Nadiad Case: হিন্দুদের ধর্মান্তর করতে বিদেশ থেকে অর্থ সাহায্য পেতেন মূল অভিযুক্ত স্টিভেন ম্যাকওয়ান!

Foreign funding mass conversions steven macwan under lens in gujarats nadiad case

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নয়া মোড় নিয়েছে নাডিয়াদ ধর্মান্তর (Nadiad Case) মামলা। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মূল অভিযুক্ত স্টিভেন ম্যাকওয়ান ও তাঁর সহযোগীরা বিদেশ থেকে অর্থ সাহায্য পেতেন হিন্দুদের, বিশেষ করে আদিবাসী ও তফশিলি জাতির মানুষদের ধর্মান্তরিত করতে প্রলুব্ধ করতে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা ধর্ম ত্যাগে রাজি হওয়া ব্যক্তিদের টাকার প্রতিশ্রুতি, বিভিন্ন বস্তু দিয়ে সাহায্য এবং ভালো জীবনের আশ্বাস দিতেন। খেদা পুলিশ এই ধর্মান্তর চক্রকে বহু রাজ্যজুড়ে বিস্তৃত একটি বড় নেটওয়ার্কের অংশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে, যেখানে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে আর্থিক (Foreign Funding) সাহায্যের স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে। তদন্তকারীদের ধারণা, অভিযুক্তরা ধর্মীয় আবেগ ও আর্থিক দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে সারা ভারতের শয়ে শয়ে মানুষকে প্রভাবিত করেছেন।

১.৫৭ লাখেরও বেশি ছবি এবং ভিডিও উদ্ধার (Nadiad Case)

ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা স্টিভেন ম্যাকওয়ানের ফোন থেকে ১.৫৭ লাখেরও বেশি ছবি এবং ভিডিও উদ্ধার করেছেন। এই ফাইলগুলির অনেকগুলিতেই ধর্মান্তর অনুষ্ঠান ও বৈঠকের নথি রয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে খ্রিস্টধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যেই আয়োজন করা হয়েছিল এই সব অনুষ্ঠান ও বৈঠকের। উদ্ধার করা ফাইলগুলি নিয়ে বর্তমানে চলছে বিস্তারিত ফরেনসিক বিশ্লেষণ। তদন্তকারীরা স্টিভেনের ট্রাস্টের সঙ্গে যুক্ত ব্যাংক লেনদেন ও অনলাইন যোগাযোগও খতিয়ে দেখছেন। কতজন ব্যক্তিকে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে এবং কী ধরনের প্রেরণা দেওয়া হয়েছে তা শনাক্ত করতে। প্রাথমিক তদন্তে ইঙ্গিত, অভিযুক্ত ব্যক্তি একাধিক ধাপে পরিকল্পিত পদ্ধতি ব্যবহার করতেন। প্রথমে ব্যক্তিগত যোগাযোগ স্থাপন, পরে আবেগীয় প্রভাব বিস্তার, এবং শেষ পর্যায়ে ধর্মান্তরণকে শান্তি ও সুখের পথ হিসেবে উপস্থাপন করতেন (Nadiad Case)।

কোটি টাকার লেনদেন

পুলিশি তদন্তের সময় কর্তারা স্টিভেনের অ্যাকাউন্টে ১ কোটি টাকার একটি লেনদেনের তথ্য পেয়েছেন। ওই টাকা বিদেশ থেকে এসেছে বলে অনুমান। এই তথ্য প্রকাশের পর তদন্তকারীদের সন্দেহ আরও গভীর হয়েছে যে বিদেশি মিশনারি সংগঠনগুলি এই নেটওয়ার্কে অর্থায়ন করেছিল। তদন্তকারীদের মতে, স্টিভেন প্রতিটি অঞ্চলের ওপর বিস্তারিতভাবে গবেষণা করতেন। এরপর শুরু করতেন টার্গেটভিত্তিক কার্যকলাপ। তিনি বিশেষ করে আদিবাসী ও দলিত পটভূমির আর্থিকভাবে দুর্বল পরিবারগুলিকে টার্গেট করতেন এবং তাদের ঘরবাড়ি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার সুবিধার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্মান্তরণের জন্য প্রলুব্ধ করতেন (Foreign Funding)। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অধিকাংশ ধর্মান্তর গোপনে সম্পন্ন করা হয়েছিল প্রার্থনা সভা বা সামাজিক অনুষ্ঠানের আড়ালে, যেখানে প্রায়ই গুজরাট ফ্রিডম অফ রিলিজিয়ন অ্যাক্টের আওতায় নির্ধারিত আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি (Nadiad Case)।

ধর্মান্তর সংক্রান্ত সেমিনার পরিচালনা

তদন্তকারীরা জেনেছেন, স্টিভেন গুজরাটের নাডিয়াদ, তাপি, নর্মদা, ভরুচ ও আনন্দ জেলা-সহ বিভিন্ন জেলায় ধর্মান্তর সংক্রান্ত সেমিনার পরিচালনা করেছিলেন। তবে তাঁর প্রভাব গুজরাটের বাইরেও বিস্তৃত ছিল। ধর্মান্তরিত ব্যক্তিদের মধ্যে রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, হরিয়ানা, পাঞ্জাব এবং দিল্লির মানুষও রয়েছেন। তদন্তকারীদের মতে, স্টিভেনের সংস্থা রেস্টোলেশন–রিভাইভাল ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট এই সব  কার্যকলাপের ঢাল হিসেবে কাজ করত। দাতব্য সংস্থা হিসেবে নথিভুক্ত এই ট্রাস্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অবৈধ ও অনথিভুক্ত প্রার্থনা কেন্দ্র পরিচালনা করত, যেখানে পাদ্রিরা গ্রামীণ বা আদিবাসী এলাকার মানুষকে একত্রিত করে ধীরে ধীরে তাদের ধর্মান্তরে উৎসাহিত করত।

নেটওয়ার্কের অংশ

ফরেনসিক দল স্টিভেন ও তাঁর নেটওয়ার্কের অংশ বলে ধারণা করা একাধিক পাদ্রির মধ্যে ডিজিটাল পেমেন্ট ও তহবিল স্থানান্তরের তথ্য থেকে জেনেছেন এই ব্যক্তিরা দুর্গম গ্রামগুলিতেও ধর্মান্তরকরণে সাহায্য করেছিলেন। সেখানে তাঁরা খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণকারীদের ‘অলৌকিক ঘটনা’ ও ‘ঈশ্বরীয় আশীর্বাদের’ প্রতিশ্রুতি দিতেন (Nadiad Case)। তদন্তে রেস্টোরেশন রিভাইভাল ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের আর্থিক অনিয়ম স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে। আধিকারিকদের মতে, এই ট্রাস্ট অডিট সম্পন্ন করেনি। এখন চ্যারিটি কমিশনারের দফতরকে অতিরিক্ত তদারকির জন্য সতর্ক করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, গত তিন বছরে এই ট্রাস্টের মাধ্যমে প্রায় ১.৩৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যার একটি বড় অংশ বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে এসেছে। এই অর্থ ব্যবহার করা হয়েছে ধর্মীয় সভা আয়োজন, প্রচারপত্র ছাপানো এবং ধর্মান্তরিত হতে সম্মত ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তা দানের জন্য।

বিদেশি অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইন

এই আর্থিক লেনদেনগুলি বিদেশি অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইন (FCRA)–এর ধারাগুলি লঙ্ঘন করেছে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের অনুমান, এই মামলা এনজিও এবং অনথিভুক্ত ট্রাস্টের মাধ্যমে পরিচালিত মিশনারি গোষ্ঠীগুলির একটি বৃহৎ সর্বভারতীয় নেটওয়ার্ক উন্মোচন করতে পারে। পুলিশ এই বিদেশি অর্থায়নের উৎস খুঁজে বের করতে এবং স্থানীয় সহযোগীদের শনাক্ত করতে অন্যান্য রাজ্যের ইউনিটগুলির সঙ্গে সমন্বয় করছে (Foreign Funding)।
খেদা জেলার এক সিনিয়র পুলিশ কর্তা জানান, “এটি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এই অভিযানটি সুপরিকল্পিত, পর্যাপ্ত অর্থায়িত এবং দাতব্য কাজের ছদ্মবেশে দুর্বল গোষ্ঠীগুলিকে পদ্ধতিগতভাবে ধর্মান্তর করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত (Nadiad Case)।”

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share