S Jaishankar: ভারতীয় পণ্যের ওপর আরোপিত উচ্চ মার্কিন শুল্কের তীব্র বিরোধিতা শি জিনপিংয়ের

S Jaishankar takes veiled dig amid us tariffs

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “বিশ্ব একটি সমষ্টি হিসেবে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য স্থিতিশীল ও পূর্বানুমানযোগ্য পরিবেশ খুঁজছে। তবে একই সময়ে এটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা যেন ন্যায়সঙ্গত ও স্বচ্ছ হয় এবং সবার উপকারে লাগে।” ভার্চুয়াল ‘ব্রিকস’ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়ে সোমবার কথাগুলি বলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (S Jaishankar)। ভারত ও অন্য কয়েকটি দেশের পণ্যের ওপর চড়া হারে শুল্ক (US Tariffs) আরোপের কারণে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঠিক সেই সময় জয়শঙ্করের এই কথাগুলি তাৎপর্যপূর্ণ বলেই ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের।

জয়শঙ্করের বক্তব্য (S Jaishankar)

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতিনিধি হিসেবে ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন জয়শঙ্কর। এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং অন্য রাষ্ট্রনেতারা। এই সম্মেলনেই জয়শঙ্কর বলেন, “ভারতের বিশ্বাস, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে খোলা, ন্যায়সঙ্গত, স্বচ্ছ এবং বৈষম্যহীন রেখে সংরক্ষণ করা উচিত হবে।” তিনি বলেন, “যখন একাধিক ব্যাঘাত ঘটে, তখন আমাদের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত এই ধরনের ঝুঁকির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। এর মানে হল আরও দৃঢ়, নির্ভরযোগ্য, অতিরিক্ত নিরাপত্তা-সহ এবং স্বল্প সরবরাহ শৃঙ্খলা তৈরি করা।”  প্রসঙ্গত, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা ভার্চুয়াল ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করেছেন মার্কিন শুল্ক এবং বাণিজ্য নীতি নিয়ে আলোচনা করার জন্য। কারণ এগুলিই বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছে।জয়শঙ্কর বলেন, “গঠনমূলক ও সহযোগিতামূলক পন্থার মাধ্যমে বিশ্বকে একটি মজবুত বাণিজ্য ক্ষেত্রে উন্নীত করতে হবে। ব্যাঘাত সৃষ্টি করা এবং লেনদেন জটিল করা কোনও সাহায্য করবে না। বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলিকে অ-বাণিজ্যিক বিষয়গুলির সঙ্গে যোগ করলেও সুবিধা হবে না।”

ভারতের বক্তব্য

জয়শঙ্কর ব্রিকসের সদস্য দেশগুলিকে নিজেদের বাণিজ্য নীতি পুনঃপর্যালোচনা করে সদস্য দেশগুলির মধ্যে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “ভারতের প্রসঙ্গে বলতে গেলে আমাদের সবচেয়ে বড় ঘাটতি রয়েছে কিছু ব্রিকস অংশীদারের সঙ্গে। আমরা দ্রুত সমাধানের জন্য চাপ দিচ্ছি। আমরা আশা করি, আজকের সভা থেকে এই উপলব্ধিটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হিসেবে সামনে আসবে।” ভারতের বিদেশমন্ত্রীর এই মন্তব্য (US Tariffs) ভারতের সঙ্গে চিনের বাড়তে থাকা বাণিজ্য ঘাটতির প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি (S Jaishankar) বলেন, “ভারত দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে এটি সংরক্ষণ ও বিকাশ করা উচিত। শুধু তাই নয়, আজকের বিশ্ব পরিস্থিতি প্রকৃত উদ্বেগের কারণ।” কোভিড অতিমারি, ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রবাহে অস্থিরতা এবং চরম জলবায়ু ঘটনা, এসবই গত কয়েক বছরে বিশ্বের প্রধান চ্যালেঞ্জের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন জয়শঙ্কর। বলেন, “এই চ্যালেঞ্জগুলির মুখে বহুপাক্ষিক ব্যবস্থা বিশ্বকে ব্যর্থ করতে দেখা যাচ্ছে। এতগুলি গুরুতর সমস্যা অবহেলিত থেকে যাওয়ায় বিশ্বব্যবস্থার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে।”

চিন-ভারত কাছাকাছি

এদিকে, বৈরিতা ভুলে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারতের আরও কাছাকাছি চলে এসেছে চিন। ভারতীয় পণ্যের ওপর আরোপিত উচ্চ মার্কিন শুল্কের তীব্র বিরোধিতা করেছে বেজিং। সোমবার চিনের রাষ্ট্রদূত শু ফেইহং বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসনের ভারতের ওপর আরোপিত ৫০ শতাংশ অন্যায় শুল্কের তীব্র বিরোধিতা করে চিন। তাই ভারত ও চিনের উচিত এই চ্যালেঞ্জ এক সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করা (US Tariffs)।” দুই পড়শি দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে চিনা রাষ্ট্রদূত বলেন, “ভারত ও চিন উভয়ই সন্ত্রাসবাদের শিকার। এই (S Jaishankar) চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বেজিং নয়াদিল্লি-সহ ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটির সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।” জাপানের বিরুদ্ধে চিনের বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার পর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করার জন্য শুল্ককে এক ধরনের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। দু’টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উদীয়মান অর্থনীতির দেশ ভারত ও চিনের এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় একে অন্যের সঙ্গে সহযোগিতা করা উচিত।”

নীতি পরিবর্তন ভারতের

ভারতীয় পণ্যের ওপর ট্রাম্প প্রশাসন উচ্চ শুল্কহার চড়ানোর পর নীতি পরিবর্তন করেছে ভারত। প্রতিবেশী দেশ চিনের সঙ্গে পুরানো তিক্ততা ভুলে এখন সম্পর্কের উন্নতি করতে উদ্যোগী হয়েছে নয়াদিল্লি। চিন অ্যাপ-সহ তার অনেক পণ্যের জন্য খোলা হচ্ছে ভারতের দুয়ার। এর পাশাপাশি রাশিয়া এবং অন্যান্য দেশের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির ওপরও দ্রুত কাজ করা হচ্ছে (US Tariffs)। এক কথায়, ভারতীয় পণ্যের ওপর চড়া মার্কিন শুল্কের কারণে যে ক্ষতি হচ্ছে, তা পূরণের জন্য এখন সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ করছে কেন্দ্রীয় সরকার (S Jaishankar)।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share