই২০’ গাড়িটি দুপুর ৩টে ১৯ মিনিটে লালকেল্লার অদূরে সুনহেরি মসজিদ কাছে একটি পার্কিংয়ে প্রবেশ করেছিল। সন্ধ্যা ৬টা ৪৮ মিনিট পর্যন্ত গাড়িটি সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিল। তার পরে ওই পার্কিং থেকে বেরোয় গাড়িটি। পার্কিং থেকে বার হওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে লালকেল্লার কাছে গাড়িটিতে বিস্ফোরণ হয়।

সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে

এর কিছুক্ষণ আগে তোলা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ভিড়ের মধ্যে দিয়ে একটি আই-২০ গাড়ি যাচ্ছে। কালো মাস্ক পরা ব্যক্তি, যাকে গাড়ির ভেতরে চালকের আসনে বসে থাকতে দেখা গেছে, তাকে জঙ্গি মহম্মদ উমর বলে মনে করা হচ্ছে। সন্দেহজনক গাড়ির এই ফুটেজটি বিস্ফোরণের তদন্তে একটি গুরুত্বপূর্ণ যোগসূত্র হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে। সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে রাস্তাটি যখন খুব ব্যস্ত ছিল, তখন একটি সাদা আই-২০ গাড়ি ওই এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল। গাড়িটি যানজটের মধ্য দিয়ে চলতে থাকে। ফুটেজ অনুসারে, গাড়িটি যে চালাচ্ছিল তার মুখ কালো মাস্ক দিয়ে ঢাকা ছিল।

‘হোয়াইট কলার টেরর’

সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযানে কয়েকদিন আগেই প্রথম জম্মু-কাশ্মীরের এক ডাক্তারকে গ্রেফতার করা হয়। তারপর তদন্ত যত এগিয়েছে তত উঠে এসেছে একের পর এক ডাক্তার যোগ। বিস্ফোরণের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই এই লালকেল্লা থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে হরিয়ানার ফরিদাবাদ থেকে বাজেয়াপ্ত হয় প্রায় ৩ হাজার কেজি বিস্ফোরক! প্রথমে মুজাম্মিল শাকিল নামে এক চিকিৎসকের একটি ভাড়া বাড়ি থেকে সাড়ে তিনশো কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার হয়। এরপর ওই চিকিৎসকের আর একটি ভাড়া বাড়ি থেকে আড়াই হাজার কেজির বেশি বিস্ফোরক উদ্ধার করে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ। উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বলে জানা যায়। গোয়েন্দাদের তখনই সন্দেহ ছিল, দেশের বিরাট এলাকা জুড়ে ‘হোয়াইট কলার’ সন্ত্রাসবাদের বড় নেটওয়ার্ক তৈরি করে ফেলেছে জঙ্গি মডিউলগুলি, যাদের অংশ এই ডাক্তাররা।

ফরিদাবাদ জঙ্গি মডিউল

এই ঘটনায় গোয়েন্দারা গ্রেফতার করে তিন চিকিৎসককে। গত কয়েকদিনে তদন্তকারীরা ফরিদাবাদ জঙ্গি মডিউলের দুই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, দুই কাশ্মীরি চিকিৎসক ডাঃ মুজাম্মিল শাকিল এবং ডাঃ আদিল রাথেরকে গ্রেফতার করে, সেই সঙ্গে মোট ২,৯০০ কেজি বিস্ফোরক বাজেয়াপ্ত করে। মুজাম্মিলের সহযোগী ফরিদাবাদ নিবাসী শাহীন শাহিদ নামে এক কাশ্মীরি মহিলা চিকিৎসককের হদিশ মেলে। তাঁর গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় একে-৪৭ রাইফেল। পরে লখনউ থেকে ওই মহিলা চিকিৎসককে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই চক্রের তদন্তে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে কাশ্মীর পুলিশ। ধৃতেরা হল আরিফ নিসর দার, ইয়াসির-উল-আসরফ, মকসুদ আহমেদ দার, ইরফান আহমেদ, জামির আহমেদ।

আত্মঘাতী চালকের পরিচয়

কিন্তু, পলাতক ছিল আরও এক কাশ্মীরি চিকিৎসক। সে-ই হল এই আত্মঘাতী জঙ্গি মহম্মদ উমর। তদন্তকারীদের অনুমান, সঙ্গীরা গ্রেফতার হতেই ডাঃ উমর মহম্মদ আতঙ্কিত হয়ে লাল কেল্লার কাছে বিস্ফোরণ ঘটায়। পেশায় চিকিৎসক উমরই গাড়িটি চালিয়ে নিয়ে যান এবং দুই সহযোগীর সঙ্গে মিলে তিনিই হামলার পরিকল্পনা করেন বলে সূত্রের খবর। কিন্তু, সোমবার ফরিদাবাদ থেকে দু’জন গ্রেফতার হওয়ার পর, ভয়ে তড়িঘড়ি বিস্ফোরণ ঘটানো হয় লালকেল্লার কাছে। পুলিশ সূত্রে খবর, সহযোগীদের সঙ্গে মিলে গাড়িতে ডিটোনেটর রাখেন উমরই। বিস্ফোরণ ঘটাতে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ও জ্বালানি ব্যবহার করা হয়। ভেবেচিন্তেই ভিড় জায়গা বেছে নেওয়া হয়েছিল বলেও মনে করা হচ্ছে।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share