মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে রাজ্যে এমবিবিএস-এর প্রথম বর্ষে ভর্তি প্রক্রিয়া (West Bengal)। একই সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ডেন্টালে ভর্তি। এ নিয়ে সামনে এসেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার বিজ্ঞপ্তি। জানা যাচ্ছে, ওবিসি জটের কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে রাজ্য সরকারকে তোপ দেগেছেন বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। নিজের সামাজিক মাধ্যমে সুকান্তবাবু লিখেছেন, রাজ্যে মেডিক্যালে ভর্তির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। হঠাৎ করেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার একটি ‘জরুরি বিজ্ঞপ্ত’রি করে অনির্দিষ্টকালের জন্য মেডিক্যাল-ডেন্টাল কাউন্সেলিং ও ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে রাজ্যের হাজার হাজার মেডিক্যালপ্রার্থী ও তাঁদের অভিভাবকরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের প্রশ্ন (Sukanta Majumdar), রাজনীতির জন্য এক নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে তুষ্ট করতেই কি কাউন্সেলিং বন্ধ করে দেওয়া হল? সংরক্ষণের নামে কোনও বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা পাইয়ে দিতে কি এই পদক্ষেপ? তাঁর কটাক্ষ, এই সিদ্ধান্ত নিয়ে পরীক্ষায় সফল ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ কার্যত অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
মমতা সরকারকে আক্রমণ শুভেন্দুর (West Bengal)
সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ এবং জয়েন্ট ফল না প্রকাশ করার ইস্যুতে রাজ্যকে তীব্র আক্রমণ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তোপ দেগে তিনি বলেন, এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্যবসা চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী! যত সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়বে, তত মমতার ঘনিষ্ঠদের প্রাইভেট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাড়বে, ব্যবসা ফুলেফেঁপে উঠবে।” তাঁর দাবি, এইভাবে ১ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করার সুযোগ দিচ্ছে তৃণমূল সরকার। নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়কের কথায়, জাতীয় ওবিসি (OBC) তালিকার বাইরে থাকা ৭৬টি মুসলিম জনগোষ্ঠীকে ভোটব্যাঙ্কের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এই তালিকায় ঢোকাতে চায়। একই সঙ্গে ভর্তি প্রক্রিয়াতেও যাতে এরা বঞ্চিত না হয়, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। ফলত, সকল পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ জলাঞ্জলির পথে।
উদ্বেগ বাড়ছে অভিভাবক এবং ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে (Sukanta Majumdar)
প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকারের এমন বিজ্ঞপ্তির ফলে উদ্বেগ বাড়ছে অভিভাবক এবং ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে। কতদিন এভাবে চলবে, এনিয়েও উঠছে প্রশ্ন, এবং তাদের বছর নষ্ট হবে কিনা, সে আশঙ্কাও করছেন তাঁরা। তবে এখনও পর্যন্ত কী কারণে স্বাস্থ্য ভবন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা অবশ্য স্পষ্ট করে বলা হয়নি। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, সপ্তাহখানেক আগেই এমবিবিএস ও বিডিএস (বিডিএস মানে ডেন্টাল)-এর কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। পছন্দের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের কাজ রবিবার রাতেই মিটে গিয়েছিল। বুধবারেই এর ফল প্রকাশের কথা ছিল, অর্থাৎ ২০ অগাস্ট। জানা যাচ্ছে, এ রাজ্যে পাঁচ হাজারের বেশি আসন রয়েছে, যেখানে পছন্দের ভিত্তিতে নাম দাখিলের হিসেবে যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন ইতিমধ্যে ১১ হাজার পড়ুয়া। কিন্তু এর ঠিক পরেই স্থগিত করে দেওয়া হয় কাউন্সেলিং।
অনেক মেধাবী পড়ুয়া রাজ্যের বাইরে পা বাড়াবেন?
এর ফলে একেবারে অনিশ্চয়তা শুরু হয় ১১ হাজার পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে। মেডিকেল পড়ুয়াদের ভর্তি থেকে শুরু করে বার্ষিক যে পরীক্ষা—সেটা সমস্তটাই সারাদেশের এনএমসির একটি গাইডলাইন মেনে হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে পিছিয়ে যাচ্ছেন পড়ুয়ারা। এর জন্য দায়ী স্বাস্থ্য ভবন, কারণ গোটা দেশের সঙ্গে অন্যান্য রাজ্যগুলির তুলনায় পিছিয়ে পড়ছে বাংলার মেডিক্যাল পড়ুয়ারা। ভর্তি প্রক্রিয়াতে অচলাবস্থা। এই আবহে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অনেক মেধাবী পড়ুয়া রাজ্যের বাইরে পা বাড়াবেন, এবং রাজ্যের বাইরে কোনও জায়গায় তারা ভর্তি হবেন। অন্যদিকে জয়েন্টের ফল কবে প্রকাশ হবে? সে প্রশ্নেরও উত্তর মিলছে না। কারণ, ওবিসি জটিলতা এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে পুরোটাই এখন অন্ধকারে চলছে।
Leave a Reply