মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দিল্লি লালকেল্লা বিস্ফোরণকাণ্ডের তদন্ত প্রক্রিয়া যত এগোচ্ছে, ততই নিত্যনতুন ও চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে। একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে যে বিস্ফোরণে আত্মঘাতী হামলাকারী হিসেবে সন্দেহভাজন ডাক্তার উমর মহম্মদ কট্টরপন্থী ডাক্তারদের এক গোপন নেটওয়ার্কের অংশ ছিল। সে তার কার্যকলাপ জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামের মাধ্যমে চালাত। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, জইশ পরিচালিত দু’টি এনক্রিপটেড টেলিগ্রাম গ্রুপের মাধ্যমেই মগজধোলাই শুরু হয়েছিল এই চিকিৎসকদের গ্রুপের৷
এক জোড়া টেলিগ্রাম গ্রুপ
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ‘ফারজানাদন-ই-দারুল উলুম’ নামক একটি টেলিগ্রাম গ্রুপ ব্যবহার করা হত মগজধোলাইয়ের জন্য। উমর বিন খাতাব নামক এক ব্যক্তি এই টেলিগ্রাম গ্রুপ চালাত। উমর পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের এই চ্যানেলের সঙ্গে যুক্ত ছিল। অন্যদিকে, টেলিগ্রামে ‘র্যাডিক্যাল ডক্টর্স গ্রুপ’ নামে একটি চ্যানেল তৈরি করা হয়েছিল। এতে গ্রেফতার হওয়া ডাক্তার আদিল রাথের, মুজাম্মিল শাকিল এবং সন্দেহভাজন হামলাকারী উমর মহম্মদও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এরা সকলেই জইশ-ই-মহম্মদের সদস্য।
পাকিস্তান থেকে অপারেট হত
পাকিস্তান থেকে জইশের অপারেটিভ হিসাবে কাজ করত এই চ্যানেলগুলি। এই টেলিগ্রাম সেন্টারগুলিই প্রকৃতপক্ষে ‘ডক্টর্স মডিউল’-এর নার্ভ সেন্টার ছিল৷ তদন্তে উঠে এসেছে, ভারতে নাশকতা ছড়িয়ে দেওয়ার এই কাজ শুরু হয়েছিল মূলত দু’জনের হাত ধরে৷ একজন দিল্লি বিস্ফোরণ মামলার মূল অভিযুক্ত উমর এবং অন্যজন কাশ্মীরের এক ধর্মগুরু মৌলবি ইরফান আহমেদ ওয়াঘা৷ জানা গিয়েছে, কাশ্মীরের পুলওয়ামার বাসিন্দা উমরের সঙ্গে সোপিয়ানের বাসিন্দা ইরফান আহমেদের কথা শুরু হয়েছিল টেলিগ্রামের মাধ্যমে।
আজাদ কাশ্মীর থেকে গ্লোবাল জিহাদ
সূত্র অনুযায়ী, প্রথমে কাশ্মীরের ‘আজাদি’, কাশ্মীরিদের উপরে দমনের মতো কথা নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে শুরু হয়েছিল কথোপকথন৷ ক্রমে তা বৃহত্তর ক্ষেত্রে ছড়িয়ে যায়৷ গ্লোবাল জিহাদ-এ পরিণত হয় আলোচনা। সেখানে মহজধোলাই পর্ব থেকে হাতেনাতে কাজে লেগে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া শুরু হতে থাকে৷ গ্রুপের সদস্যদের বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়, কাজে লাগানো হয়৷ সারা ভারতে ছড়িয়ে ‘প্রফেশনাল কাজের’ আড়ালে স্লিপার সেল তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়৷
এনক্রিপ্টেড চ্যানেলে কথোপকথন
বিভিন্ন রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ডাক্তাররা টেলিগ্রাম চ্যানেলে একে অপরের সঙ্গে কথা বলত। টেলিগ্রাম চ্যানেলের কথোপকথন এনক্রিপ্টেড হওয়ার কারণেই সম্ভবত এটি ব্যবহার করা হয়েছিল। তবে এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি যে এই টেলিগ্রাম চ্যানেলে কতজন যুক্ত ছিল এবং তাদের মধ্যে কী কী আলোচনা চলছিল। যদি সদস্য সংখ্যা এবং কথোপকথন ডিকোড করা সম্ভব হয়, তাহলে অনেক বড় এবং চমকপ্রদ তথ্য সামনে আসতে পারে।
তুরস্ক ট্রিপেই সন্ত্রাসী মডিউল তৈরি
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশি রিপোর্ট অনুযায়ী, এই গ্রুপের হ্যান্ডলাররা সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছিল তুরস্কে। মুজাম্মিল ও উমরকে ডেকে পাঠানো হয় সেখানে। মনে করা হচ্ছে, মনে করা হচ্ছে, জইশ-এর সঙ্গে যুক্ত কোনও হ্যান্ডলারের মধ্যস্থতাতেই তাঁদের তুরস্ক সফর নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছিল৷ গোয়েন্দাদের অনুমান, তুরস্ক ট্রিপেই গোটা সন্ত্রাসবাদী মডিউল তৈরি ও হামলার ছক কষা হয়েছিল। তুরস্ক থেকে ফেরার পরই এরা ভারতে নিজেদের গতিবিধি বাড়ায়। ডাঃ মুজাম্মিল ফরিদাবাদের আল ফালাহ্ মেডিক্যাল কলেজে যোগ দেন। ডাঃ আদিলের পোস্টিং সাহারানপুরে হয়।

Leave a Reply