SIR: গর্তে ঢালা হয়েছে কার্বলিক অ্যাসিড! স্বরূপনগরের হাকিমপুর চেকপোস্টে ভিড় অনুপ্রবেশকারীদের

sir Bangladeshis trying to cross india border Bangladesh

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে ইলেকশন কমিশন পশ্চিমবঙ্গের ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করার কাজে নেমেছে৷ দামি ব্লিচিং পাউডার ও ফিনাইল ব্যবহার করা হচ্ছে৷ আর গর্তে দেওয়া হচ্ছে কার্বলিক অ্যাসিড৷ ফলে যেমন সাপ বেরোয়, তেমন এরা রাস্তায় বের হচ্ছে৷” সপ্তাহখানেক আগে ঠিক এই ভাষায়ই এসআইআরের (SIR) প্রতিবাদে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে করা মিছিলকে কটাক্ষ করেছিলেন রাজ্যের (Bangladesh) বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী।

কাগজ নেই, কবুল করলেন অনুপ্রবেশকারীরা (SIR)

রাজ্যের বিরোধী দলনেতার কথা যে নেহাত অমূলক নয়, সেটা মালুম হয় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায়। এই যেমন হাকিমপুর চেকপোস্ট। এখানে লোটা-কম্বল নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন শ’য়ে শ’য়ে মানুষ। কারণ মাথায় বোঁচকা, কেউ আবার দাঁড়িয়ে রয়েছেন বড় বড় ট্রলি ব্যাগ নিয়ে। মাথায়-হাতে-কাঁধে থাকা ব্যাগে ভর্তি গেরস্থালির জিনিসপত্র। সেই সব বোঝা নিয়েই ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন, কখন সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পৌঁছবেন তাঁরা, সেই অপেক্ষায়। সীমান্তে অপেক্ষারত এই অনুপ্রবেশকারীদের কাছ থেকেই জানা গিয়েছে, এসআইআরের ভয়ে ভারত ছেড়ে বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছেন তাঁরা। এঁদের অনেকেই কবুল করলেন, কোনও কাগজপত্র ছাড়াই ভারতে বসবাস করছিলেন তাঁরা। রুটি-রুজির জন্যই স্বদেশ ছেড়ে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে পড়শি দেশে ঠাঁই নিয়েছিলেন। সেখানেও এসআইআর শুরু হওয়ায় ভয়ে ফের প্রাণ হাতে করে বাংলাদেশে ফিরতে প্রতীক্ষার প্রহর গুণছেন তাঁরা।

এসআইআর জুজু!

দেশজুড়ে চালু হয়েছে এসআইআর প্রক্রিয়া। এসআইআরের মাধ্যমে ভোটার লিস্ট ঝাড়াই-বাছাই করার পর হয়েছে বিহার বিধানসভার নির্বাচন। বস্তুত, বিহারেই প্রথম শুরু হয় এসআইআর। এই এসআইআর চালু হতেই ঝুলি থেকে বেরিয়ে এসেছে বিড়াল। বাদ গিয়েছে বহু ভুয়ো এবং মৃত ভোটারের নাম। বিহারের পর এসআইআর চালু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১২টি রাজ্যে। তার পরেই দলে দলে ভারত ছেড়ে বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছেন অনুপ্রবেশকারীরা। হাকিমপুর চেকপোস্টেই সীমান্ত পার হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন ৩০০-এরও বেশি অনুপ্রবেশকারী। তাঁদের আটকেছেন ১৪৩ নম্বর ব্যাটেলিয়নের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর জওয়ানরা। তাঁদের কাছে কী কী বৈধ কাগজপত্র রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। নিজের দেশেই যে এত অনুপ্রবেশকারী এসে তাঁদের রুটি-রুজিতে ভাগ বসিয়েছিলেন, তা দেখে অবাক স্বরূপনগরের বাসিন্দারাও (SIR)।

কী বলছেন অনুপ্রবেশকারীরা

বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিলেন সাবিনা পারভিনও। পোঁটলা-পুঁটলি নিয়ে তিনিও ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন সীমান্তে, বাংলাদেশে ফেরার অপেক্ষায়। সাবিনা যে ভারতে বেআইনিভাবে বসবাস করছিলেন (Bangladesh), মুক্ত কণ্ঠে তা কবুলও করলেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে বাড়ি। থাকতাম বিরাটিতে। আমার কাছে কাগজপত্র নেই, অবৈধভাবেই থাকতাম।” এই লাইনেই দাঁড়িয়ে থাকা আরও এক মহিলা বলেন, “চিনারপার্কে থাকতাম। আমার কাছে আধার কার্ড নেই। পেটের দায়ে এসেছিলাম এদেশে। লোকের বাড়ি বাড়ি কাজ করে কিছু রোজগার হত।” অবশ্য এই প্রথম নয়, এসআইআর ঘোষণা হয়েছে গত মাসের একেবারে শেষের দিকে। তারপর থেকে কার্যত হিড়িক পড়েছে বাংলাদেশে ফেরার। ২ নভেম্বর ধরা পড়েছিলেন ১১ জন অনুপ্রবেশকারী। তার পরের দিনই ৪৫ জনকে ধরে ফেলে বিএসএফ। ৪ নভেম্বর ধরা হয় আরও ৩৮ জন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে। ১০ তারিখে গ্রেফতার করা হয় ১০ জন অনুপ্রবেশকারীকে (SIR)।

ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এগুলি নমুনা মাত্র। প্রায় প্রতিদিনই সীমান্ত পেরিয়ে ওপারে পালানোর চেষ্টা করার সময় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে আটক করা হচ্ছে ভারতে বসবাস করা অবৈধ বাংলাদেশিদের। এসআইআর চালু হতেই তাঁরা সকলে তল্পিতল্পা গুটিয়ে দেশে পালানোর চেষ্টা করছে। কেউ কেউ সীমান্তে প্রহরারত জওয়ানদের (Bangladesh) চোখ ফাঁকি দিয়ে পদ্মা পার হয়ে গেলেও, অনেকেই ধরা পড়ছে বিএসএফের জালে (SIR)।

আসলে গর্তে যে ঢালা হয়েছে কার্বলিক অ্যাসিড!

 

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share