মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারত ও বিদেশে হিন্দু এবং হিন্দু ধর্মের ওপর অবিরাম চলছে হামলা। বিশ্বের বহু অঞ্চলে এই নির্যাতন আমাদের চোখের সামনে ধীরে ধীরে চলতে থাকা এক গণহত্যার মতো। কয়েক দশক ধরে বিশ্ব এই হামলার আসল গভীরতা ও বিস্তৃতিকে উপেক্ষা করেছে চলছে। যা ভয়াবহ হিন্দু-বিরোধী বিদ্বেষ দ্বারা পরিচালিত। খুন, জোরপূর্বক ধর্মান্তর, জমি দখল, উৎসবের ওপর হামলা, মন্দির ও মূর্তি ভাঙচুর, বিদ্বেষমূলক বক্তৃতা, যৌন হিংসা থেকে শুরু করে প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনি বৈষম্য – হিন্দুরা (Hindus Under Attack) এখন তাঁদের অস্তিত্বের ওপর ক্রমবর্ধমান আক্রমণ ও এক নজিরবিহীন হিন্দু বিদ্বেষের মুখোমুখি হয়েছেন (Roundup Week)।
অপরাধের সংক্ষিপ্ত ছবি (Hindus Under Attack)
২০২৫ সালের ৩ অগাস্ট থেকে ৯ অগাস্ট পর্যন্ত গত এক সপ্তাহে আমরা এমন কিছু অপরাধের একটি সংক্ষিপ্ত ছবি তুলে ধরার চেষ্টা করছি, যাতে বিশ্বব্যাপী আরও বেশি করে মানুষ এই মানবাধিকার সংকট সম্পর্কে সচেতন হন। প্রথমেই তাকানো যাক ভারতের দিকে। নাঈম কাদরি ওরফে পীর নামে এক ভুয়া ডাক্তারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে এক হিন্দু মহিলাকে চাপ দিচ্ছিল যাতে তিনি তাঁর নাবালিকা মেয়েকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করে তার সঙ্গে বিয়ে দেন। অভিযুক্ত ব্যক্তি আসলে একজন প্রতারক, যার কোনও বৈধ চিকিৎসা ডিগ্রি নেই এবং সে গোপনে তন্ত্র, কালাজাদু ও তথাকথিত ‘বিশ্বাসভিত্তিক চিকিৎসা’ ব্যবহার করে নারীদের প্রভাবিত করত। উত্তরপ্রদেশে এক সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ সালাউদ্দিনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। অভিযোগ, তিনি হিন্দু শিক্ষার্থীদের জোর করে উর্দু শেখাতেন এবং তাঁদের ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চাপ দিতেন। ঘটনাটি বিজনোর জেলার হরবংশপুর ধর্মের একটি কম্পোজিট স্কুলের। উত্তরপ্রদেশের চৌবেপুরের বারাণসীতে এক হিন্দু ব্যক্তির অভিযোগ, তাঁর স্ত্রী এবং প্রয়াগরাজের এক ইসলামপন্থী যুবক মহম্মদ আফজল, একটি ধর্মান্তর ষড়যন্ত্রে জড়িত। ওই ব্যক্তির দাবি, তাঁর স্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আফজলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত এবং প্রেমের ফাঁদে ফেলে আফজল সম্ভবত তাকে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করছিল। দেওরিয়া জেলায় ‘লাভ জিহাদ’ ষড়যন্ত্রের চক্রী সন্দেহভাজন সামির আলিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
কী বলছেন বিধায়ক
সদর বিধায়ক ডা. শলভ মণি ত্রিপাঠীর জরুরি অভিযোগের ভিত্তিতে, গৌরিবাজার থানার বিভিন্ন ঘটনার পর পুলিশ তৎপর হয়। তামিল অভিনেতা কমল হাসন যিনি একসময় খ্রিস্টধর্ম প্রচারের কথা স্বীকার করেছিলেন, তিনিই এখন সনাতন ধর্মের শৃঙ্খল ভাঙার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। কর্নাটকের চামরাজনগরের এক মঠে হিন্দু সন্ন্যাসী সেজে থাকত বছর বাইশের এক মুসলিম। স্থানীয়রা তার মুসলিম পরিচয় জানতে পারার (Hindus Under Attack) পরেই মঠ ছেড়ে পালিয়ে যায় সে। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ‘লাভ জিহাদের’ একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনায় অপহৃত এক হিন্দু কিশোরীকে উদ্ধার করেছে এবং অভিযুক্ত সাইনুল শাহকে গ্রেফতার করেছে। অভিযোগ, সে ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকে প্রলুব্ধ করেছিল।
আইএসআইএসের সঙ্গে যুক্ত নেটওয়ার্কের অংশ
দেওরিয়া থেকে মুম্বাই পর্যন্ত বিস্তৃত এই পুলিশ অভিযান ক্রমবর্ধমান এই বিপদের গুরুত্বকে প্রমাণ করে। এদিকে, ইডি কর্নাটকের ঐতিহ্যবাহী ধর্মস্থল মঞ্জুনাথ স্বামী মন্দিরকে লক্ষ্য করে একটি গুরুতর জঙ্গি ষড়যন্ত্রের তথ্য উদঘাটন করেছে, যা দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে সক্রিয় এক আইএসআইএসের সঙ্গে যুক্ত নেটওয়ার্কের অংশ। মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় ‘লাভ জিহাদে’র ভয়াবহতার তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। মালওয়া-নিমার অঞ্চল, যা একসময় সিমির মতো জঙ্গি নেটওয়ার্কের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল, সেখানে ২৮৩ জন হিন্দু মেয়ে লাভ জিহাদের ফাঁদে পড়েছে, যাদের মধ্যে ৭৩ জনই আবার নাবালিকা (Roundup Week)।
বাংলাদেশের ছবিটা
এবার দেখে নেওয়া যাক বাংলাদেশের (Hindus Under Attack) ছবিটা। সেখানে হিন্দুদের ওপর মুসলমানদের হামলা অব্যাহত। এর উদ্দেশ্য হল ধীরে ধীরে দেশ থেকে এই ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নির্মূল করা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল বরকতের একটি গবেষণা অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে কোনও হিন্দু আর অবশিষ্ট থাকবেন না। কারণ তাঁরা পদ্ধতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। মন্দির ভাঙচুর, ভূমি দখল, মিথ্যা ধর্মনিন্দার অভিযোগে গণপ্রহার, নারীদের ধর্ষণ বা জোরপূর্বক ধর্মান্তর, এবং বিদ্বেষমূলক বক্তৃতা – এসবই হিন্দুদের ভয় দেখানো সে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ‘ধর্মনিন্দা’র অজুহাতে মুসলিম দাঙ্গাবাজদের হামলার শিকার সংখ্যালঘু ভুক্তভোগীদের জন্য নির্ধারিত ত্রাণ বিলি বন্ধ করে দেয় এবং আধ্যাত্মিক গুরু শ্রী গোপীনাথ দাস ব্রহ্মচারীকে অপমান করে (Roundup Week)।
তামাম বিশ্বের ছবিটাও এর ব্যতিক্রম নয়। এই সপ্তাহের শুরুর দিকে আয়ারল্যান্ডে কেরালার এক দম্পতির ছয় বছরের কন্যা নিয়া তার বাড়ির বাইরেই হামলার শিকার হয়। তার ওপর ব্যাপক তাণ্ডব চালানোর পাশাপাশি তারা তাকে ‘নোংরা ইন্ডিয়ান’ বলে গালাগালি দেয়। চিৎকার করে বলতে থাকে ‘ভারতে ফিরে যাও’ (Hindus Under Attack)।
Leave a Reply