Lashkar E Taibas: পাক মদতে লস্কর ফের তৈরি করছে ‘অপারেশন সিঁদুরে’ গুঁড়িয়ে দেওয়া সদর দফতর

Lashkar e taibas muridke resurrection after operation sindoor with pakistans help

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গত ৭ মে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ‘অপারেশন সিঁদুর’ (Operation Sindoor) অভিযান চালিয়ে জঙ্গিঘাঁটি ভেঙে দিয়েছিল ভারতীয় সেনা। তার পর কিছুদিন ভয়ে গুটিয়ে ছিল জঙ্গিরা। অভিযোগ, পাকিস্তানের মদত পেয়ে তারা ফের মাথা তুলেছে। ওই অভিযানে পাক পাঞ্জাবের মুরিদকে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল লস্কর-ই-তৈবার (Lashkar E Taibas) সদর দফতর মার্কাজ তায়েবা। ধ্বংসপ্রাপ্ত সেই সদর দফতর পুনর্নিমাণে ফের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে পাক মদতপুষ্ট এই জঙ্গি সংগঠন। এই তথ্য জানা গিয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে প্রাপ্ত একটি রিপোর্টে।

অপারেশন সিঁদুর (Lashkar E Taibas)

পাকিস্তানের সময় অনুযায়ী, ওই দিন রাত ১২টা ৩৫ মিনিট নাগাদ ভারতীয় মিরাজ বিমান পাঞ্জাব প্রদেশের গভীরে ঢুকে মার্কাজ তায়েবা ক্যাম্পাসের ১.০৯ একর এলাকায় তিনটি প্রধান কাঠামোর ওপর বিমান হামলা চালায়। টার্গেটে ছিল, একটি লাল রংয়ের বহুতল ভবন, যেটি ব্যবহৃত হত ক্যাডারদের ব্যবস্থাপনা ও অস্ত্রসংগ্রহের জন্য, এবং হলুদ রংয়ের দুটি ভবন যেখানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হত এবং সংগঠনের সিনিয়র কমান্ডারদের আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহৃত হত। অপারেশন সিঁদুরের জেরে ওই তিনটি ভবনেরই ধ্বংসাবশেষ ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট ছিল না। বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের এই হামলা লস্করের পরিকাঠামোর ওপর ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার পর সব চেয়ে বিধ্বংসী আঘাত। সূত্রের খবর, ১৮ অগাস্ট লস্কর-ই-তৈবা ভারী যন্ত্রপাতি মোতায়েন করে ধ্বংসাবশেষগুলি সরিয়ে ফেলে। লস্করের ক্যাডারদের দেখা গিয়েছে, ধ্বংসাবশেষ সরানোর তদারকি করতে।

পুনর্নির্মিত ভবনের উদ্বোধন ফেব্রুয়ারিতে!

সূত্রের খবর, বর্তমানে এই জঙ্গি গোষ্ঠীর নজর আগামী বছরের ৫ ফেব্রুয়ারির দিকে। ফি বছর এই দিনটি পালিত হয় ‘কাশ্মীর সংহতি দিবস’ হিসেবে। এই দিনেই উদ্বোধন করা হতে পারে পুনর্নির্মিত ভবনের। এদিনই হতে পারে লস্করের বার্ষিক সম্মেলনও। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, পুনর্নির্মিত মার্কাজ ফের প্রশিক্ষণ, আদর্শায়ন এবং অপারেশনাল পরিকল্পনার কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে। সদর দফতর পুনর্নির্মাণের কাজ ব্যক্তিগতভাবে তত্ত্ববধান করছেন মাওলানা আবু জার। তিনি মার্কাজ তৈবার পরিচালক এবং লস্করের প্রধান প্রশিক্ষক। তিনি উস্তাদ উল মুজাহিদ্দিন হিসেবেও পরিচিত। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন ইউনূস শাহ বুখারিও। অপারেশনাল তত্ত্বাবধানে কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বুখারি (Lashkar E Taibas)।

জঙ্গি গোষ্ঠীটির অস্থায়ী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

জানা গিয়েছে, এই জঙ্গি গোষ্ঠীটি অস্থায়ীভাবে তাদের প্রশিক্ষণ শাখাগুলিকে বাহাওয়ালপুরের মারকাজ আকসায় এবং পরে কাসুর জেলার পাটোকির মারকাজ ইয়ারমুকে স্থানান্তরিত করেছে (Operation Sindoor)। এর নেতৃত্বে ছিলেন উপ-প্রধান সাইফুল্লাহ কাসুরির বিশ্বস্ত সহযোগী আবদুল রশিদ মহসিন। ডসিয়ার অনুসারে, ইসলামাবাদ প্রকাশ্যে লস্কর-ই-তৈবা এবং জৈশ-ই-মহম্মদের (জেইএম) ধ্বংস হওয়া কার্যালয়গুলির জন্য আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এগুলিই ধ্বংস হয়েছিল অপারেশন সিন্দুরে। অগাস্ট মাসে লস্কর-ই-তৈবা পাকিস্তান সরকারের কাছ থেকে ৪ কোটি টাকা পেয়েছে। অনুমান, ওই ভবনগুলি তৈরি করতে খরচ হবে ১৫ কোটি টাকারও বেশি। এই আর্থিক ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে বন্যা ত্রাণ কর্মসূচি তহবিলের আড়ালে অর্থ সংগ্রহ করেছে লস্কর। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, পাকিস্তানের এহেন আচরণ মুখোশ খুলে দিয়েছে ইসলামাবাদের ভন্ডামির। আন্তর্জাতিক মঞ্চে তারা দাবি করছে, পাকিস্তান উগ্রপন্থার শিকার, যদিও রাষ্ট্র স্বয়ং অর্থায়ন করে চলেছে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে (Lashkar E Taibas)।

পাকিস্তানের দ্বিচারিতা

২০০৫ সালে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে (PoK) ভূমিকম্পের পরে লস্কর (সেই সময় জামাত-উদ-দাওয়া নামে পরিচিত ছিল) মানবিক সাহায্যের নামে কোটি কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল। পরবর্তীকালে জানা যায় যে, সংগৃহীত অর্থের  ৮০ শতাংশই জঙ্গিঘাঁটি গড়তে খরচ করা হয়েছে। এর মধ্যে কোতলি অঞ্চলে অবস্থিত মার্কাজ আব্বাস নির্মাণও ছিল, অপারেশেন সিঁদুরে যেটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।অপারেশন সিঁদুরের কৌশলগত সাফল্যের পরেও, লস্করের দ্রুত উত্থান তার মজবুত সংগঠনেরই প্রমাণ দেয়, যে গোষ্ঠীতে নিয়মিত অর্থায়ন করে চলে রাষ্ট্র নিজে। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে মার্কাজ পুনর্নির্মাণের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা করেছে (Operation Sindoor)। এটি প্রতিরোধ ও প্রচারের কাজ করবে। নিশ্চিত করবে পাকিস্তানের ভারতের বিরুদ্ধে প্রক্সি যুদ্ধে তার কেন্দ্রীয় ভূমিকা। লস্করের প্রক্সি ফ্রন্টগুলির বিস্তার দ্য রেসিস্ট্যান্স ফ্রন্ট, পিপলস অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট ফ্রন্ট, কাশ্মীর টাইগার্স এবং মাউন্টেন ওয়ারিওর্স অফ কাশ্মীর – একদিকে যেমন পাকিস্তানকে অস্বীকার করার সুযোগ করে দেয়, তেমনি অন্য দিকে ভারত-বিরোধী হিংসার ধারাবাহিকতাকে নিশ্চিত করে (Lashkar E Taibas)।

ইসলামাবাদের অর্থায়ন

মুরিদকের এই ঘটনা পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা ও জঙ্গি সংগঠনগুলির মধ্যের গভীর সম্পর্কের সুস্পষ্ট নিদর্শন। সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বন্ধ করার বদলে, ইসলামাবাদের অর্থায়ন, সাহায্য এবং উদাসীনতা নিশ্চিত করে যে লস্করের মতো গোষ্ঠীগুলি শুধু টিকে থাকবে না, বরং আরও ডালপালা বিস্তার করবে। প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল দক্ষিণ কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে বেছে বেছে ২৬ জন হিন্দু পর্যটককে হত্যা করে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা। তার দিন পনেরো পরেই পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে অপারেশন সিঁদুর চালায় ভারত (Lashkar E Taibas)।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share