Tejas Mk-1A: ৬২ হাজার কোটি টাকায় ৯৭টি তেজস মার্ক-১এ যুদ্ধবিমান কিনছে ভারত, হ্যালের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর

MoD signs deal with HAL for 97 Tejas Mark-1A jets worth Rs 62370 crore

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বহু যুদ্ধে অংশ নেওয়া বুড়ো ঘোড়াদের অবসরের আগের দিনই নতুন অশ্ব কেনার বরাত দিল ভারত।

বায়ুসেনায় মিগ যুগের অবসান

ভারতীয় বায়ুসেনায় মিগ যুগের অবসান হতে চলেছে৷ আর তার জায়গা নিচ্ছে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান তেজস৷ আজ শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর অবসর নিতে চলেছে বায়ুসেনার কিংবদন্তী মিগ-২১ (MiG-21) যুদ্ধবিমানগুলি। ঠিক তার আগের দিন, ৯৭টি মাল্টি-রোল সুপারসনিক লাইট কমব্যাট এয়ারক্র্যাফ্ট (এলসিএ) তেজস মার্ক-১এ যুদ্ধবিমান তৈরির জন্য হিন্দুস্থান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (HAL)-এর সঙ্গে চুক্তি করল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। চুক্তির মূল্য ৬২ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। গতমাসেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ক্যাবিনেট কমিটি এই চুক্তিতে ছাড়পত্র দিয়েছিল৷

২০২৭-২৮ অর্থবর্ষ থেকে ডেলিভারি!

প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, হ্যাল ৯৭টি যুদ্ধবিমান তৈরি করবে। এর মধ্যে থাকবে ৬৮টি ফাইটার যুদ্ধবিমান। আর বাকি ২৯টি থাকবে টুইন সিটার প্রশিক্ষণ বিমান। ২০২৭-২৮ অর্থবর্ষ থেকে এই যুদ্ধবিমানের ডেলিভারি শুরু করবে হিন্দুস্তান অ্যারনটিক্স লিমিটেড। বাকি যুদ্ধবিমানগুলি সরবরাহ করা হবে প্রথম ডেলিভারি থেকে শুরু করে ৬ বছরের মধ্যে। এর আগে হ্যালকে ৮৩টি তেজস মার্ক-১ যুদ্ধবিমান তৈরির বরাত দিয়েছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।

হাতে আসেনি প্রথম বরাতের প্রথম বিমান!

এর আগে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে বায়ুসেনা ৪৮,০০০ কোটি টাকায় ৮৩টি এলসিএ তেজস মার্ক-১এ বিমানের অর্ডার দিয়েছিল। কিন্তু চার বছর অতিক্রান্ত হওয়া সত্বেও সেই বিমান সরবরাহ শুরু হয়নি। এই নিয়ে প্রকাশ্যে উষ্মা প্রকাশ করেন বায়ুসেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিং। উৎপাদনকারী সংস্থা হ্যালের তরফে জানানো হয়, আমেরিকা থেকে ইঞ্জিন আসতে দেরি হওয়ার কারণেই এই বিলম্ব। সূত্রের খবর, প্রথম অর্ডারের প্রথম বিমান হাতে আসতে পারে ২০২৫ সালের অক্টোবরে। হ্যালের নাসিকের কারখানা থেকে প্রথম এলসিএ মার্ক-১এ (Tejas Mk1A) যুদ্ধবিমানটি শীঘ্রই আকাশে উড়বে। তার আগেই কেন্দ্রের তরফে দ্বিতীয় অর্ডার চলে হল।

মোট ১৮০টি তেজস মার্ক-১এ উৎপাদন

নতুন বরাতের ফলে, ভারতীয় বায়ুসেনায় মোট ১৮০টি তেজস মার্ক-১এ যুদ্ধবিমান আসতে চলেছে। জানা গিয়েছে, হ্যালের বেঙ্গালুরুর কারখানা প্রতি বছর ১৬টি এবং নাসিকে ২৪টি তেজস মার্ক-১এ (Tejas Mk1A) বিমান তৈরি করতে পারে। সেই অনুযায়ী, ২০৩২ সাল নাগাদ ১৮০টি বিমান সরবরাহ হতে পারে বলে অনুমান। এর মধ্যেই সূত্রের খবর, হ্যাল ভবিষ্যতে আরও ২০০টির বেশি তেজস মার্ক–২ এবং সমসংখ্যক পঞ্চম প্রজন্মের উন্নত মাঝারি যুদ্ধবিমান অ্যামকা তৈরির বড় অর্ডার পেতে চলেছে।

১১,৭৫০ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ কর্মসংস্থান

৪.৫ প্রজন্মের এলসিএ তেজস মার্ক-১এ যুদ্ধবিমানগুলির ৬৪ শতাংশই তৈরি হবে দেশীয় যন্ত্রপাতি দিয়ে। ফলত, প্রায় ৫০০টি দেশীয় শিল্প, বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি সংস্থাগুলি, প্রতিরক্ষা খাতে ব্যাপক ব্যবসার সুযোগ পাবে। বার্ষিক প্রায় ১১,৭৫০ জনের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ কর্মসংস্থান তৈরি হবে। প্রকল্পটি ‘আত্মনির্ভর ভারত’ এবং ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের অগ্রদূত হিসেবে ধরা হচ্ছে। এটি হতে চলেছে ভারতের প্রতিরক্ষা ও মহাকাশ ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর ভারতের অন্যতম বড় প্রতীক।

উত্তম আয়েসা, স্বয়ম রক্ষা কবচ

এই ফাইটার জেটগুলিতে ৬৭টি অতিরিক্ত ইক্যুইপমেন্ট অন্তর্ভুক্ত থাকবে। উত্তম অ্যাক্টিভ ইলেকট্রনিক্যালি স্ক্যানড অ্যারে রেডার (UTTAM AESA), স্বয়ম রক্ষা কবচ এবং কন্ট্রোল সারফেস অ্যাকচুয়েটর্সের মতো ইক্যুইপমেন্ট থাকবে এই ধরনের যুদ্ধবিমানে। ইতিমধ্যেই জিই-৪০৪ ইঞ্জিন এসেছে হ্যালের হাতে। এই ধরনের যুদ্ধবিমানে তৈরির জন্য ওই ইঞ্জিন ব্যবহার করা হবে। এই যুদ্ধবিমানে মিড-এয়ার রিফুয়েলিং ক্ষমতা থাকবে।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share