Bihar Poll 2025: বিহারের ভোটের তালিকায় নেপালি-বাংলাদেশিদের ‘অনুপ্রবেশ’! বাদ লক্ষ নাম, চিন্তিত মমতা?

bihar poll eci found a large number of people from outside during the time of special intensive revision of voter list

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভোটমুখী বিহারে (Bihar Poll 2025) চলছে ভোটার তালিকা সংশোধন (Special Intensive Revision of voter list)। যাকে বলা হচ্ছে ‘স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন’। অবৈধ অনুপ্রবেশকারী- সহ অযোগ্য ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, প্রায় ৬ কোটি ৬০ লাখ ভোটার রিভিউ ফর্ম পূরণ করেছেন। যা মোট ভোটারের ৮৮.১৮ শতাংশ। ২৫ জুলাই পর্যন্ত ফর্ম পূরণের সময় রয়েছে। প্রাথমিকভাবে খবর, বিহারের (Bihar) বর্তমান ভোটার তালিকা থেকে ৩৯ লাখ ভোটারের নাম বাদ যেতে পারে। তারা ভারতীয় নন বলে কমিশনের বুথ লেভেল অফিসারের চিহ্নিত করেছে। এই নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই সরব হয়েছেন। কেন? আসলে কী ভয়। এ রাজ্যে বিরোধীদের সঙ্গে শাসক দলের ভোটের ফারাক খানিকটা ওরকমই। তাই কী ভয় পাচ্ছেন মমতা?

ভোটার তালিকায় বিদেশিরা

এই বছরের অক্টোবর বা নভেম্বরে বিহারে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বিধানসভা নির্বাচন। তারই প্রস্তুতিতে এখন তৎপর নির্বাচন কমিশন। ভোটার (Bihar Poll 2025) তালিকা সংশোধনের কাজ চলছে জোরকদমে। সেই প্রক্রিয়াতেই উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ভোটার তালিকায় নেপাল, বাংলাদেশ ও মায়ানমার থেকে আগত বিপুল সংখ্যক মানুষের নাম রয়েছে বলে দাবি নির্বাচন কমিশনের। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, ভোটার তালিকার পর্যালোচনার অংশ হিসেবে বুথ স্তরের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি পরিদর্শনে যাচ্ছেন। তাতেই তাঁদের নজরে আসে ভোটার তালিকায় এই ‘বিদেশি’ অভিবাসীদের উপস্থিতি। কমিশনের মতে, এঁদের মধ্যে কেউই ভারতে ভোটাধিকার পাওয়ার যোগ্য নন। সূত্রের খবর, ১ অগাস্টের পর থেকে কমিশন এই তালিকায় থাকা সন্দেহভাজন নামগুলি নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত চালাবে। সেই অনুসন্ধানের ভিত্তিতে ৩০ সেপ্টেম্বর যে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে, তাতে এ ধরনের ‘অবৈধ’ ভোটারদের নাম আর থাকবে না বলেই জানানো হয়েছে।

স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশনের উদ্দেশ্য

বিহারের (Bihar Poll 2025) ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, ২০০৩-এর ভোটার তালিকায় যাঁদের নাম ছিল, তাঁদের সমস্যা নেই। কিন্তু বাকিদের মধ্যে যাঁদের জন্ম ১৯৮৭ সালের আগে, তাঁদের জন্মের প্রমাণপত্র দিতে হবে। তাঁরা গত লোকসভা নির্বাচনে ভোট দিয়ে থাকলেও ছাড় নেই। ১৯৮৭ থেকে ২০০৪-এর মধ্যে যাঁরা জন্মেছেন, তাঁদের নিজেদের এবং বাবা-মায়ের মধ্যে যে কোনও এক জনের জন্মের প্রমাণপত্র দিতে হবে। ২০০৪-এর পরে জন্ম হলে নিজের ও বাবা-মায়ের দু’জনেরই জন্মের প্রমাণপত্র দিতে হবে। কমিশন সূত্রের খবর, এই ভুয়ো ভোটার বাছতে গিয়েই ভূরি ভূরি বিদেশি ভোটারের হদিশ মিলছে। এদের অধিকাংশই বাংলাদেশ বা নেপালের বাসিন্দা। কেউ কেউ রয়েছেন মায়ানমারের। সংখ্যাটা সঠিকভাবে জানানো না হলেও সেটা চমকে দেওয়ার মতো। কমিশন সূত্রের খবর, এই ধরনের ভোটারদের নাম আগামী সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত হতে চলে ভোটার তালিকায় রাখা হবে না। ওই ভোটার তালিকায় শুধু ভারতীয়দের নাম থাকবে। সেটাই স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশনের উদ্দেশ্য।

সারা দেশে হবে ভোটার তালিকা সংশোধন

এই পদক্ষেপ শুধু বিহারেই (Bihar Poll 2025) সীমাবদ্ধ থাকবে না, নির্বাচন কমিশন সাফ জানিয়ে দিয়েছে, সারা দেশে ভোটার তালিকা পর্যালোচনার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে এমনই কড়া নজরদারি চালানো হবে। সন্দেহজনক ভোটারদের জন্মস্থান যাচাই করে, প্রয়োজনে তাঁদের নাম বাদ দেওয়ার দিকেই এগোবে কমিশন। বাংলায় আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে রাজ্যে ভোটার তালিকা থেকে এই বিপুল সংখ্যক ভোট বাদ পড়লে সমস্যায় পড়বে মমতা সরকার। টলমল করবে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি। তাই কী ভীত মমতা? তাই কী এই পদক্ষেপের বিপক্ষে সুপ্রিম দুয়ারে কড়া নাড়ছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র।

৮০ শতাংশ ভোটার ফর্ম জমা দিয়েছেন

এদিকে বিহারে (Bihar Poll 2025) ২৫ জুলাইয়ের মধ্যেই ভোটার তথ্য যাচাইয়ের কাজ সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। কমিশনের দাবি, ইতিমধ্যেই প্রায় ৮০ শতাংশ ভোটার ফর্ম জমা দিয়েছেন। এরই মাঝে, সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে, ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির সময় আধার কার্ড, ভোটার আইডি এবং রেশন কার্ড এই তিনটি নথিকে গ্রহণযোগ্য প্রমাণপত্র হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। পাশাপাশি আদালত এটাও খতিয়ে দেখবে যে, তালিকা সংশোধনের নামে আদৌ কোনও নাগরিক তাঁর ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কিনা। এই পরিস্থিতিতে বিহারে বিধানসভা ভোটের আগে ভোটার তালিকা সংশোধন এখন রাজনীতির অন্যতম স্পর্শকাতর ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share