মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অরুণাচল প্রদেশ (Arunachal Pradesh) চিনের অংশ। এই দাবি দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছে ড্রাগনের দেশ। তবে শি জিনপিংয়ের দেশের সেই দাবি উড়িয়ে দিয়ে ভারত সাফ জানিয়ে দিয়েছে অরুণাচল প্রদেশ ভারতেরই ছিল, আছে এবং থাকবেও (Shanghai Airport)। তবে ভারত এবং চিনের এই দোটানার মধ্যে পড়ে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হল অরুণাচল প্রদেশের এই মহিলাকে।
১৮ ঘণ্টা আটকে, কড়া প্রতিক্রিয়া ভারতের (Arunachal Pradesh)
আদতে অরুণাচল প্রদেশের বাসিন্দা ওই মহিলা বর্তমানে থাকেন ব্রিটেনে। ২১ নভেম্বর সাংহাই পুডং বিমানবন্দরে তাঁকে প্রায় ১৮ ঘণ্টা আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। ওই মহিলার নাম প্রেমা ওয়াংজম থংডক। বিমানবন্দরে থাকা কয়েকজন চিনা আধিকারিক দাবি করেন, তাঁর পাসপোর্টটি ভারতীয়। জন্মস্থান হিসেবে উল্লেখ রয়েছে অরুণাচল প্রদেশের। ওই আধিকারিকরা জানান, এটি অবৈধ। কারণ ওই প্রদেশ চিনের অংশ। খবরটি দ্রুত পৌঁছে যায় ভারতীয় কর্তাদের কানে। সঙ্গে সঙ্গেই পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তাঁরা। তীব্র প্রতিবাদ জানান চিনা কর্তৃপক্ষের কাছে। সাংহাইয়ে অবস্থিত ভারতীয় কনস্যুলেটও স্থানীয়ভাবে বিষয়টি উত্থাপন করে এবং প্রেমাকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সাহায্য দেয়।
অরুণাচল প্রদেশের বাসিন্দা
প্রেমা অরুণাচল প্রদেশের পশ্চিম কামেং জেলার রূপা এলাকার বাসিন্দা। গত ১৪ বছর ধরে কর্মসূত্রে ব্রিটেনে বসবাস করছেন তিনি। ঘটনার দিন লন্ডন থেকে জাপানে যাচ্ছিলেন তিনি (Arunachal Pradesh)। এর মধ্যে সাংহাই পুডং বিমানবন্দরে তিন ঘণ্টার ট্রানজিট ছিল। সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই মহিলা জানান, নিরাপত্তা তল্লাশির সময় চিনা ইমিগ্রেশনের এক আধিকারিক তাঁকে (Shanghai Airport) আলাদা করে ডেকে নেন। তিনি যখন তাঁকে আটকে রাখার কারণ জানতে চান, তখন ওই আধিকারিক জানান যে তাঁর ভারতীয় পাসপোর্ট ‘অবৈধ’। কারণ অরুণাচল প্রদেশ চিনের অংশ। প্রেমা বলেন, “আমি যখন তাঁদের প্রশ্ন করতে চেষ্টা করলাম এবং জানতে চাইলাম সমস্যাটা কী, তাঁরা বললেন, ‘অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অংশ নয়’। তাঁরা আমায় উপহাস করতে শুরু করল। তাঁরা বলতে লাগল, ‘তোমার চিনা পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা উচিত। তুমি চিনা, ভারতীয় নও’”। তিনি বলেন, “এর আগে আমি কোনও সমস্যা ছাড়াই সাংহাই হয়ে ট্রানজিট করেছি। আমি অনেকক্ষণ আমার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি, পারিনি।” ভারতীয় ওই মহিলা বলেন, “লন্ডন থেকে ১২ ঘণ্টা ভ্রমণ করার পর আমায় ১৮ ঘণ্টা বিমানবন্দরে আটকে রাখা হয় (Arunachal Pradesh)। তারা আমার পাসপোর্ট নিয়ে নেয় এবং আমায় বের হতে দেয়নি। আমি খাবারও পাইনি। চিনে গুগল নেই, তাই কোনও তথ্যও পেতে পারছিলাম না। তারা আমায় জাপানে যেতে দিতে অস্বীকার করেছিল। যদিও আমার বৈধ জাপানি ভিসা ছিল। তারা জোর করে বলে যে আমায় হয় ব্রিটেনে ফিরে যেতে হবে, নয়তো ভারতে যেতে হবে।”
ওঁদের আচরণ অত্যন্ত অপমানজনক
প্রেমা বলেন, “ওঁদের আচরণ ছিল অত্যন্ত অপমানজনক এবং সন্দেহজনক, ইমিগ্রেশন স্টাফদের যেমন, তেমনই আচরণ করেছেন এয়ারলাইন স্টাফরাও। আমি সাংহাই এবং বেজিংয়ের ভারতীয় দূতাবাসে ফোন করি। এক ঘণ্টার মধ্যেই (Shanghai Airport) ভারতীয় কর্তারা বিমানবন্দরে এসে আমায় কিছু খাবার দেন। তাঁদের সঙ্গে সমস্যাগুলি নিয়ে কথা বলেন এবং আমায় দেশ থেকে বের হতে সাহায্য করেন। এটি ছিল দীর্ঘ ১৮ ঘণ্টার একটা লড়াই। কিন্তু আমি এখন খুশি যে এখন আমি সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছি (Arunachal Pradesh)।”
ত্রাতার ভূমিকায় ভারতীয় কর্তারা
জানা গিয়েছে, বিমানবন্দরে বেশ কয়েক ঘণ্টা আটকে থাকার পর প্রেমা একটি ফোন এবং তাঁর আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগের দাবি জানান। শেষ পর্যন্ত তিনি ব্রিটেনে থাকা তাঁর বন্ধুদের ফোন করেন। তাঁরা তাঁকে সাংহাইয়ের ভারতীয় কনস্যুলেটের সঙ্গে যোগাযোগ করাতে সাহায্য করেন। ভারতীয় কনস্যুলেটের কর্তারা এক ঘণ্টার মধ্যে বিমানবন্দরে পৌঁছন এবং তাঁকে সেই পরিস্থিতি থেকে বের হতে সাহায্য করেন। অরুণাচল প্রদেশের ওই মহিলা বলেন, “আমি কনস্যুলেটের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরে, সেখান থেকে ছ’জন কর্তা এক ঘণ্টার মধ্যেই বিমানবন্দরে এসে আমায় খাবার দেন। তাঁরা চেষ্টা করেছিলেন যেন আমায় জাপানে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু চিনা আধিকারিকরা তা কোনওভাবেই মানেনি। তাঁরা জোর করেছিলেন যে আমি যেন শুধু চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্সের মাধ্যমেই দেশ ছাড়ার টিকিট বুক করি। শেষ পর্যন্ত আমি তাইল্যান্ডে ট্রানজিট-সহ ভারতের ফ্লাইট বুক করি, এবং এখন তাইল্যান্ডেই থেকে কাজ করছি।” প্রেমা বলেন, “অনেক বছর ব্রিটেনে থাকার পরেও আমি আমার ভারতীয় পাসপোর্ট (Shanghai Airport) ছাড়িনি। কারণ আমি আমার দেশকে ভালোবাসি এবং নিজের দেশেই বিদেশি হতে চাই না (Arunachal Pradesh)।”

Leave a Reply