Ontario Motion: হিন্দু-বিদ্বেষের নিন্দে করে প্রস্তাব পাশ কানাডার শহরে

Landmark victory for hindu Canadians anti hindu hate historic Ontario motion

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কানাডার কোনও প্রদেশে এই প্রথম হিন্দু-বিদ্বেষের (Anti Hindu) নিন্দে করা হল। অন্টারিও (Ontario Motion) প্রদেশের শহর মিসিসাগায় সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে ‘মিসিসিগায় হিন্দু-বিরোধী বিদ্বেষ মেনে নেওয়া’ শীর্ষক প্রস্তাব। কানাডায় একে হিন্দু-কানাডিয়ানদের জন্য ঐতিহাসিক বিজয় হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।

সরকারি বিবৃতি (Ontario Motion)

সরকারের তরফে জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “মিসিসাগা সিটি কাউন্সিল আনুষ্ঠানিকভাবে হিন্দুদের বিরুদ্ধে ঘৃণার সব ধরনের প্রকাশ — মৌখিক, শারীরিক, ডিজিটাল বা প্রাতিষ্ঠানিক — এবং হিন্দু ব্যক্তিবিশেষ, সংগঠন বা মন্দির লক্ষ্য করে পরিচালিত যে কোনও বৈষম্যমূলক আচরণের নিন্দা করে।” ভারতে জন্মেছিলেন দিপিকা দামরলা। বর্তমানে তিনি কানাডীয় সিটি কাউন্সিলের সদস্য। তিনিই এই প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছিলেন। পরে এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, “মিসিসাগা সিটি অন্টারিওর প্রথম শহর হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে হিন্দু-বিরোধী বিদ্বেষের ঘটনা মেনে নিল। ওই প্রস্তাব সর্বসম্মত সমর্থনের জন্য মিসিসাগা কাউন্সিলকে ধন্যবাদ এবং সকল বক্তাকে ধন্যবাদ।” এর পরেই দামরলার নয়া পোস্টের কমেন্ট বিভাগে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে ‘অ্যান্টি-ইন্ডিয়া হেট’।

হিন্দু-বিদ্বেষীদের উপদ্রব

অবশ্য এই প্রথম নয়, তিনি যখন কানাডায় বাড়তে থাকা হিন্দু-বিদ্বেষীদের উপদ্রব, মন্দির ভাঙচুর ও হয়রানির ঘটনার মাঝে হিন্দুদের জন্য ইতিবাচক খবর শেয়ার করছিলেন, তখনও কিছু লোক তাঁকে লক্ষ্য করে বলেছিল, ‘গো ব্যাক টু ইন্ডিয়া’। এই বিতর্কেরও জবাব দিয়েছিলেন দামরলা। এবারও তিনি সাফ জানিয়ে দেন, এই প্রস্তাব ভারত নিয়ে নয়, বরং কানাডার হিন্দুদের নিয়ে, এবং এর সঙ্গে ভারতীয়দের কোনও সম্পর্কই নেই। এক ইউজার প্রশ্ন তুলেছেন, “আমাদের কেন অ্যান্টি-হিন্দু ঘৃণার জন্য আলাদা প্রস্তাবের প্রয়োজন?” এরও জবাব দিয়েছেন কানাডীয় সিটি কাউন্সিলরের এই সদস্য। তিনি বলেন, “এটি বিশেষ কোনও আইনের ব্যাপার নয়। বিষয়টি হল এই ঘৃণাকে স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা এবং ঘটনা যে ঘটছে, তা মেনে নেওয়া, যেমন এই পোস্টের কিছু মন্তব্যে দেখা গিয়েছে (Anti Hindu)। আমরা যদি একে নাম না দিই এবং প্রকাশ্যে না বলি, তবে এটি স্বাভাবিক হয়ে যায়, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই স্বাভাবিকীকরণ ইতিমধ্যেই ঘটছে (Ontario Motion)।”

‘হিন্দু কানাডিয়ান ফাউন্ডেশনে’র মত

‘হিন্দু কানাডিয়ান ফাউন্ডেশনে’র মতে, কাউন্সিলর জো হর্নেক প্রস্তাবটির সমর্থনে দ্বিতীয় বক্তা হিসেবে ভাষণ দিতে গিয়ে হিন্দু কানাডিয়ানদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন। এর ফলে সমস্ত বাসিন্দার ধর্ম ও বিশ্বাসের স্বাধীনতা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে মিসিসাগা সিটি কাউন্সিল আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছে যে তারা যেন পিল আঞ্চলিক পুলিশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে যৌথভাবে ধর্ম-সংশ্লিষ্ট ঘৃণার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়। এ ক্ষেত্রে মিসিসাগার ইতিবাচক পদক্ষেপ এসেছে ঠিক সেই সময়, যখন আলবার্টার ওয়েনরাইট কানাডার প্রথম পুরসভা হিসেবে হিন্দুফোবিয়াকে একটি উদ্বেগজনক সমস্যা হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে (Ontario Motion)।

‘কোহনা কানাডা’র বক্তব্য

“তৃণমূল-স্তরের অধিকার রক্ষার সংগঠন” ‘কোহনা কানাডা’ এই প্রস্তাব পাস হওয়ার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে। এক্স হ্যান্ডেলে তারা লিখেছে, “এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। কারণ মিসিসাগা দ্বিতীয় কানাডিয়ান শহর যারা এই অবস্থান নিয়েছে এবং তার হিন্দু সংখ্যালঘুদের প্রকাশ্যে আশ্বাস দিয়েছে। এটি বহু বছর ধরে মন্দির ও হিন্দুদের ওপর হিংসা বৃদ্ধির পর এক বিশাল স্বস্তি।” সংগঠনটি এই পদক্ষেপকে বিশেষভাবে প্রশংসা করেছে। প্রশংসা করেছে কাউন্সিলর দামেরলারও। কারণ এই প্রস্তাবটি এসেছে এমন একটা সময় (Anti Hindu), যখন গত বছর প্রায় এই সময়ই হামলা হয়েছিল হিন্দু মন্দিরে, মধ্যযুগীয় কায়দায় অত্যাচার চালানো হয়েছিল ভক্তদের ওপর। ট্যুইট-বার্তায় হিন্দু কানাডিয়ান ফাউন্ডেশন লিখেছে, “হিন্দু কানাডিয়ানদের জন্য এক ঐতিহাসিক জয় – মিসিসাগায় অ্যান্টি-হিন্দু বিদ্বেষের কথা মেনে নেওয়া হল: প্রস্তাব পাস হয়েছে (Ontario Motion)।”

গণেশের মূর্তি ভাঙচুর

সংস্থাটি এও উল্লেখ করেছে যে, এই প্রস্তাবটি হিন্দু কানাডিয়ানদের বাস্তব অভিজ্ঞতাকে স্বীকার করার এবং তাঁদের নিরাপত্তা, মর্যাদা ও সাংস্কৃতিক সম্মান পাওয়ার অধিকারকে দৃঢ় করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির প্রতীক। প্রস্তাবটিকে স্বাগত জানিয়ে সংস্থাটি জানিয়েছে, ‘এটি শুধুমাত্র কোনও নীতিগত সিদ্ধান্ত নয়, বরং একটি নৈতিক অবস্থান, একটি প্রকাশ্য ঘোষণা যে হিন্দুদের বিরুদ্ধে ঘৃণাকে উপেক্ষা করা হবে না বা লঘু করে দেখা হবে না।’ প্রসঙ্গত, কানাডায় ক্রমেই বাড়ছে হিন্দুদের ওপর হিংসার ঘটনা। হিন্দু কাউন্সিল অফ কানাডা জানিয়েছে, গত বছর অগাস্টে হিন্দু দেবতা গণেশের মূর্তি ভাঙচুর করা হয় এবং মিসিসাগার একটি কমিউনিটি (Anti Hindu) হলে হিন্দুবিরোধী মন্তব্য স্প্রে-পেইন্ট করা হয়। গত কয়েক বছরে হিন্দু মন্দির ভাঙচুরের ঘটনাও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে (Ontario Motion)।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share